করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এমপিওভুক্ত কলেজের নন-এমপিও অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষক দীর্ঘ ২৮ বছর জনবল কাঠামোর বাইরে থাকায় এমপিওভুক্তির আওতায় আসেনি।এদিকে প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় কলেজ কর্তৃপক্ষ নামমাত্র বেতনটুকুও দিতে না পারায় ঈদ আনন্দ নেই সারাদেশের নন-এমপিও সাড়ে ৫ হাজার অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকের।
দৈনন্দিন জীবন-জীবিকার চিন্তায় দিশেহারা এসব শিক্ষক। শিক্ষক হয়ে লজ্জায় না পারছেন কারো কাছে হাত পাততে, না পারছেন ৩৩৩ নম্বরে ফোন করে ত্রাণ চাইতে। প্রতি বছর ঈদ আসে মহাসমারোহ, আবার চলেও যায়। সরকারি ও এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা বেতন-বোনাস পেলেও,অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকদের এমপিও না থাকায় বোবা কান্না আর গগণবিদারী আর্তনাদে আকাশ বাতাস ভারী হয়ে যায়, প্রিয় সন্তানের লাল জামা কেনার স্বপ্ন অপূর্ণ রয়ে যায়।
করোনাকালেও যেখানে স্বপ্নের পদ্মা সেতু,মেট্রোরেলসহ অনেক মেগা প্রকল্পের কাজ বন্ধ না হয়েও বরং অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলছে, সেখানে দেশের উচ্চশিক্ষা স্তরে বিধিমোতাবেক নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকরা এমপিওভুক্ত হতে না পারায় অভাবে কঠিন অর্থসংকটে পড়েছেন। স্বাধীনতা সূবর্ণজয়ন্তী ও মুজিব শতবর্ষ পালনের বছরেও জাতি গড়ার কারিগররা রুটিরুজির চিন্তায় থাকবে, এটা মেনে নেয়া কষ্টকর।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নীতির সমন্বয়হীনতায় অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকদের ভাগ্যে এমপিও নামক সোনার হরিণ অধরাই রয়ে গেছে। অথচ মাসিক ১২ কোটি হিসেবে বার্ষিক ১৪৪ কোটি টাকা বাজেটে ব্যয় বরাদ্দ হলেই অবহেলিত শিক্ষকদের স্বপ্ন পূরণ হতো, বেঁচে থাকার সুযোগ হতো। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার শিক্ষাবান্ধব সরকার হিসেবে সর্বজনস্বীকৃত। এমতাবস্তায় অতি দ্রুত অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকদের বেতনের (এমপিও) সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত। সে প্রত্যাশা এ সাড়ে ৫ হাজার শিক্ষকের।
লেখক: হারুন-অর-রশিদ, আহ্বায়ক, বাংলাদেশ বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষক ফেডারেশন, কেন্দ্রীয় কমিটি।