প্রতিবন্ধী ভাইয়ের স্বপ্ন জয়ের সারথি ছোটবোন | বিশ্ববিদ্যালয় নিউজ

প্রতিবন্ধী ভাইয়ের স্বপ্ন জয়ের সারথি ছোটবোন

সব প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে এবার বিজ্ঞান বিভাগ থেকে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। ছোট বোনের সহযোগিতায় শ্রুতি লেখার মাধ্যমে দিয়েছেন পরীক্ষা।

কুষ্টিয়ার কুমারখালি উপজেলার আজগড় আলীর ছেলে শারিরীক প্রতিবন্ধী আদনান উজ্জামান। ছোটবেলা থেকেই অন্য শিক্ষার্থীদের মতো স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা ও পড়াশোনা করতে পারেননি তিনি। সব কাজে নিতে হয় অন্যের সহযোগিতা। তবে তার সব প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে এবার বিজ্ঞান বিভাগ থেকে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। ছোট বোনের সহযোগিতায় শ্রুতি লেখার মাধ্যমে দিয়েছেন পরীক্ষা। তার স্বপ্ন দেশের যেকোন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়ন বিভাগে উচ্চ শিক্ষা সম্পন্ন করার।

ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনার প্রতি মনযোগী ছিলেন আদনান। তিনি কুষ্টিয়া হাউজিং এর সবুজ কানন প্রিপারেটরি স্কুল থেকে প্রাথমিক পড়াশোনা সম্পন্ন করেন। পরে স্বপ্নজয়ে লক্ষ্যে কুষ্টিয়ার আড়ুয়াপাড়া দিনমনি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। সেখান থেকে বিজ্ঞান বিভাগে ৪ দশমিক ৫৬ জিপিএ মাধ্যমিক এবং ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ৪ দশমিক ০৮ জিপিএ নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। প্রথমবারে বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিয়ে আশানুরূপ সাফল্য লাভ করতে পারেনি তিনি। এতেও থেমে থাকেনি আদনান। ফলে ২য় বার ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন অদম্য আদনান।

এবারের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় আদনান অংশ নিয়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন অ্যাকাডেমিক ভবনের ৪২০ নম্বর কক্ষে। তার রোল নম্বর ১০৬৯১৪। পরীক্ষায় সহায়তার জন্য শ্রুতিলেখকের দায়িত্ব পালন করেছে তার ছোট বোন আতিকা জিনাত প্রাপ্তি। যিনি বর্তমানে ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী।

জানা যায়, আদনান ছোট বেলা থেকে অন্য দশজন স্বাভাবিক শিশুর মতই ছিল। কিন্তু দেড় বছর বয়সে তার শারিরীক সমস্যা দেখা দেয়। এর পর তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু তাতেও সমস্যার কোনো সমাধান মেলেনি। বয়স বাড়ার সঙ্গ- সঙ্গে হাঁটা-চলায় সমস্যা হতে থাকে তার। তবে এসব সমস্যায় তার পড়াশোনা থেমে থাকেনি। চিকিৎসার পাশাপাশি যথাসাধ্য পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

আদনানের বাবা আজগর দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, আদনান ছোট বেলা থেকেই পড়াশোনায় খুবই আগ্রহী। তাকে কখনো পড়ার কথা বলতে হয়নি। আজকে সকালে পরীক্ষা দিতে আসার সময়ও তাকে পড়ার টেবিল থেকে ডেকে আনতে হয়েছে। এরকমক বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুরা একটু অনুপ্রেরণা পেলে সামনে আরো ভালো কিছু করবে। আমি এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিয়োগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।