টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে আবারও বন্যায় সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়ে পড়েছে। কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। বহু স্কুল-কলেজ ও পাবলিক পরীক্ষার সেন্টারসহ বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে।
সারী ও বড় নয়াগং নদীর পানি বিপদ সীমার ৫৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কন্ট্রোল রুম ও ২৪ টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে।টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে নিজপাট, জৈন্তাপুর দরবস্ত, চারিকাটা, ফতেপুর ও চিকনাগুল ইউনিয়নের সিলেট তামাবিল রোড ছাড়া সব রাস্তাঘাট, বসতবাড়ি সহ স্কুল-কলেজ পানিতে তলিয়ে গেছে।
ইমরান আহমদ সরকারি মহিলা কলেজ, জৈন্তিয়াপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, উপজেলার আসামপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও রাংপানি ক্যাপ্টেন রশিদ স্কুল এন্ড কলেজ, বিরাইমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ডুলটিরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ সরকারি-বেসরকারি আরও শতাধিক স্কুল ও মাদরাসা পানিতে তলিয়ে গেছে।
নিচু এলাকার অনেকের বসতবাড়িতে ৭-৮ ফুট পানি। মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটে যাচ্ছে। টানা বৃষ্টিপাতের ফলে জৈন্তাপুর উপজেলার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
উপজেলার নিচু এলাকার জনসাধারণকে সর্তক থাকতে বলা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন পক্ষ থেকে কন্ট্রোল রুমসহ ২৪টি আশ্রয় কেন্দ্র সাধারণ মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। এছাড়া অনেক আশ্রয় কেন্দ্রে পানি উঠে পড়েছে। সিলেটবাসী বলছে, গত ৩৪ বছরের মধ্যে সবচাইতে বড় বন্যা বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বন্যায় স্কুলের অর্ধবার্ষিকী পরীক্ষা স্থগিত করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। জৈন্তাপুর উপজেলার প্রায় ৭০ ভাগ গ্রামে পানি প্রবেশ করায় জনসাধারণকে নৌকা দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল- বশিরুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, অব্যহত বৃষ্টিপাতের ফলে আবারও বন্যায় জৈন্তাপুর উপজেলার বেশিরভাগ এলাকায় বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়ে পড়েছে। তিনি পাহাড়-টিলা ও নদীর তীরবর্তী বাসিন্ধাদের সর্তক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।
তিনি আরও জানান, বন্যা পরিস্থিতির বিষয়ে একটি জরুরি কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে। উপজেলায় ২৪ টি আশ্রয় কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৬টি ইউনিয়নে ২৪ মেট্রিক টন চাল ও ৫শত প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামাল আহমদ, উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল বশিরুল ইসলাম, উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীনসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন করেছেন এবং অসহায় মানুষকে শুকনো খাবার দিয়ে সহযোগিতা করছেন।