এসএসসি পরীক্ষার্থী এক দম্পতিকে ঘিরে আলোচনা - দৈনিকশিক্ষা

এসএসসি পরীক্ষার্থী এক দম্পতিকে ঘিরে আলোচনা

গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি |

শিক্ষার কোন বয়স নেই, নেই কোন বাধা। আর সেই শিক্ষা অর্জন করা যায় জীবনসঙ্গীকে সঙ্গে নিয়েই। তা করে দেখিয়েছেন নাটোরের গুরুদাসপুরের এক দম্পতি। তাদেরকে নিয়ে পরীক্ষার্থীদের মধ্যে যেমন আলোচনা চলছে, তেমনি অবাক হচ্ছেন অভিভাবকরাও। এই বয়সেও জ্ঞান অর্জনে হাল ছাড়েননি তারা। এখন তাদেরকে দৃষ্টান্ত হিসেবে উপস্থাপন করে আলোচনা চলছে গ্রামে গ্রামে। বিয়ের একযুগ পর একসঙ্গে এসএসসি পরীক্ষা দেন এই দম্পতি। উপজেলা পৌর সদরের বেগম রোকেয়া গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন ওই স্বামী স্ত্রী। 

গুরুদাসপুর পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের খামারনাচঁকৈড় মহল্লার সাবেক কাউন্সিলর মো. ফজলুর রহমান (৪০) ও তার স্ত্রী মোছা. মর্জিনা বেগম (৩০) বিয়াঘাট কারিগরি কমার্স কলেজের ভোকেশনাল শাখা’র ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের শিক্ষার্থী।

ফজলুর রহমান বলেন, আমার বয়স এখন ৪০ এর বেশি আর আমার স্ত্রীর বয়স প্রায় ৩০ বছর। আমাদের বিয়ে হয়েছে প্রায় একযুগ হয়েছে। আমাদের সংসারে একটি মেয়ে ও একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। দীর্ঘদিন পরে আমরা দুইজন স্বামী-স্ত্রী পরামর্শ করে বিয়াঘাট কারিগরি কমার্স কলেজে ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হই। নিয়মিত স্কুলে না যেতে পারলেও বাড়িতে দুইজন পড়াশোনা করতাম। 

তিনি আরও বলেন, বৃহস্পতিবার বাংলা দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষা ছিলো। আমরা দুইজন একসঙ্গে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছি এবং আমাদের পরীক্ষাও অনেক ভাল হয়েছে। আগামী শনিবার ইংরেজী দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। ছেলেমেয়েদের কথা চিন্তা করে নতুন করে পড়াশোনা শুরু করেছি। সাধ্যমত চেষ্টা করব উচ্চ ডিগ্রি অর্জন করার। এছাড়াও ৫ বছর কাউন্সিলরের দায়িত্ব পালন করে সাধারণ মানুষের সেবা করেছি। অনেক জায়গায় ঘুরেছি। দেখেছি যারা নিরক্ষর তাদের কষ্ট এবং তাদের ছেলেমেয়ের ভবিষ্যত।

ফজলুর বলেন, আমি এসএসসি পাশ করার পর ডিপ্লোমা কোর্স করব এবং আমার স্ত্রীকেও করাবো। একসময় আমার ছেলে মেয়ে বড় হয়ে গর্ববোধ করবে তাদের বাবা-মাও শিক্ষিত। 

ফজলুর রহমানের স্ত্রী মর্জিনা বেগম বলেন, আমি ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে পড়াশোনা বাদ দিয়েছিলাম। আমার স্বামীর আগ্রহে দুইজন পরামর্শ করে নতুন করে পড়াশোনা শুরু করেছি। দুই জন একসঙ্গে বাড়িতে পড়াশুনা করে পরীক্ষা দিচ্ছি। আমার খুব ভালো লাগছে। আমরা আরও পড়ালেখা করতে চাই।

ফজলুর রহমানের মা ফুলোয়ারা বেগম বলেন, আমার বাড়িতে ছেলে ও ছেলের বউয়ের সাথে যখন নাতি-নাতনিও পড়তে বসে তখন দেখতে আমার খুব ভালো লাগে। আমি তাদের জন্য সবসময় দোয়া করি। 

এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, এই বয়সে এসেও তাদের পড়াশোনার প্রতি যে আগ্রহ আছে তা প্রশংসনীয়।

শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.014311075210571