‘নব্য জাতীয়কৃত কলেজ শিক্ষকদের নন-ক্যাডার রাখার বিষয়টি অনুমোদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী’ –এমন একটি বাক্য ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়েছে বি সি এস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার সমিতির নেতৃবৃন্দ। আর এমন অসমর্থিত তথ্যের ভিত্তিতেই ৬,৭ ও ৮ জানুয়ারির পূর্বঘোষিত কর্মবিরতির কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে।
তবে, নভেম্বর মাসে লাখ লাখ শিক্ষার্থীকে জিম্মি করে কর্মবিরতি পালনের পর শিক্ষামন্ত্রী ও মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব ধমক দেন সমিতির নেতাদের। ধমক খেয়ে চুপসে যান তারা। তাই কর্মসূচি বাতিল করার পক্ষে তারা। অপরদিকে, কতিপয় জুনিয়র শিক্ষক কর্মসূচি বাস্তবায়নের পক্ষে রয়েছেন বলে জানা যায়।
দৈনিকশিক্ষার অনুসন্ধানে নন-ক্যাডার করার কোনো প্রজ্ঞাপন বা ফাইল অনুমোদনের খবর পাওয়া যায়নি।
জানা যায়, জাতীয়কৃত কলেজ শিক্ষকদের শিক্ষা ক্যাডারে অন্তর্ভুক্তির ধারাবাহিকতা বজায় রাখার লক্ষ্যে ২০০০ খ্রিস্টাব্দে শেখ হাসিনার শাসনামলে বিবদমান সব পক্ষের সর্ব সম্মতিক্রমে তৈরি করা ‘২০০০ বিধি’ ফের বাতিল চায় বি সি এস সাধারণ শিক্ষা সমিতির একাংশ। শিক্ষা ক্যাডারের বিএনপি-জামাতপন্থীদের উসকানিতে গত এক বছরের বেশি সময় যাবত মানবন্ধন, ক্লাসবর্জনসহ নানা কর্মসূচি দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে ২৮৩ কলেজের জাতীয়করণের প্রজ্ঞাপন।
আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ৬, ৭ ও ৮ জানুয়ারি দেশের সব সরকারি কলেজে কর্মবিরতি পালন করার ঘোষণা ছিলো।
জাতীয়করণের তালিকায় থাকা ২৮৩ কলেজের এবং হতে যাওয়া কলেজশিক্ষকদের বিসিএস ক্যাডারে অন্তর্ভুক্ত না করার দাবিতে ২৬ ও ২৭ নভেম্বর কর্মবিরতি পালন করে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি। কর্মবিরতির ঘটনায় লাখ লাখ শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এতে সরকারের উচ্চমহলে ব্যাপক ক্ষোভের সঞ্চার হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তার ধমক শুনতে হয় বি সি এস সমিতির নেতৃবৃন্দকে।
সেনা শাসক জিয়াউর রহমান সরকারি কলেজ শিক্ষকদের ক্যাডারভুক্ত করলেও অদ্যাবধি পররাষ্ট্র, প্রশাসন, পুলিশসহ অপেক্ষাকৃত মেধাবীদের পছন্দের ক্যাডারের সমান সুযোগ পান না শিক্ষা ক্যাডার সদস্যরা। তাই তাদের মন খারাপ থাকে। ক্যাডার ছাড়তে মরিয়া হন অনেকেই। যারা মেধার লড়াইয়ের শেষতক হেরে যান তারা শিক্ষার বিভিন্ন দপ্তর ও পরিদপ্তরের পদায়ন পেতে যে কোনো ত্যাগ স্বীকার করতে দেখা যায়। হাতেগোণা কয়েকজন বাদে বাদবাকীদের সারাজীবন কেটে যায় আফসোস করতে করতে। এভাবে কয়েকযুগ চলার ফলে সরকারি কলেজের শিক্ষার মান তলানীতে নেমেছে। এটা বুঝতে পেরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৪ খ্রিস্টাব্দের ৩১শে আগস্ট সরকারি কলেজগুলোকে আঞ্চলিক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে হস্তান্তর করার অনুশাসন দেন। মাত্র সাতটি কলেজ হস্তান্তর হয়েছে অদ্যাবধি। বি সি এস সাধারণ শিক্ষা সমিতি প্রধানমন্ত্রীর ওই অনুশাসনের বিরোধীতা করে চলছে।