অর্থ জালিয়াতির মামলায় ডেসটিনি গ্রুপের প্রেসিডেন্ট সাবেক সেনাপ্রধান হারুন-অর-রশিদকে চার বছরের সাজা দিয়েছে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪।
বৃহস্পতিবার এ রায় দেওয়া হয়। হারুন-অর-রশিদ মুক্তিযুদ্ধে বীরপ্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত ও সাবেক রাষ্ট্রদূতও। ‘রাজনৈতিক কারণে’ প্রয়াত রাষ্ট্রপতি ও সাবেক সেনাপ্রধান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ দুর্নীতি মামলায় সাজা পেয়েছিলেন। তাকে বাদ দিলে এই প্রথম কোনো সাবেক সেনাপ্রধানের সাজা হলো।
গ্রাহকদের অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ করা মামলায় হারুন-অর-রশিদকে সাজা দেওয়া হয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানের অর্থ জালিয়াতির অভিযোগে আরেকটি মামলায়ও তিনি আসামি। ওই মামলার বিচার কার্যক্রম চলছে।
হারুন-অর-রশিদ ২০০০ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদে উন্নীত হন এবং সেনাবাহিনীর প্রধান নিযুক্ত হন। অবসর গ্রহণের পর তিনি রাষ্ট্রদূত হিসেবেও নিযুক্ত হয়েছিলেন।
২০০৬ সালে হারুন-অর-রশিদ বিতর্কিত ডেসটিনি গ্রুপে প্রেসিডেন্ট হিসেবে যোগ দেন। ২০১২ সালে ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি ও ডেসটিনি ট্রি প্ল্যানটেশন প্রকল্পে অর্থ জালিয়াতির অভিযোগে মামলা করার পর তিনি গ্রেপ্তারও হন। পরে তাকে জামিন দেওয়া হয়েছিল। গতকাল মাল্টিপারপাসের মামলায় সাজা দেওয়ার পর তাকে আবারও কারাগারে পাঠানো হয়।
দুদকের কৌঁসুলি মীর আহমেদ আলী সালাম বলেন, ‘আদালত বলেছেন, তার (হারুন-অর-রশিদ) বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। কিন্তু তিনি বাংলাদেশের সেনাপ্রধান ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বসূচক অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীরপ্রতীক খেতাবে ভূষিত করেছে। এসব বিবেচনায় তাকে সর্বনিম্ন দন্ড (চার বছর) দিয়েছেন আদালত। রায়ে তার ব্যক্তিগত অবরুদ্ধ সম্পত্তি ও ব্যাংক হিসাব রিলিজ (অবমুক্ত) করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।’
এর আগে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি ও সাবেক সেনাপ্রধান এরশাদের বিরুদ্ধে জনতা টাওয়ার দুর্নীতি মামলার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে পাঁচ বছর কারাদন্ড দেওয়া হয়েছিল। এছাড়া রাষ্ট্রপতি থাকাকালে পাওয়া উপহার রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা না দেওয়া ও জাপানি নৌযান কেনায় অনিয়মের অভিযোগে এরশাদের কারাদন্ড হয়েছিল।
১৯৯০ সালে গণআন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপি ক্ষমতায় আসে। এরপর এরশাদের বিরুদ্ধে এসব মামলা হয়।