আগামী শিক্ষাবর্ষের (২০২৩) জন্য প্রাথমিকের বই ছাপতে ‘অবিশ্বাস্য কম দর’ দেয়ায় ৩৮টি প্রেসকে ‘সন্দেহ’ তালিকায় নিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড। প্রাক-প্রাথমিক থেকে নবম-দশম শ্রেণি পর্যষন্ত বিনামূল্যে বিতরণের জন্য সব পাঠ্যবইয়ের কন্টেন্ট প্রস্তুত ও ছাপার কাজ দেখভাল করার দায়িত্বে থাকা এনসিটিবির আশঙ্কা, এত কম দরে কেউ কাজ করে দিতে পারবে না। তাই প্রেস মালিকদের ব্যাখ্যা তলব করেছে। কীভাবে তারা কাজটি করবে তা জানতে চেয়ে চিঠি দিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার ২৮০টি লটের কাজের জন্য ৩৮টি মুদ্রাকর প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া ওই চিঠির জবাব আগামী রোববারের মধ্যে জমা দিতে বলা হয়েছে।
বিষয়টি সম্পর্কে আরও খোলাসা হতে বুধবার এনসিটিবিতে গিয়েছিলেন কয়েকটি বড় প্রেসের মালিক। তাদের মধ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বাংলাদেশ ডিজিটাল প্রিন্টিং এ্যান্ড প্যাকেজিং লিমিটেডের চেয়ারম্যান ওসমান গণিও ছিলেন। তার অভিযোগ, গত মাসে টেন্ডার প্রক্রিয়ায় অংশ নেয়া নুরুল ইসলাম প্রেস ও টাইমস মিডিয়ার বিরুদ্ধে।
ওসমান গণির ভাষ্যমতে, ৬৮ নম্বর লটে প্রথম নুরুল ইসলাম প্রেস আর দ্বিতীয় বাংলাদেশ ডিজিটাল প্রিন্টিং এ্যান্ড প্যাকেজিং লি.। আবার ৬৩ নম্বর লটে প্রথম টাইমস মিডিয়া- যারা অনেক কাজ পেতে যাচ্ছে। এই লটেও বাংলাদেশ ডিজিটাল প্রিন্টিং এ্যান্ড প্যাকেজিং লি. দ্বিতীয়।
দৈনিক শিক্ষাডটকমকে ওসমান গণি বলেন, সব সময়েই যারা সর্বনিম্ন দরদাতা তারা কাজ পেয়েছেন। সর্বনিম্ন দরদাতাকে কাজ না দিয়ে অন্য কাউকে কাজ দেয়া মানেই অনিয়ম। অতীতে কখনও এমন চিঠি দেয়া হয়নি।
ওসমান গণি মনে করেন, প্রাথমিকের বই ছাপার টেন্ডারে অংশ নিয়ে যারা লোয়েস্ট হয়নি তারাই এনসিটিবির কোনও কোনও কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে এমন ব্যাখ্যা তলব করানোর কাজটি করেছেন।
তিনি আরও বলেন, এনসিটিবি তো দেখবে বইয়ের মান, কাগজের মান সঠিক দিতে পারলো কি-না। ব্যর্থ হলে জরিমানা করার বিধান রয়েছে।
অপর এক সূত্র জানায়, প্রায় পাঁচ বছর ধরে এনসিটিবির উৎপাদন নিয়ন্ত্রকের দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক সাইদুর রহমানসহ কয়েকজন মিলে অগ্রনী প্রেসকে কাজ পাইয়ে দেয়ার ধান্দা করছে। টেন্ডার মূল্যায়ন কমিটিতেও রয়েছেন সাইদুর। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সাইদুর রহমান।
সাইদুর রহমানকে খুব শিগগিরই অন্যত্র বদলি করা হবে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র জানিয়েছে।
৩৮ প্রেসকে ব্যাখ্যা তলবের বিষয়ে জানতে চাইলে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, মূল্যায়ন কমিটির এখতিয়ার আছে এমন ব্যাখ্যা তলবের। আমরা চাই সঠিক সময়ে সঠিক বই প্রকাশ করতে। অনিয়ম করলে কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না।