ইবিতে ছাত্রী নির্যাতন : এখনো উদ্ধার হয়নি ভিডিও ধারণের মোবাইল - দৈনিকশিক্ষা

ইবিতে ছাত্রী নির্যাতন : এখনো উদ্ধার হয়নি ভিডিও ধারণের মোবাইল

ইবি প্রতিনিধি |

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে প্রথম বর্ষের ছাত্রী ফুলপরী খাতুনকে র‍্যাগিংয়ের নামে নির্যাতনের ভিডিও ধারণকারী ছাত্রলীগ কর্মী হালিমা খাতুন উর্মীর মোবাইল ফোনটি এখনো উদ্ধার করা যায়নি।

অভিযুক্ত উর্মীর দাবি, ‘মোবাইলটি হারিয়ে গেছে।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেছেন, ‘মোবাইল উদ্ধারের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।’ আর পুলিশ বলছে, ‘হারানো জিনিস যে প্রক্রিয়ায় উদ্ধার করা যায় সেভাবে চেষ্টা করা হচ্ছে।’ অন্যদিকে এখন পর্যন্ত ওই হলের সিসিটিভির ফুটেজও উদ্ধার করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

গত ১২ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়টির ওই হলে রাতভর নির্যাতন করে ভিডিও ধারণের অভিযোগ তোলেন ইবির ফাইন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ফুলপরী খাতুন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন।

পরে আইনজীবী গাজী মো. মুহসীনের রিটের প্রেক্ষিতে দেশের উচ্চ আদালতের বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন। এরপর মোট ৪টি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে নির্যাতনের প্রমাণ মেলে। পরে উচ্চ আদালত নির্যাতনকারী ৫ ছাত্রীকে সাময়িক বহিষ্কার, নির্যাতিত ফুলপরীকে বিশ্ববিদ্যালয়ে তার পছন্দের হলে তুলে নিরাপত্তা দেয়া ও যে মোবাইল দিয়ে নির্যাতনের ভিডিও ধারণ করা হয়েছিল তা খুঁজে বের করে ফুটেজ মুছে ফেলার আদেশ দেন।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক শেখ আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির বৈঠক হয়। সেখানে নির্যাতনকারী ৫ শিক্ষার্থী ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, কর্মী তাবাসসুম ইসলাম, হালিমা খাতুন উর্মি, ইসরাত জাহান মিম ও মোয়াবিয়া জাহানকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।

প্রক্টর ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, ‘আমরা গত ৬ মার্চ উচ্চ আদালতের পূর্ণাঙ্গ নির্দেশনার কপি হাতে পেয়েছি। এরপর তাতে যে নির্দেশনাগুলো দেয়া আছে সবগুলো পূর্ণাঙ্গরূপে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। গত ৭ মার্চ মোবাইল ফোনটি উদ্ধারের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ইবি থানার ওসি বরাবর লিখিত চিঠি দিয়েছেন। পরে থানা থেকে ওই শিক্ষার্থীর বেশকিছু তথ্য চাওয়া হয়।

কিন্তু ৮ তারিখ শব-ই বরাতের ছুটি এবং বৃহস্পতি ও শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয় সাপ্তাহিক বন্ধ থাকায় ওই শিক্ষার্থীর জাতীয় পরিচয়পত্র এবং মোবাইল নম্বরসহ বেশকিছু তথ্য দেয়া সম্ভব হয়নি। শনিবার একাডেমিক শাখা থেকে ওই তথ্যগুলো সংগ্রহ করে তাদেরকে দেয়া হবে।’

এ নিয়ে রিটকারী আইনজীবী গাজী মো. মুহসীন বলেন, ‘তদন্ত প্রতিবেদনে নির্যাতনের প্রমাণ মিলেছে। একইসঙ্গে ভুক্তভোগীকে নির্যাতনের ভিডিও ধারণ করা হয়েছে এটারও প্রমাণ মেলে। ভিডিও ফুটেজটি চারুকলা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী হালিমা আক্তার উর্মীর ফোনে করা হয় বলে জানা যায়। এখন পর্যন্ত সেই ভিডিও ফুটেজ এবং মোবাইল ফোন উদ্ধার হয়নি। সেজন্য হাইকোর্ট থেকে উর্মীর মোবাইলের ফুটেজ উদ্ধারে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’

এদিকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আননূর যায়েদ বিপ্লব বলেন, ‘‘চিঠি পেয়েই আমরা মোবাইল ফোনটি উদ্ধারের কার্যক্রম চলমান রেখেছি। যে ছাত্রী মোবাইলে ভিডিও ধারণ করেছিলেন তিনি বলেছেন, ‘মোবাইলটি হারিয়ে গেছে।’

লুকিয়ে রেখেও তো হারিয়ে গেছে বলতে পারে, এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, ‘আমরা আমাদের মতো করে হারানো বস্তু উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছি।’

৬ মার্চ হাইকোর্ট ফুলপরীর ওপর নির্যাতনের ঘটনার পূর্ণাঙ্গ নির্দেশনাপত্র প্রকাশ করে। নির্দেশনাপত্রে হল প্রশাসনের সিসিটিভি ফুটেজ সরবরাহে ব্যর্থতায় আলাদা করে তদন্ত করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে। অভিযুক্ত হালিমার মোবাইলে ধারণ করা নির্যাতনের ভিডিও ফুটেজ দ্রুত উদ্ধারে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি আবাসিক হল ও ক্যাম্পাসের সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো সচল আছে কিনা এ ব্যাপারে স্মুথ অপারেশনের নির্দেশও দেয়া হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের যে হলে ফুলপরীকে নির্যাতন করা হয় সেই হলের বারান্দা, ডাইনিং, অফিস, করিডোরসহ মোট ১২টি সিসিটিভি রয়েছে। যার ফুটেজ হল প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে থাকার কথা। তদন্তে ভুক্তভোগীর অভিযোগ অনুযায়ী সেদিন রাতে ডাইনিংয়ে নির্যাতনের প্রমাণ পেয়েছে কমিটি। সে হিসেবে ডাইনিংয়ের সিসিটিভিতে ভিডিও ফুটেজ থাকার কথা।

এর আগে বিশ্ববিদ্যালয় তদন্ত কমিটি হল কমিটির কাছে ফুটেজ চাইলে তা সরবরাহ করতে পারেনি। হল থেকে জানানো হয়, টেকনিক্যাল ত্রুটির কারণে হল কর্তৃপক্ষ ফুটেজ সংগ্রহ করতে পারেনি। সেজন্য হল প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলকে দায়িত্ব দিয়েছিল। আইসিটি সেলও উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয়েছে।

স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও - dainik shiksha স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল - dainik shiksha ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি - dainik shiksha সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ - dainik shiksha বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা - dainik shiksha ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস - dainik shiksha এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0097291469573975