আম কেন ৫৪ কেজিতে এক মণ? | বিবিধ নিউজ

আম কেন ৫৪ কেজিতে এক মণ?

চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এবার আমের রাজধানী চাঁপাইনবাবগঞ্জে তুলনামূলক ফলন ভালো হয়েছে।

#শিক্ষার্থী #শিক্ষক #বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূল থাকায় আমের রাজধানী চাঁপাইনবাবগঞ্জে তুলনামূলক ফলন ভালো হয়েছে। তাই দামের আশায় এবার বুক বেঁধেছিলেন চাষিরা। তবে আড়তদারদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন তারা।

৪০ কেজিতে এক মণ, বিষয়টি আমাদের সবার জানা। তবে হিসাব পাল্টে দিয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম বাজার। এখানে ৫২ থেকে ৫৪ কেজিতে এক মণ ধরে আম কিনছেন আড়তদাররা। এমনকি টাকা দেওয়ার সময়ও ৫০-২০০ টাকা পর্যন্ত কম দিচ্ছেন চাষিদের। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন আম চাষিরা।

কানসাট, রহনপুর ও ভোলাহাট আমের বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

আমচাষিদের দাবি, বাজারে এক মণ আম ৪২ কেজিতেই বেচাকেনা করতে হবে। এ নিয়ে কয়েক বছর ধরে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে একাধিকবার অভিযোগ করা হয়েছিল, কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

তারা বলছেন, আমরা এ বিষয়ে প্রশাসনকে বারবার বলেও কোনো সমাধান পাইনি। শুধু আশ্বাসেই আটকে আছে। এর সুরাহা হওয়া প্রয়োজন।

কারণ, এ বিষয়টি এখনই সমাধান না হলে, দিন দিন এ অত্যাচার বাড়তে থাকবে। অতিরিক্ত আম নেওয়াটা কৃষকদের ওপর জুলুম হয়ে দাঁড়িয়েছে। কানসাটের আমচাষি আব্দুল মবিন বলেন, গত কয়েক বছর ধরে আমের মণের ওজনের পরিমাণ বাড়ছে। ৪৪ কেজি থেকে শুরু হয়ে এখন ৫৪ কেজিতে দাঁড়িয়েছে। এক প্রকার জোর করেই ৫৪ কেজিতে মণ হিসেবে আড়তদাররা আম কিনছেন। বেশি ওজনে আম বিক্রি করতে না চাইলে পুরো সিন্ডিকেট কেনা বন্ধ করে দেয়। আর আম যেহেতু পচনশীল, তাই ভয়ে বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের।

কানসাট বাজারের আরেক আম বিক্রেতা শহিদুল হক বলেন, চার বছর আগে আমরা ৪২ থেকে ৪৩ কেজিতে মণ ধরে বিক্রি করেছি। কিন্তু ২০২২ সালে ৪৮ কেজিতে মণ ধরে আম কেনেন আড়তদাররা। সেই থেকে বছর বছর ওজন বাড়ছে। চলতি বছর ৫২ থেকে ৫৪ কেজিতে মণ ধরে আম কিনছেন। আমরা এখন বিপাকে পড়েছি। কোথায় যাব, আর কার কাছে বলব এ অনিয়মের কথা?

কানসাট আম আড়তদার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির নেতারা জানান, শুধু কানসাট নয়, রাজশাহী, নওগাঁ, গোমস্তাপুর, ভোলাহাট সব খানেই বিষয়টি নিয়ে ঝামেলা হচ্ছে। আমরা চাই, রাজশাহী বিভাগের সব আম বাজারে মণে এক রকম ওজন নির্ধারণ হোক। এটি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথাবার্তা চলছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে কয়েকদিন আগেও বৈঠকে বসেছিলাম। চাঁপাইনবাবগঞ্জ ম্যাংগো ফাউন্ডেশনের সদস্য সচিব আহসান হাবিব বলেন, আমরা কষ্ট করে আম উৎপাদন করি। কিন্তু আড়তদাররা মণে ১২ থেকে ১৪ কেজি আম বেশি নিচ্ছেন।

এ অনিয়ম কয়েক বছর আগে থেকেই চলছে। আমরা এ সিন্ডিকেটের হাত থেকে মুক্তি চাই। তিনি আরও বলেন, মণপ্রতি ১২ থেকে ১৪ কেজি বেশি ধরে যে অতিরিক্ত আম নেওয়া হয়, তার বাজারমূল্য অন্তত ৫০০ কোটি টাকা।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসক আব্দুস সামাদ বলেন, কানসাট আম বাজারে ওজন নিয়ে ঝামেলার বিষয়টি শুনেছি। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে।

#শিক্ষার্থী #শিক্ষক #বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়