আড়াই বছর পর শিক্ষকদের বদলির অর্ধলক্ষ আবেদন, অস্থিরতা-অসন্তোষ - দৈনিকশিক্ষা

আড়াই বছর পর শিক্ষকদের বদলির অর্ধলক্ষ আবেদন, অস্থিরতা-অসন্তোষ

নিজস্ব প্রতিবেদক |

আড়াই বছর বন্ধ থাকার পর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বদলির অনলাইন আবেদন গ্রহণ শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার প্রথম প্রহর থেকে শিক্ষকরা নির্ধারিত ওয়েবসাইটে (http://myschool.eis.dpe.gov.bd/login) লগইন করে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকরা বদলির আবেদন করতে পারছেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ৫০ হাজারের বেশি শিক্ষক বদলির আবেদন করেছেন বলে দৈনিক আমাদের বার্তা ও দৈনিক শিক্ষাডটকমকে নিশ্চিত করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. মুহিবুর রহমান। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শিক্ষকরা বদলির আবেদন করতে পারবেন। 

দীর্ঘদিন পর বদলি শুরু হলেও তা নিয়ে শিক্ষকদের মনে অসন্তোষ ও অস্থিরতার সৃষ্টি হয়েছে। অনেক শিক্ষক অভিযোগ করছেন তারা বদলি সার্ভারে প্রবেশ করতে পারছেন না। নীতিমালা চার জন বা তার কম শিক্ষক থাকা স্কুলগুলো শিক্ষকদের বদলির সুযোগ দেয়া হয়নি। যে স্কুলেগুলোতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত ১:৪০ এর বেশি, সেসব স্কুলের শিক্ষকরাও বদলির সুযোগ পাবেন না। বৃহস্পতিবার সকালে থেকেই শিক্ষকরা দৈনিক শিক্ষাডটকম ও দৈনিক আমাদের বার্তাকে তাদের অসন্তোষের কথা জানাচ্ছেন।

এদিকে, আগামী রোববার অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বসে শিক্ষকদের বদলির সব জটিলতা সমাধানের ব্যবস্থা করা হবে দৈনিক আমাদের বার্তা ও দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানিয়েছেন মহাপরিচালক মো. মুহিবুর রহমান।

শিক্ষকরা বলছেন, বদলি শুরু হলেও নির্দেশিকার কিছু বিধানের মারপ্যাচে অনেক শিক্ষক বদলি হতে পারবেন না। শিক্ষকরা বলছেন, চারজন বা তার কম শিক্ষক থাকা স্কুলগুলোর শিক্ষকদের বদলি সুযোগ নীতিমালায় নেই। আবার যে স্কুলগুলোর শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত ১:৪০ এর বেশি, সেসব স্কুল থেকে শিক্ষকরা বদলির সুযোগ পাচ্ছেন না। আবার আইপিইএমআইএস সার্ভারে স্কুলের তথ্য হালনাগাদ না থাকলে শিক্ষকরা বদলির আবেদন করতে পারছেন না। শিক্ষকরা আরও জানান, আন্তঃউপজেলা বদলির আবেদন নেয়া হলেও আন্তঃজেলা বদলির আবেদন তারা করতে পারছেন না। 

তারা আরও জানিয়েছেন, বদলির সার্ভার লোড নিতে পারছে না। অনেক শিক্ষক তাই সার্ভারে ঢুকতে পারছেন না। শিক্ষকরা আরও জানান, প্রতিস্থাপিত বদলির সুযোগ অনলাইন বদলিতে নেই। আবার বদলির নির্দেশিকায় চাকরির মেয়াদ ২ বছর পূর্ণ হলে বদলির সুযোগ রাখা হলেও ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে যোগদান করা শিক্ষকরা বদলির আবেদন করতে পারছেন না। 

এদিকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে প্রায় ৪৫ হাজার নতুন শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে। শিক্ষকরা বলছেন, এখন পুরাতন শিক্ষকদের বদলির আবেদন নেয়া হলেও তাদের বদলি করা হবে জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসে। কিন্তু এর আগেই নতুন শিক্ষকরা নিয়োগ পাবেন। এতে কাঙ্ক্ষিত পদে বদলির সুযোগ পাবেন না পুরাতন শিক্ষকরা।  

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী শিক্ষকদের সংগঠন বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমাজের সভাপতি শাহিনুর আল-আমীন দৈনিক আমাদের বার্তা ও দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, দীর্ঘদিন পর বদলি শুরু হলেও শিক্ষকদের মনে হতাশা। নীতিমালার মারপ্যাচে অনেক শিক্ষক দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষায় থাকার পরও বদলির আবেদন করতে পারছেন না। এতে শিক্ষকদের মনে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষকরা প্রতিস্থাপিত বদলির আবেদন করতে পারছেন না। শিক্ষকদের প্রতিস্থাপিত বদলির আবেদনের সুযোগ দিতে হবে। নির্দেশিকায় দুই বছর পর বদলির সুযোগ দেয়া হলেও শিক্ষকরা আবেদন করতে পারছেন না। 

তিনি আরও জানান, সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি হবে শিক্ষকরা এখন আবেদন করলেও পরে তাদের বদলি করা হবে জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসে। কিন্তু নভেম্বরে নতুন শিক্ষকদের নিয়োগ। শিক্ষকরা এখন বদলির আবেদন করলেও তার আগেই নতুন শিক্ষক নিয়োগ হবে। এজন্য পুরাতন শিক্ষকরা তাদের কাঙ্ক্ষিত পদে বদলির সুযোগ হারাবেন। বদলি চালু হলেও নতুন প্রক্রিয়া নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে অস্থিরতা বিরাজ করছে। এসব জটিলতার সমাধান আমরা কামনা করছি। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. মুহিবুর রহমান দৈনিক শিক্ষাডটকম ও দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, বদলির সার্ভারের কিছু জটিলতার কথা আমরা জানতে পেরেছি। সার্ভারে ঢোকা যাচ্ছে না। আমি নিজেই বেশ কিছুক্ষণ চেষ্টা করে সার্ভারে ঢুকতে পারিনি। আড়াই বছর পর বদলি শুরু হওয়ায় অনেক শিক্ষক আবেদন করছেন, তাই সার্ভার লোড নিতে পারছেন না। এছাড়া শিক্ষকরা বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৫০ হাজার আবেদন করেছেন। এত শিক্ষক বদলির আবেদনের পরও কিছু জটিলতার কথা আমাদের জানাচ্ছেন। আমরা সেসব জটিলতার তথ্য সংগ্রহ করছি। শিক্ষকদের বদলির সার্ভারের সব জটিলতা নিয়ে আগামী রোববার আমরা কারিগরি টিমের সঙ্গে বসবো। শিক্ষকদের সব জটিলতা সমাধানের চেষ্টা করা হবে। 

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক শিক্ষা ডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।

শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0067110061645508