বুয়েটের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে কমবেশি মানুষ জানেন, কিন্তু গবেষণার বিষয়গুলো সাধারণ মানুষ খুব একটা জানেন না। তাই বলে কী বুয়েটে কোন গবেষণা হয় না? এমনটি নয়।
দেশের শিক্ষা বিষয়ক একমাত্র পুর্ণাঙ্গ ডিজিটাল পত্রিকা দৈনিকশিক্ষাডটকম ও শিক্ষা বিষয়ক প্রিন্ট জাতীয় পত্রিকা দৈনিক আমাদের বার্তার সঙ্গে একান্ত সাক্ষাতকারে বুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক আবু রোবহান মোহাম্মদ বদরুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়-বুয়েটে অনেক গবেষণা হয়।
তবে ছোট ছোট গবেষণাগুলো অন্যরা যেভাবে প্রচার প্রচারণা করে বুয়েট তা করেনা বলেই অনেকে জানতে পারেন না। তাছাড়া কিছু গবেষক তো আছেনই প্রচার বিমুখ।
কিন্তু কথা হলো বুয়েটে গবেষণা শুরু থেকেই আছে। গবেষণার মান ও প্রকৃতি পরবির্তন হয়েছে। সমাজের এবং যুগের চাহিদার সঙ্গে সঙ্গে এর ধরনেরও পরিবর্তন হয়। অনেকে ছোট ছোট গবেষণার অনেক বেশি প্রচার করেন। তারা প্রচারেই প্রসার মনে করেন। আমরা তা মনে করি না। খুব বেশি প্রচারণায় যাই না আমরা। তাই আমাদের কাজগুলো তেমন জানা যায় না। তবে গবেষণা আছে। চলছে।
উপাচার্য বলেন, এখন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে র্যাংকিং এর মতো একটি বিষয় আসাতে গবেষণার প্রসঙ্গ নতুন করে আলোচনায় উঠে এসেছে। তাই হয়তো এসব নিয়ে এখন অনেক কথা হচ্ছে। বহু বছর আগে, এনবিআর গভর্নমেন্ট ট্যাক্সের জন্য সাবানের ওপর, টুথপেস্টের ওপর যে স্টিকার ব্যবহার শুরু করেছিল ওটা বুয়েটই করেছে বলে জানান তিনি।
বুয়েটের করা অটোমেটেড সিস্টেম দিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড হাজার হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আহরনের কাজ করলেও কাজটা যে বুয়েটের করে দেওয়া তা হয়তো অনেকেই জানেনই না।
তিনি বলেন, একইভাবে ইলেকট্রিক রিক্সার ব্যাপারটা সম্প্রতি প্রচারে এলেও এটার কাজ অনেক দিন থেকেই বুয়েটে চলছে। এর আগেও একবার বুয়েট করেছিলো। কিন্তু সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পায়নি বলে মার্কেটে আসতে পারেনি। ওটা ইলেকট্রিক ছিলো না। ওটা ছিলো অটোমেডেট। গিয়ারসহ রিক্সা।
অনেকে এটা নিয়ে হাস্যরস করে বা করতে পারে বুয়েট কেন রিক্সা নিয়ে গবেষণা করবে, বুয়েট করবে অনেক বড় বড় গবেষণা। তারা রিক্সা বানায়! তবে আমি মনে করি, সমাজের সবচেয়ে যেটার বেশি ডিমান্ড, সেটার ওপর গবেষণা করা দরকার। যেটা আমার জীবন ব্যবস্থাতে সাহায্য করবে, সেটাই তো আমি করবো। করা উচিৎ।
আপনি যদি মনে করেন দেখেন, কোভিডের সময় কম খরচে অক্সিজেন দেওয়ার জন্য একটা যন্ত্র তৈরি করেছিল বুয়েট। সেটা কিন্তু অনেক বানানো হয়েছিলো। তখন অনেক মানুষের জীবনরক্ষায় কাজে লেগেছিলো। আপত দৃষ্টিতে কাজটাকে একটা ছোট প্রজেক্ট মনে হলেও তার থেকে অনেক বড় একটা অর্জন ছিলো।
তিনি বলেন, গবেষণার কাজ থেমে নেই। চলছে। আরো অনেক ধরনের গবেষণা আছে। বুয়েটের নিজস্ব একটা রিসার্চ ইনোভেশন সেন্টারও আছে। সেখানে বাইরের যারা, তারা অ্যাপ্লাই করতে পারেন। আইডিয়া দিতে পারেন। তাদের বুয়েট থেকে কিছু ফান্ডও দেয়া হয়। তবে শুধু বুয়েটের ফান্ড দিয়ে তো আর গবেষণা চলবে না। আমি মনে করি যদি ফান্ডিং ভালো পাওয়া যায়, তাহলে রিসার্চ আরো বাড়বে।