কাম্য শিক্ষার্থীবিহীন ৪৪৩ কলেজের কী হবে? | কলেজ নিউজ

কাম্য শিক্ষার্থীবিহীন ৪৪৩ কলেজের কী হবে?

বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির কলেজ শাখায় উচ্চ মাধ্যমিক ১ম বর্ষে শিক্ষার্থী আছেন সাকুল্যে ১৮ জন। আর এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন মাত্র ৬ জন। আর শিক্ষক আছেন মোট ১৭ জন।

#শিক্ষার্থী #কলেজ #ক্লাস #শিক্ষক

কাম্য শিক্ষার্থীবিহীন ৪৪৩ কলেজের কী হবে?

বৃহস্পতিবার। ৩ জুলাই। দুপুর ১২টা। বরিশাল নগরীর রায় রোড এলাকা। একটি ভবনের নীচতলা ভাড়া নিয়ে চলছে বরিশাল কমার্স কলেজ। এই সময়ে পুরোদমে ক্লাস চলার কথা। কিন্তু এই কলেজটির গেটই বন্ধ। গেটের সামনে পার্ক করে রাখা কয়েকটি মোটরসাইকেল বুঝিয়ে দিচ্ছে, এখানে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আসা-যাওয়া খুবই কম।

 পরিচয় দিয়ে অনেক ডাকহাঁকের পর একজন নারী এসে দরোজা খুললেন। তার দেয়া পরিচয় অনুযায়ী, তিনি ব্যবসায় শিক্ষা শাখার শিক্ষক আফসানা ফেরদৌসি। দ্বিতীয় কোনো শিক্ষক, এমনকি কোনো শিক্ষার্থীকেও খুঁজে পাওয়া গেলো না।

ফাঁকা কক্ষগুলোর কোনো কোনোটিতে বেঞ্চের ওপর বেঞ্চ তুলে রাখা। নিয়মিত পাঠদান যে বন্ধ তা বলে না দিলেও চলে।

এই মুহূর্তের সবেধন নীলমনি শিক্ষক আফসানা ফেরদৌসি জানালেন, উচ্চ মাধ্যমিকের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ইয়ার ফাইনাল পরীক্ষার রুটিন দেয়া হয়েছে। তারা পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আর শিক্ষকদের মধ্যে অনেকে গিয়েছেন এইচএসসি পরীক্ষার ডিউটি দিতে। তাই কলেজে তিনি একাই আছেন। 

তার দেয়া তথ্যেই জানা যায়, ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত কলেজটির কার্যক্রম শুরু হয়  ২০২৩- ২৪ শিক্ষাবর্ষে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির কলেজ শাখায় উচ্চ মাধ্যমিক ১ম বর্ষে শিক্ষার্থী আছেন সাকুল্যে ১৮ জন। আর এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন মাত্র ৬ জন। আর শিক্ষক আছেন মোট ১৭ জন।

তবে বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড সূত্র জানায়, এই কলেজটিতে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ১৫ জন। আর ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের মাত্র ৭ জন। শিক্ষক আছেন ১৮ জন। তার মানে, শিক্ষার্থীর চেয়ে শিক্ষক বেশি। আফসানা ফেরদৌসির তথ্যের সঙ্গেও বোর্ডের তথ্যের কিছুটা গরমিল।

এ ব্যাপারে বরিশাল শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. ইউনুস আলী সিদ্দিকীর বক্তব্য, এমপিওভুক্ত কলেজ নয় বরিশাল কমার্স কলেজ। তাই সেখানে শিক্ষার্থীরা তেমন একটা ভর্তি হন না।

দৈনিক শিক্ষাডটকমের অনুসন্ধানে জানা গেছে, সারাদেশে এমন অন্তত ২৪৩টি উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ ও সমমানের প্রতিষ্ঠানে কাম্যসংখ্যক শিক্ষার্থী নেই। এসব কলেজে শুভঙ্করের ফাঁকি দিয়ে চলছে শিক্ষা ব্যবসা, কোচিং, নোট-গাইড ও নিয়োগ বাণিজ্য এবং অবৈধ এমপিওভুক্তি।

যদিও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন, পাঠদান ও একাডেমিক স্বীকৃতির নীতিমালা ২০২২(সংশোধিত ১৩ জুলাই ২০২৩) অনুযায়ী, সিটি করপোরেশন ও প্রথম শ্রেণির পৌরসভা এবং শিল্প এলাকার উচ্চ মাধ্যমিক কলেজে (পুরুষ) যদি তিন বিভাগ থাকে তাহলে ন্যূনতম শিক্ষার্থী হতে হবে ২৫০ জন। আর মফস্বল এলাকায় এই সংখ্যা ২২০ জন। সিটি করপোরেশন ও প্রথম শ্রেণির পৌরসভা এবং শিল্প এলাকার উচ্চ মাধ্যমিক কলেজের (মহিলা) জন্য ২০০ জন। মফস্বলের জন্য ১৭০ জন।

এমন পরিস্থিতিতে এসব কলেজ কি করে কাম্য শিক্ষার্থী ছাড়াই পরিচালিত হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে শিক্ষা পরিমণ্ডলে। দৈনিক শিক্ষাডটকম আরো সরেজমিন তদন্ত করে কলেজগুলোর বর্তমান পরিস্থিতি পাঠকদের সামনে তুলে ধরবে।

শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিয়োগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।

#শিক্ষার্থী #কলেজ #ক্লাস #শিক্ষক