নম্বরপত্র বিতরণে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৭০০ টাকা করে নেওয়ার অভিযোগে নওগাঁর মান্দা থানা আর্দশ বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শ্রী অনূপ কুমার মোহন্তের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে নওগাঁর জেলা শিক্ষা অফিসার। বুধবার (১৮ আগস্ট) সকালে প্রতিষ্ঠানে তদন্ত শুরু করেন জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফর রহমান।
অভিযোগে জানা যায়, মান্দা থানা আর্দশ বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শ্রী অনূপ কুমার মোহন্ত ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ৩৯৭ জন এইচএসসি উত্তীর্ণ ছাত্রীর নামে প্রতিষ্ঠানের প্রশংসাপত্র দিতে ছাত্রী ও অভিভাবকদের কাছ থেকে জোরপূর্বকভাবে প্রতিজন শিক্ষার্থী প্রতি ৭০০ টাকা করে ২ লাখ ৭৭ হাজার ৯০০ টাকা আদায় করেন। এ ঘটনায় কিছু ছাত্রী ও অভিভাবক বেনামে দুদকের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ ইমেইল করে পাঠায়। দুদক অফিস ওই অভিযোগের সুত্র ধরে বিষয়টির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য এক সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেন। নওগাঁ জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফর রহমানকে এ অভিযোগের তদন্তভার দেওয়া হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক ছাত্রী ও তাদের অভিভাবকরা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, প্রতিষ্ঠান থেকে কেউ এ প্লাস পেয়ে যদি অন্য প্রতিষ্ঠানে বিশেষ করে রাজশাহী, নওগাঁ বা আরও কোন প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে চায় তাহলে ১ হাজার টাকা করে আদায় করা হয়। এটা যেন তাদের অধিকার। এ নিয়ে কেউ কোন প্রতিবাদ করলো ছাত্রীদের প্রশংসাপত্র আটকিয়ে দেওয়া হয়। তাই নিরবে এসব অনিয়ম মুখবুজে সহ্য করতে হয়। এছাড়া কোন উপায় নেই।
অভিযোগ পত্র আমলে নিয়ে জেলা শিক্ষা অফিসারকে তদন্তভার দিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন পাঠাতে বলেছেন দূর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
অভিযোগের বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অনুপ কুমার মোহন্ত দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে বলেন, আমার প্রতিষ্ঠানে আগে থেকেই এভাবে টাকা নেওয়া হতো। তারই ধারাবাহিকতাই এবারও নেওয়া হয়েছে। তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে একটি টাকাও নেইনি।
তাহলে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া টাকা গুলো কি করলেন দৈনিক শিক্ষাডটকমের এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, আমার প্রতিষ্ঠান সংলগ্ন ৩৩ শতক জমি প্রতিষ্ঠানের নামে ক্রয় করা হয়েছে। এই জমির মূল্য ৩৩ লাখ টাকা, বিভিন্ন জনের অনুদান এসেছিল ২২ লাখ টাকা আর প্রতিষ্ঠানের ঋণ ছিল ১৩ লাখ টাকা। অবশিষ্ট ১৩ লাখ টাকার মধ্যে আমাদের (শিক্ষকদের) কাছ থেকে পরিশোধ করার পর এখনও ৬ লাখ টাকা প্রতিষ্ঠানের ঋণ আছে।
২ লাখ ৭৭ হাজার ৯০০ টাকা আদায় হয়নি দাবী করে তিনি বলেন, এবার শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৯৪ হাজার টাকার মত আদায় হয়েছে তার মধ্যে প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসেবে ৬৪ হাজার টাকা জমা দেওয়া হয়েছে আর বাকি টাকা বিদ্যুৎ বিল ও পার্টটাইম কর্মচারীদের বেতন দেওয়া হয়েছে।
এবিষয়ে জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ লুৎফর রহমান দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে বলেন, দুদক থেকে প্রাপ্ত অভিযোগের তদন্তভার পাওয়ার পর বুধবার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে তদন্ত করতে গিয়েছিলাম। প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট সবার ও উপস্থিত জনগণের বক্তব্য নেওয়া হয়েছে। তাদের বক্তব্য পর্যালোচনা করে তদন্ত প্রতিবেদন পাঠানো হবে।