লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ ও জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) জালিয়াতি করে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৬ বছর চাকরি করছেন ওই স্কুলের সভাপতির পুত্রবধূ। অবৈধভাবে ভোগ করেছেন সরকারি লাখ-লাখ টাকা। দীর্ঘদিন বিষয়টি গোপন থাকার পর সম্প্রতি প্রকাশ পায়। জাল সনদধারী শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়েছে। হাতীবান্ধা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম অভিযুক্ত শিক্ষককে বরখাস্ত করার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, জাল সনদ নিয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি করছিলেন শিক্ষক হাছনা আক্তার। তিনি হাতীবান্ধা উপজেলার পূর্ব বিছনদই ডাঙ্গাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। এছাড়া তিনি ওই বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সামাদ মুন্সির ছেলে আরাফাত ইসলাম তুহিনের স্ত্রী।
গত ৫ নভেম্বর লালমনিরহাট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম নবী জাল সনদধারী শিক্ষক হাছনা হেনাকে বরখাস্ত করেছেন। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ বিভিন্ন দপ্তরে বিষয়টি জানিয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন তিনি।
জানা গেছে, হাছনা আক্তার তার নিজের বড় বোনের দাখিল পাসের সনদপত্রে নিজের নাম অন্তর্ভুক্ত করে শিক্ষাগত যোগ্যতার ভুয়া সনদ এবং জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) জালিয়াতি করে চাকরি নেন। পরে ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে জানুয়ারি মাসে পূর্ব বিছনদই ডাঙ্গাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি সরকারিকরণ করা হয়। সরকারিকরণের জন্য লালমনিরহাট জেলা পুলিশ (বিশেষ শাখা) ওই বিদ্যালয়ের সব শিক্ষকের বিষয়ে তদন্ত করেন। আর সেই তদন্তে হাছনা আক্তারের শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ ও জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) জালিয়াতির সত্যতা পায় পুলিশ। সম্প্রতি বিষয়টি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসকে জানানোর পর জাল সনদধারী শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে পূর্ব বিছনদই ডাঙ্গাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা হাছনা আক্তারের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
পূর্ব বিছনদই ডাঙ্গাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলমগীর হোসেন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘এ সংক্রান্ত একটি চিঠি পেয়েছি’।
পূর্ব বিছনদই ডাঙ্গাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিচলনা কমিটির সভাপতি আব্দুস সামাদ মুন্সি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘সে আমার ছেলে আরাফাত ইসলাম তুহিনের স্ত্রী। তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে সনদ ভুয়া কিনা আমার জানা নেই’।