রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী সেন্ট্রাল গভর্মেন্ট স্কুলের (মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়) এক শিক্ষার্থীকে অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বুধবার প্রতিষ্ঠানটির শরীরচর্চা শিক্ষক এ কে এম জাহাঙ্গীর হোসাইন অষ্টম শ্রেণির জিহাদ নামের এক শিক্ষার্থীকে মারধর করেছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন তার পরিবারের সদস্যরা। মারধরে শিক্ষার্থীর পা ও শরীরের বিভিন্ন অংশে রক্ত জমাট হয়ে গেছে। ফেসবুকে ভাসছে বেদম পেটানোর ছবি।
যদিও অভিযুক্ত শিক্ষক বৃহস্পতিবার রাতে দৈনিক শিক্ষাডটকমের কাছে দাবি করেছেন ওই শিক্ষার্থীকে ‘নির্যাতন নয়, শাসন’ করেছেন তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দীর্ঘদিন প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত আছেন এ কে এম জাহাঙ্গীর হোসাইন। শুধু জিহাদ নয়, ‘বদরাগী’ এ শিক্ষকের হাতে মারধরের শিকার হয়েছেন ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানের বর্তমান ও সাবেক অগণিত শিক্ষার্থী।
একাধিক সাবেক শিক্ষার্থী দৈনিক শিক্ষাড্টকমকে জানান, ঘুষ দিয়ে শিক্ষকতার মহান পেশায় ঢুকে পড়েছিলেন জাহাঙ্গীর। তিনি শিক্ষক নামের কলংক। গত ১৮ বছর ধরে তিনি পেটাচ্ছেন শিক্ষার্থীদের। অভিযোগ হয়, কিন্তু হেডস্যারদের ঘুষ দিয়ে বারবার টিকে যাচ্ছেন তিনি।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর পরিবার অভিযোগ করেন, অষ্টম শ্রেণির প্রভাতী শাখার শিক্ষার্থী জিহাদকে ‘তুচ্ছ’ কারণে মারধর করেছেন শরীরচর্চা শিক্ষক জাহাঙ্গীর হোসাইন। মারধরে জিহাদের পায়ের কিছু অংশ, পিঠ ও শরীরের পেছনের দিকে রক্ত জমাট বেধে গেছে। যদিও শিক্ষা মন্ত্রণালয় একযুগ আগেই শিক্ষার্থীদের মারধর নিষিদ্ধ করেছে।
প্রতিষ্ঠানটির এক সাবেক শিক্ষার্থী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, জাহাঙ্গীর স্যার রগচটা মানুষ। এক যুগ আগে আমরা যখন স্কুলে পড়তাম আমাদেরও একই কায়দায় পেটাতেন। কিন্তু তখনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নির্যাতন নিষিদ্ধ করার বিষয়ে সুস্পষ্ট কোনো নির্দেশনা দেয়নি শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সেন্ট্রাল গভর্মেন্ট স্কুলের প্রভাতী শাখায় পড়েও জাহাঙ্গীর স্যারের মার খায়নি এমন শিক্ষার্থী খুঁজে পাওয়া কষ্টসাধ্য।
যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের শরীরচর্চা শিক্ষক এ কে এম জাহাঙ্গীর হোসাইন। জানতে চাইলে তিনি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, মারধর নয় শাসন করেছি। বিষয়টি পরিবারের সঙ্গে মিটমাট করা হয়েছে। এটি এমন কোনো বিষয় নয় বলেও দাবি করেন ওই শিক্ষক।
দেশের সরকারি-বেসরকারি স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, কারিগরি শিক্ষা, বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক শাস্তি দেয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করে ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে পরিপত্র জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। পরিপত্রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শারীরিক শাস্তি দেয়া বন্ধ করতে এবং কার্যকর ব্যবস্থা নিতে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিলো। যারা শারীরিক শাস্তি দেবেন, তাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ১৮৬০, ১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দের শিশু আইন এবং ক্ষেত্রমতে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে উদ্যোগ গ্রহণেরও নির্দেশনা দেয়া হয়েছিলো পরিপত্রে।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।