স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেছেন, রাজধানীতে চাহিদার তুলনায় ওয়াসার পানির সরবরাহে ঘাটতি নেই। অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে ঢাকা ওয়াসার পানি বিশুদ্ধ করা হয়।
আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেনের প্রশ্নের জবাবে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী এ কথা বলেন। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকের শুরুতে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপন করা হয়।
তাজুল ইসলাম বলেন, ঢাকা শহরের উভয় সিটি করপোরেশন এলাকায় দৈনিক পানির চাহিদা ২৬০ থেকে ২৬৫ কোটি লিটার। আর ঢাকা ওয়াসার দৈনিক পানি উৎপাদনের সক্ষমতা ২৭০ থেকে ২৭৫ কোটি লিটার। অর্থাৎ চাহিদার তুলনায় ঢাকা ওয়াসার পানি উৎপাদন সক্ষমতা বেশি। সুতরাং চাহিদা অনুযায়ী পানির সরবরাহে ঘাটতি নেই। পানি বিশুদ্ধকরণের কাজটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তির পলি অ্যালুমিনিয়াম ক্লোরাইড, অ্যালাম সালফেট ও ক্লোরিনেশনের মাধ্যমে পরিশোধন করা হয়। ডব্লিউএইচও অ্যান্ড ইসিআর ৯৭ অনুসরণ করে পানির গুণগত মান নিশ্চিত হওয়ার পর নেটওয়ার্কে সরবরাহ করা হয়। এ ছাড়া ঢাকা ওয়াসার আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন নিজস্ব ল্যাবরেটরি ও আইসিডিডিআরবি ল্যাবে নিয়মিত পানির নমুনা পরীক্ষা করা হয়।
সরকারি দলের সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের প্রশ্নের জবাবে তাজুল ইসলাম বলেন, ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বরে ঢাকা ওয়াসা স্টর্ম সুয়ারেজ ও খাল সিটি করপোরেশনে হস্তান্তরের পর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ, প্রকৌশল বিভাগ ও সম্পত্তি বিভাগের সমন্বিত প্রচেষ্টায় বিভিন্ন ক্রাশ প্রোগ্রাম গ্রহণ করে। ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বর পর্যন্ত ২৬টি খাল থেকে প্রায় ৭১ হাজার ৫৮৪ টন ভাসমান বর্জ্য, প্রায় ১০ হাজার টন মাটি/স্লাজ অপসারণ করা হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, ডিএনসিসির সব খালই দখল বা অপদখলের মধ্যে আছে। সম্পত্তি বিভাগ সীমিত জনবল দিয়ে এসব দখলমুক্ত করার বিষয়ে সচেষ্ট রয়েছে। খালের বর্জ্য অবজারভেশন করার জন্য বিভিন্ন খালে সিসিটিভি স্থাপন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
সরকারি দলের সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে তাজুল ইসলাম বলেন, ঢাকা পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের মাধ্যমে মহাখালী বাস টার্মিনাল ভেঙে নতুনভাবে পুনর্নির্মাণসহ বিআরটি লাইন-৩-এর করিডোর রাস্তা উন্নয়ন কার্যক্রম করা হবে।
মন্ত্রী বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ৩০ বছর মেয়াদি ইন্টিগ্রেটেড সিটি মাস্টার প্ল্যান ফর ঢাকা (২০২০-২০৫০) প্রণয়ন করা হচ্ছে। এটি বাস্তবায়িত হলে পরিচ্ছন্ন ও স্মার্ট সিটি তৈরিতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
আবদুল লতিফের আরেক প্রশ্নের জবাবে তাজুল ইসলাম বলেন, বুড়িগঙ্গা আদি চ্যানেল সৌন্দর্য বৃদ্ধি ও নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টির জন্য প্রকল্প নেওয়া হবে।
সরকারি দলের সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগকে শক্তিশালী করার জন্য ইউনিয়ন পরিষদের জনবল কাঠামো বৃদ্ধির লক্ষ্যে ৪ হাজার ৫৫৩টি ইউনিয়ন পরিষদের প্রতিটিতে একটি করে হিসাব সহকারী-কাম-কম্পিউটার অপারেটর পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। এই পদে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ জেলা প্রশাসক। বর্তমানে নিয়োগ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন অনুযায়ী, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে ইউনিয়ন পরিষদ প্রয়োজনবোধে অতিরিক্ত জনবল নিয়োগ করতে পারবে। যাঁদের বেতন-ভাতা সংশ্লিষ্ট পরিষদের নিজস্ব তহবিল থেকে পরিশোধ করতে হবে।