সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) নামে ফেসবুকে যত গ্রুপ বা ফেসবুক পেজ আছে, তার সব কটিই ভুয়া। কোনোটিই পিএসসির দাপ্তরিক পেজ বা গ্রুপ নয়। বিষয়টি নিশ্চিত করে পিএসসি জানিয়েছে, তাদের কোনো ফেসবুক পেজ বা গ্রুপ নেই।
তারা এসব পেজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানাবে। চাকরিপ্রার্থীদের সূত্রে জানা গেছে, কয়েক বছর ধরে বিসিএসের চাকরি নিয়ে তরুণদের বিপুল আগ্রহ বাড়ার পর থেকে পিএসসির নামে ফেসবুকে একাধিক গ্রুপ ও পেজ চালু হয়। এসব গ্রুপের ছবি ও নাম এমনভাবে দেওয়া, যাতে দেখে মনে হয় পিএসসি এসব পেজ বা গ্রুপ তৈরি করেছে।
কোনো কোনো পেজ ও গ্রুপে বিসিএসের প্রিলিমিনারি, লিখিত বা ভাইভার সম্ভাব্য তারিখ দেওয়া হয়। এসব দেখে অনেকে এটি পিএসসির দাপ্তরিক ঘোষণা মনে করেন। আবার চূড়ান্ত সুপারিশ কবে দেওয়া হতে পারে, তারও ঘোষণা এসব পেজ ও গ্রুপে দেওয়া হয়ে থাকে।
Bangladesh Public Service Commission নামের একটি পেজের কাভার ও প্রোফাইল পিএসসির ছবি দেওয়া আছে। এতে ১ লাখ ৭৩ হাজার লাইক দেওয়া আছে। এখানে সর্বশেষ ১৮ জুন বলা হয়েছে, ৩০ জুন ২০২২ তারিখে ৪৪তম বিসিএস পরীক্ষা-২০২১-এর প্রিলিমিনারি টেস্টের রেজাল্ট প্রকাশ হতে পারে। এত লাইকের সংখ্যা দেখে অনেকেই ধরে নেন, এটিই পিএসসির অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে পিএসসি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন বলেন, ‘যে পেজের কথা বলছেন, তা পিএসসির কোনো পেজ নয়। এখানে প্রিলিমিনারির যে তারিখের কথা বলা হয়েছে, তার আগেও ফল প্রকাশিত হতে পারে। এ ধরনের ভুয়া পেজের কোনো বক্তব্য পিএসসির দায় নয়।
এখানের কোনো কিছুর বিষয়ে পিএসসির অনুমতি নেই। আমরা এই পেজের বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানাব।’ বিভিন্ন পদে আছেন, এমন বেশ কয়জন বিসিএস ক্যাডার বলেন, ‘আমরা মনে করেছিলাম, এটি পিএসসির কোনো অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ। এখানে নানা পরীক্ষা বা ফলের সম্ভাব্য তারিখ প্রকাশিত হয়। আমরা সেগুলোর ওপর আস্থাও রাখতাম।
এখন জানলাম, এটি ভুয়া। আমাদের ক্যাডারদের অনেকেই এখানে লাইক দিয়ে রেখেছেন। এটি দেখে আমরা বিভ্রান্ত হয়েছি।’ মামুন হোসেন নামের এক চাকরিপ্রার্থী বলেন, ‘৪৪তম প্রিলির ফল কবে হবে, খুঁজতে গিয়ে দেখি, একটি পেজ পিএসসির নামে। লাইকের সংখ্যা দেখে মনে হয়েছিল, এটা হয়তো আসল কোনো পেজ। এখন জানলাম, এটি আসলে ভুয়া।’
এ ধরনের ভুয়া পেজ যাতে দ্রুত অপসারণ করা হয়, তার আবেদন জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, এ ধরনের পেজের অনুমান-নির্ভর তথ্য মানুষের ক্ষতির কারণ হতে পারে। পিএসসির একটি সূত্র বলছে, ফেসবুক পেজের কিছু কিছু পোস্ট দেখে মনে হয়, সেগুলোর তারিখ গোপনে পিএসসি থেকে সংগ্রহ করা হয়। এতে পিএসসির কেউ জড়িত কি না, সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তবে চাকরিপ্রার্থীদের দাবি, এমন একটি যুগ, যেখানে প্রায় সব প্রতিষ্ঠানের ফেসবুক অফিশিয়াল সাইট আছে। উদাহরণ হিসেবে তাঁরা বিটিআরসি, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের পেজের কথাও জানান।
এর ধারাবাহিকতায় পিএসসিও একটি অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ চালু করতে পারে। সেটি ভেরিফায়েড হলে চাকরিপ্রার্থীরা সহজেই আসল ও নকল পেজ চিনতে পারবেন। এটি এখন সময়ের দাবি বলেও মনে করেন একাধিক চাকরিপ্রার্থী।