ছবি : দৈনিক শিক্ষাডটকম
ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ইউআইইউ) কর্তৃপক্ষের অন্যায় বহিষ্কারের শিকার শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদল এবার বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। শিক্ষার্থীরা এ সময় তাদের দাবির কথা তুলে ধরেন। বৈঠকে ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ জানিয়েছেন, বিনা শর্তে শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার প্রত্যাহার এবং সিএসই ডিপার্টমেন্ট হেড ও ভিসির পদত্যাগের ব্যাপার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছেন।
রোববার বৈঠক শেষে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা জানায়, অন্যায়ভাবে বহিষ্কার নিয়ে ইউজিসিতে ইউআইইউ শিক্ষার্থী ও প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস অ্যালায়েন্স অব বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৈটকে ইউজিসি থেকে জানানো হয়েছে, তারা বিনা শর্তে শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার প্রত্যাহার এবং ইউআইইউর সিএসই ডিপার্টমেন্ট হেড ও ভিসির পদত্যাগের ব্যাপার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে। এর বেশি তাদের কিছু করার নেই।
ইউজিসি আশা করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় যথাযথ ব্যাবস্থা নেবে এবং ইউআইইউ কর্তৃপক্ষ তা বাস্তবায়ন করে শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্লাস পরীক্ষায় নির্বিঘ্নে অংশগ্রহণ এর সুযোগ দেবে। নয়তো, শিক্ষার্থীরা ফের রাজপথে তাদের নায্য দাবি আদায় করে ক্যাম্পাসে ফিরবে!!
এর আগে ইউআইইউ কর্তৃপক্ষের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার ছাত্রদের অন্যায়ভাবে বহিষ্কারের প্রতিবাদে এবার আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দেন। শিগগিরই রাজধানীর বাড্ডা-নতুনবাজার সড়ক অবরোধসহ আরো কর্মসূচি পালনের পরিকল্পনা ছিলো তাদের।
সে সময় শিক্ষার্থীরা বলেছিলেন, ইউনিভার্সিটি রিফর্ম বাস্তবায়ন করতে হবে। ট্রাস্ট্রি বোর্ড ভেঙে দিয়ে নতুন করে গঠন করতে হবে। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার করতে হবে।
শিক্ষার্থীরা জানান, বিষয়টি নিয়ে অন্য প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। তারাও ইউআইইউ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দিতে পারেন। সবাইকে নিয়ে বাড্ডা-নতুনবাজার সড়ক অবরোধ করার পরিকল্পনা চলছে।
এর আগে ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষের অনিয়মের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছাত্রদের অন্যায়ভাবে বহিষ্কারের প্রতিবাদ জানিয়েছিলো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনার বিচার ও বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়ার দাবি জানান তারা। এ দাবি না মানলে এবং ঈদের পর ২ কর্ম দিবসের মধ্যে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে ইউআইইউসহ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলো তারা।
এ দাবিতে ইউজিসি চেয়ারম্যান বরাবর এক স্মারকলিপিও দেন শিক্ষার্থীরা। স্মারকলিপিতে শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা দেশের বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই চিঠির মাধ্যমে ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হওয়া অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান জানাতে চাই। ইউআইইউর শিক্ষার্থীরা গত প্রায় এক বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ প্রতিষ্ঠার জন্য শান্তিপূর্ণ ও যৌক্তিক আন্দোলন করে আসছেন। অথচ এসব ন্যায্য দাবির জবাবে ইউআইইউ প্রশাসন শিক্ষার্থীদের হয়রানি করে, হুমকি দেয় এবং সর্বশেষ ২ জুন মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে প্রায় ২০ জন শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করে। আমরা, দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা, এই অন্যায় বহিষ্কার প্রক্রিয়াকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি ও নিন্দা জানাচ্ছি।
ইউজিসির দায়িত্ব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা। অথচ, শিক্ষার্থীরা একাধিকবার ইউজিসিতে লিখিত ও মৌখিকভাবে অভিযোগ জানালেও, আজ পর্যন্ত কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। এই বহিষ্কারের বিষয়ে কঠোরভাবে ব্যবস্থা না নেয়া শুধু ইউআইইউ নয়, বরং দেশের সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্যই গভীর উদ্বেগের বিষয়।
এ সময় শিক্ষার্থীরা দাবি জানিয়ে বলেছিলেন, আমাদের সুস্পষ্ট অবস্থান হলো, বহিষ্কার আদেশ অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। ইউআইইউ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে তদন্ত ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। ঈদের ছুটির পরবর্তী দুই কর্মদিবসের মধ্যেই কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে, দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ইউজিসি কার্যালয়ে ঘেরাও, অনশন কর্মসূচিসহ কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবে।
শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিয়োগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।