এনটিআরসিএর সুপারিশ পেয়ে যোগদান করলেও প্রতিষ্ঠানের মহিলা শিক্ষক কোটা পূরণ না থাকায় এমপিওভুক্ত হতে পারছেন না কয়েকশ শিক্ষক। প্রতিষ্ঠান প্রধানদের দেয়া শূন্যপদের তথ্যে মহিলা কোটার পদকে সাধারণ পদ ঘোষণা করায় প্রতিষ্ঠানগুলো মহিলা কোটা পূরণ হয়নি। তাই মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা এসব শিক্ষকদের এমপিও আবেদন অগ্রায়ন করেননি। তাই এমপিওভুক্ত হতে পারেননি তারা। যদিও শূন্যপদের তথ্য পাঠানোর নির্দেশনায় মহিলা কোটা উল্লেখ করে তথ্য দিতে বলা হয়েছিল প্রতিষ্ঠান প্রধানদের। যা যাচাইয়ের দায়িত্ব ছিল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের। কিন্তু প্রার্থীদের নিয়োগ সুপারিশের পর দেখা যায়, সে তথ্যেও ভুল আছে। তাই মহিলা কোটা পূরণ হয়নি তাদের। মহিলা কোটা পূরণ না হওয়া পদগুলোতে নিয়োগ সুপারিশ পেয়েও ১৫ মাস ধরে শিক্ষকতা করলে এমপিওভুক্ত হতে পারছেন না প্রার্থীরা।
তবে, একটি প্রশাসনিক আদেশ জারি করে এনটিআরসিএ সুপারিশকৃত প্রার্থীদের মহিলা কোটা নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা নিরসন সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক শিক্ষা সচিব ও দৈনিক শিক্ষাডটকমের প্রধান উপদেষ্টা মো. নজরুল ইসলাম খান। শিক্ষকদের ১৫ মাসের বকেয়া বেতন প্রাপ্য বলেও মনে করছেন তিনি। একটি প্রশাসনিক আদেশ জারি করে ভুক্তোভোগী শিক্ষকদের নিজ এলাকায় ঝামেলাবিহীন পদে নিয়োগ সুপারিশ করে জটিলতা নিরসন করা যাবে বলে মত দিয়েছেন এন আই খান। ফেসবুক লাইভটি সঞ্চালনা করেন দৈনিক শিক্ষাডটকমের সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান খান।
মহিলা কোটা নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা সম্পর্কে জানার পরে লাইভে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘৪০ শতাংশ ছিল মহিলা কোটা। কিন্তু আমি যখন [শিক্ষাসচিব ছিলাম] নিয়োগ দিতে গেলাম তখন দেখলাম মাদরাসাতে বিশেষ সমস্যা ছিল, সেখানে পাওয়া যেত না শিক্ষক। তখন আমরা গ্রামাঞ্চলের জন্য শিথিল করে দিয়েছিলাম কিছু শতাংশ। কিন্তু অনেক চাপ ছিল কোনোভাবেই মহিলা কোটা উঠানো যাবে না। আমি মনে করি, এতদিনে গ্রাম শহরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মহিলা কোটার হার এক হয়ে যাওয়া উচিত।’ এ সবাই নতুন প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা সরকারকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘জবাবদিহিতার একটা বিষয় আছে। কেউ যদি কোনো ভুল করে, আইনের ভাষায় না জেনে কোনো কাজ করাও অপরাধ। কেউ আইন জানে না, সেটা আইন দেখে না।
তিনি বলেন, ‘কোনো প্রধান শিক্ষক হয়তা না জেনে অথবা কোনো গুরুত্ব না দিয়ে অবহেলা করে শূন্যপদের তথ্য পাঠিয়ে দিয়েছেন। সেটা ঠিকও করেনি। সুতরাং এটা তো এনটিআরসিএর জানার কথা না, তাহলে হেডমাস্টারের এটা অবহেলা, কিংবা কোনো একটা অন্য কারণে সেটা করেছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে ভবিষ্যতের জন্য সতর্ক হবে, আর ভুল হবে না। ‘কি করিলে কি হয়’ একটা কন্ডিশনাল রিফ্লেক্স এখানে দরকার।’
সাবেক শিক্ষা সচিব বলেন, ‘যে শিক্ষক নিয়োগ পেয়েছে তার তো কোনো দোষ নেই। আবার এনটিআরসিএরও দোষ না, সে তো জানে না সেখানে কোন পদ খালি। হয়তো এনটিআরসিএ সেটা খতিয়ে দেখতে পারতো। কিন্তু সেটা সম্ভব না। এটার জন্য দায়ী হচ্ছে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক। ফলে কোনোমতেই নিয়োগপাওয়া শিক্ষকদের দায়ী করা যায় না। আর এই ১৫ মাস ধরে তার শিক্ষকতা করেছেন, হাদিসেও আছে- ঘাম শুকানোর আগে মজুরি দিতে হবে। আমি মনে করি, একটা স্পেশাল জিও জারি করে তাদের ১৫ মাসের বেতনটা দিয়ে দেয়া উচিত। এমনিতেও খালি থাকলে বেতন দিতে হতো। সুতরাং এটা তো লসের কিছু না। তাদের বেতন বকেয়া থেকে দিয়ে দেয়া উচিত।’
নজরুল ইসলাম খান আরও বলেন, ‘কোনো আইন শিথিল করা উচিত না। এখন যেখানে খালি আছে সাথে সাথে এক সপ্তাহের ভিতরে ওদেরকে নতুন জায়গায় প্লেস করে দেয়া উচিত। সম্ভব, এখনও সম্ভব। কেন তারা এতদিন সাফার করবে? তার সার্ভিস কেন নষ্ট হবে? নতুন জায়গায় ওই নিয়োগ আসার আগে এটা দেয়া উচিত। এটা হচ্ছে প্রশাসনিক একুমেন, এটা কোনো কঠিন কাজ না।’