এবার সেই এপিএস মন্মথ রঞ্জন বাড়ৈকে সরকারের কোষাগার থেকে অবসর সুবিধা বাবদ কোটি টাকা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর। দপ্তরটিতে এখনও সক্রিয় দুই মাস আগে বদলি হয়ে যাওয়া মইনুল, কলেজ শাখার রাহাত ও অন্যান্যরা। একদিকে বাড়ৈর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা চলছে, এরই মধ্যে বাড়ৈর শিষ্যরা তার স্বেচ্ছা অবসরের আবেদনের ফাইল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। এই ঘটনাকে শিক্ষা প্রশাসনের অন্যতম নিকৃষ্ট কাজ হিসেবে অভিহিত করেছেন অভিজ্ঞরা। পলাতক থাকা অবসস্থায় আবেদন কিভাবে আসলো অধিদপ্তরে? বদলি হওয়ার পরও মইনুল কিভাবে স্বপদে বহাল? রাহাত গংদের বিরুদ্ধে শাস্তি কেন নয়? এসব প্রশ্ন করছেন শিক্ষা ক্যাডারেরই সিনিয়র সদস্যরা।
জানা যায়, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সাবেক এপিএস মন্মথ রঞ্জন বাড়ৈর বিরুদ্ধে অসদাচরণ ও পলায়নের অভিযোগ এনেছে খোদ শিক্ষামন্ত্রণালয়। মন্মথ রঞ্জন বাড়ৈ শিক্ষা ক্যাডারের একজন কর্মকর্তা এবং সহযোগী অধ্যাপক (সংস্কৃত)।
বাড়ৈকে ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ মার্চ সরকারি ব্রজলাল কলেজ (বি.এল, কলেজ) খুলনায় এ পদায়ন করা হয়। আদেশে তাকে ওই বছরের ১২ এপ্রিলের মধ্যে বদলি/পদায়নকৃত কর্মস্থলে যোগদান করার জন্য বলা হলেও তিনি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পদায়ন/বদলিকৃত কর্মস্থলে যোগদান না করে অননুমোদিতভাবে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন বলে শিক্ষামন্ত্রণালয়ের এক চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
শিক্ষামন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রজাতন্ত্রের একজন দায়িত্বশীল সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে এই কার্যকলাপ সরকারি চাকরির শৃঙ্খলা ও আচরণ বিধি পরিপন্থি এবং সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর বিধি ৩ (খ) ও ৩ (গ) অনুযায়ী শান্তিযোগ্য অপরাধ। শিক্ষামন্ত্রণালয়ের এক আদেশে এই অনুপস্থিতিকে ‘অসদাচরণ’ ও ‘পলায়ন’ অভিযোগে অভিযুক্ত করে এবং তার বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা ১০ কর্মদিবসের মধ্যে লিখিতভাবে জনানোর জন্য মন্মথ রঞ্জন বাড়ৈর স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানায় নোটিশ পাঠিয়েছে মন্ত্রণালয়।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, শিক্ষামন্ত্রীর এপিএস থাকাকালীন সময় নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির নানা অভিযোগে অভিযুক্ত হয়ে পড়েন শিক্ষা ক্যাডারের এই কর্মকর্তা। একসময় নানা অভিযোগে এপিএসের পদ থেকেও সরিয়ে দিতে বাধ্যহন মন্ত্রী।
বর্তমানে বাড়ৈর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা চলমান এবং এরই মধ্যে স্বেচ্ছায় অবসরে যাওয়ার আবেদন জমা দিয়েছেন। সেই আবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে বাড়ৈ সিন্ডিকেটের নতুন ও পুরনো সদস্যরা। অবসরে যাওয়ার সুযোগ দিলে সরকারের প্রায় কোটি টাকা গচ্চা যাবে বলে মনে করেন শিক্ষা প্রশাসনের কর্তারা।
বাড়ৈ যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন বলে জানা যায়। তার মতামত জানার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।