টিউশন ফিয়ের অব্যয়িত টাকা ফেরত পায়নি শিক্ষার্থীরা - দৈনিকশিক্ষা

টিউশন ফিয়ের অব্যয়িত টাকা ফেরত পায়নি শিক্ষার্থীরা

রাজশাহী প্রতিনিধি |

টিউশন ফিয়ের অব্যায়িত টাকা শিক্ষার্থীদের ফেরত দিতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের দেয়া নির্দেশনা উপেক্ষা করেছেন অনেক স্কুল-কলেজের প্রধানরা। অধিদপ্তরের নির্দেশনা ছিলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিভিন্ন খাতে নেওয়া টাকার অব্যয়িত অংশ শিক্ষার্থীদের ফেরত দিতে হবে। কিন্তু শুধুমাত্র রাজশাহী জেলার একটি মাত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়া শিক্ষার্থীদের টাকা ফেরত দেয়নি কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছে রাজশাহী জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, ‘রাজশাহীতে সরকারি-বেসরকারি মিলে ৬৬৫টি স্কুল-কলেজ রয়েছে। এরমধ্যে ৫৩৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ১৩০টি কলেজ। শুধু মহানগরের মধ্যে রয়েছে ৯৮টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া অব্যয়িত টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশনা দিয়ে অধিদপ্তরের পাঠানো চিঠি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তারা টাকা শিক্ষার্থীদের ফেরত দেয়নি। একমাস আগে দ্বিতীয় দফায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধানদের চিঠি দেওয়া হয়েছে। লকডাউন শেষে ওইসব ব্যর্থ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা অধিদপ্তরে পাঠানো হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ১৮ নভেম্বর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর থেকে জারি করা আদেশে শিক্ষার্থীদের কাছে বিভিন্ন খাতে আদায় করা টাকা ব্যয় করা না হলে তা আবার শিক্ষার্থীদের ফেরত দেওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। কিন্তু অগ্রণী বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয় ছাড়া রাজশাহীর আর কোনো স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের টাকা ফেরত দেয়নি। বরং শিক্ষার্থীদের বেতন পরিশোধে চাপ দেওয়ার খবর ঘুরে ফিরে সংবাদ মাধ্যমে এসেছে। এ নিয়ে করোনা মহামারির সময়ে বেতন দেওয়া-নেওয়াকে কেন্দ্র করে শিক্ষক ও শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকদের মধ্যে মনোমালিন্য দেখা দিয়েছে।

তবে অধিদপ্তরের ওই নির্দেশনা মেনে শিক্ষার্থীদের ২৯ লাখ ২৯ হাজার ৩৩০ টাকা ফেরত দিয়েছে নগরের অগ্রণী স্কুল ও কলেজ। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটি ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে ৩২ লাখ ৪২ হাজার ৩৯০ টাকা ছাড় দিয়েছে শিক্ষার্থীদের। নগর ও জেলার আর কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের টাকা ফেরত বা টিউশন ফির সঙ্গে অব্যয়িত টাকা সমন্বয় করেছে বলে খবর পাওয়া যায়নি।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর থেকে জেলা শিক্ষা কার্যালয়গুলোতে দেওয়া নির্দেশনায় বলা হয়েছিল, অধিদপ্তরের আওতাধীন বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো (এমপিওভুক্ত ও ননএমপিও) শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টিউশন ফি গ্রহণ করবে কিন্তু অ্যাসাইনমেন্ট, টিফিন, পুনঃভর্তি, গ্রন্থাগার, বিজ্ঞানাগার, ম্যাগাজিন ও উন্নয়ন বাবদ কোনো ফি গ্রহণ করবে না। এসব খাতে ফি গ্রহণ করা হলেও তা ফেরত দিতে হবে অথবা টিউশন ফির সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে। এছাড়া অন্য কোনো ফি যদি অব্যয়িত থাকে, তা একইভাবে ফেরত দেবে বা টিউশন ফি এর সঙ্গে সমন্বয় করবে।

অগ্রণী বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টিউশন ফি ছাড়াও অন্যান্য খাতে ১ হাজার ৫৫ টাকা করে ফি আদায় করে থাকে। গত বছরের এই আদায় করা অর্থ থেকে অধিদপ্তরের নির্দেশনা পাওয়ার পর প্রতিষ্ঠানটি ২ হাজার ৭২৪ শিক্ষার্থীর থেকে আদায় করা ২৮ লাখ ৭৩ হাজার ৮২০ টাকা ও পোষ্য কোটার ১২২ জনের কাছ থেকে নেওয়া ৫৫ হাজার ৫১০ টাকা ফেরত দেওয়া হয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় এবার ২০২১ শিক্ষাবর্ষে ৩২ লাখ ৪২ হাজার ৩৯০ টাকা শিক্ষার্থীদের ছাড় দিয়েছে।

অগ্রণী স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ সাইফুল হক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘সরকারের প্রতিটি নির্দেশনা আমরা মেনে চলি। আমরা শিক্ষার্থীদের পাশে সবসময় আছি। অধিদপ্তরের চিঠির আলোকে অব্যয়িত টাকা ফেরত দিয়েছি। এ বছরের ফি আদায় করা হয়নি। এতে অনেক শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবক খুশি হয়েছেন। অনেকেই টাকা ফেরত নিতে চাচ্ছিলেন না।’

অন্যদিকে, চলতি বছরের ৩০ জুন শিক্ষার্থীদের থেকে ১৫ মাসের ৩ হাজার টাকা বেতন চেয়ে নোটিশ দিয়েছে রাজশাহী বরেন্দ্র কলেজ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা এই বেতন দেবে। তবে অভিযোগ রয়েছে শুধু বরেন্দ্র নয়, অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের এইভাবে একসঙ্গে টাকা নিচ্ছে।

বরেন্দ্র কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিতাই লাল বাছাড় দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমরা একাদশের কোনো শিক্ষার্থীর থেকে বেতন নেই নি। এখন নেওয়া হচ্ছে। তবে কোনো শিক্ষার্থীর বেতন দিতে সমস্যা হলে তার বিষয়টি দেখা হবে।

এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন জানান, ‘ করোনা মহামারিতে ফি নেওয়ার বিষয়টি অমানবিক। এই সময় একসঙ্গে ৩ হাজার টাকা দেওয়া অনেক শিক্ষার্থীর পক্ষে সম্ভব না।’

স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও - dainik shiksha স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল - dainik shiksha ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি - dainik shiksha সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ - dainik shiksha বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা - dainik shiksha ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস - dainik shiksha এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0039739608764648