‘ভালো সময় যেন সব খারাপ স্মৃতিই মুছে দিয়েছে ‘ | বিবিধ নিউজ

‘ভালো সময় যেন সব খারাপ স্মৃতিই মুছে দিয়েছে ‘

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম।

#বিএনপি #অন্তর্বর্তীকালীন সরকার

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম।

রোববার (২৫ মে) সকাল পৌনে ১০টার দিকে দেওয়া এই পোস্টে প্রেসসচিব লেখেন, যেদিন নিরাপত্তা বাহিনী সালাহউদ্দিন আহমেদকে অপহরণ করে, গুম করে সীমান্ত পেরিয়ে পাঠিয়ে দেয় আরও দূরে, তার কয়েক সপ্তাহ আগেই তিনি বিএনপির মুখপাত্র হিসেবে গোপন একটি জায়গা থেকে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। সেই সময় আওয়ামী লীগ সরকার দলটির ওপর ব্যাপক দমন-পীড়ন চালাচ্ছিল। খালেদা জিয়াকে গুলশানের কার্যালয়ে গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছিল।

তিনি বলেন, দলের শীর্ষ নেতারা কেউ আত্মগোপনে চলে যান, কেউবা পুলিশের বিশেষ শাখা বা র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হন।

আমি ও আমার দক্ষিণ এশিয়ার প্রধান ক্রিস ওটন ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট গিবসনের সঙ্গে খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে গোপনে প্রবেশ করে এএফপির জন্য তার সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম। সিভিল পোশাকের নিরাপত্তা রক্ষীরা আমাদের ব্রিটিশ হাইকমিশনের সদস্য ভেবে ভেতরে ঢুকতে দেয়।

সেই সময় প্রতিদিন আমরা সালাহউদ্দিন আহমেদের বিবৃতি পেতাম। ক্রিস ও আমি তার বিবৃতিগুলো আমাদের প্রতিবেদনে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করতাম, কারণ সেই বিবৃতির লেখাগুলো ছিল প্রচন্ড শক্তিশালী, নিখুঁত ও মেদহীন সরাসরি ছিল।

আমি সব সময়ই মনে করতাম রুহুল কবির রিজভী দেশের অন্যতম আবেগী রাজনৈতিক কর্মী। কিন্তু তার লেখা বিবৃতিগুলো ছিল জটিল ও দুর্বোধ্য। সেখান থেকে শক্তিশালী কোনো উদ্ধৃতি বের করা কঠিন হতো।

প্রেস সচিব বলেন, কিন্তু যখন রিজভী গ্রেফতার হলেন এবং সালাহউদ্দিন আহমেদ গোপন অবস্থান থেকে মুখপাত্রের দায়িত্ব নিলেন, তিনি বিএনপির ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ও অসাধারণ বিবৃতি পাঠাতে শুরু করলেন। সেগুলো ছিল বোমার মতো, সরাসরি শেখ হাসিনার শাসনকে চ্যালেঞ্জ করছিল।

ভাষা ছিল কঠোর, সরাসরি এবং সবসময় লক্ষ্যভেদী। আমরা নিরাপদ সূত্র থেকে জানতে পারি, শেখ হাসিনা এতটাই ক্ষিপ্ত হয়ে পড়েন যে, তিনি সালাহউদ্দিন আহমেদকে ধরতে অভিযান চালানোর নির্দেশ দেন।

তিনি বলেন, সালাহউদ্দিন আহমেদের পরিণতি কী হতে পারে তা অনুমেয় ছিল। ঠিকই একদিন ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের শুরুর দিকে সালাহউদ্দিন আহমেদ অপহরণ ও তারপর গুমের শিকার হন।

তার স্ত্রী হাসিনা আহমেদ তার মুক্তির দাবিতে একটি সাহসী আন্দোলন শুরু করেন। তার লড়াই ছিল অবিরাম ও দেশের অন্যতম সাহসী প্রচেষ্টা — মায়ের ডাক-এর হাজেরা খাতুন ও তার মেয়েদের সঙ্গে — শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে।

সম্ভবত হাসিনা আহমেদের তৈরি করা সেই আন্দোলন ও প্রতিবাদ আংশিকভাবে হলেও নিরাপত্তা বাহিনীকে সালাহউদ্দিন আহমেদকে সীমান্ত পেরিয়ে শিলং পাঠাতে বাধ্য করেছিল।

তিনি আরও বলেন, আজ বিএনপির অনেক তরুণ, যারা কিনা দিন দিন আরও অসহিষ্ণু হয়ে উঠছে, তাদের মতো কিছু কর্মীও এই সাহসী অধ্যায়গুলো ভুলে গেছে।

আর গতকাল আমরা তার বিরুদ্ধে কিছু ঘৃণ্য অপপ্রচার দেখলাম। কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে, এই সংগ্রামগুলোই শেখ হাসিনার সবচেয়ে নিষ্ঠুর শাসনামলে তাকে চ্যালেঞ্জ করেছিল।

দুর্ভাগ্যজনকভাবে, অধিকাংশ মানুষ আমাদের রাজনৈতিক সংগ্রামের সেই গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় ভুলে গেছে। ভালো সময় যেন সব খারাপ স্মৃতিই মুছে দিয়েছে।

#বিএনপি #অন্তর্বর্তীকালীন সরকার