স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে দেশের ৩৭টি সরকারি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে উপজাতি শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত আসনে অন্য শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধের দাবি জানিয়েছেন দেশের ২২ বিশিষ্ট নাগরিক। গতকাল বুধবার গণমাধ্যমে এক বিবৃতিতে তাঁরা এই দাবি জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সরকারি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে প্রতি শিক্ষাবর্ষেই আদিবাসী (ভর্তি বিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত উপজাতি) কোটায় নির্দিষ্টসংখ্যক শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পেয়ে থাকে। কিন্তু দীর্ঘদিন থেকেই আদিবাসী শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত আসনগুলোতেও অ-আদিবাসী শিক্ষার্থীদের নির্বাচন করা হয়ে আসছে। এতে প্রতিবছরই অনেক আদিবাসী শিক্ষার্থীই মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
আরো বলা হয়েছে, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার আবেদনের বিজ্ঞপ্তিতে এ বছর আদিবাসী (উপজাতি) কোটায় ৩৩ জন শিক্ষার্থীর আসন বরাদ্দ ছিল; যার মধ্যে পার্বত্য তিন জেলার আদিবাসীদের (কোড-৭১, ৭৩, ৭৫) জন্য ৯টি, পার্বত্য তিন জেলার অ-আদিবাসীদের (কোড-৭২, ৭৪, ৭৬) জন্য তিনটি, অন্যান্য জেলার আদিবাসীদের (কোড-৭৭) জন্য আটটি এবং রাঙামাটি মেডিক্যাল কলেজে ১৩টি। কিন্তু ভর্তি পরীক্ষার প্রকাশিত ফলাফলে আদিবাসী (উপজাতি) কোটায় অ-আদিবাসী শিক্ষার্থীদের ভর্তির জন্য নির্বাচন করা হয়েছে। সম্প্রতি প্রকাশিত ফলাফলে অন্যান্য জেলার আদিবাসীদের জন্য ৭৭ কোডে আটজন শিক্ষার্থীর মধ্যে পাঁচজনই অ-আদিবাসী নির্বাচিত করা হয়েছে। এ ছাড়া ৭১ কোডে একজন ও ৭২, ৭৪, ৭৬ কোডে অতিরিক্ত তিনজন অ-আদিবাসী শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে। এ ছাড়াও ৭৭ কোডের অপেক্ষমাণ তালিকায় পাঁচজনের মধ্যে দুজন অ-আদিবাসী (সিরিয়াল নম্বর ২ ও ৫) শিক্ষার্থী রয়েছে। এসব শিক্ষার্থীর কেউই সরকারের গেজেটভুক্ত ৫০টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর (আদিবাসী) সদস্য নয়।
বিবৃতিতে অবিলম্বে এসব রোলধারী অ-আদিবাসী শিক্ষার্থীকে ভর্তির তালিকা থেকে বাদ দিয়ে আদিবাসী শিক্ষার্থীদের ভর্তির জন্য নির্বাচিত করে তালিকা প্রকাশের দাবি জানানো হয়েছে।
ওই বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য, মানবাধিকারকর্মী অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য রামেন্দু মজুমদার, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ডা. সারওয়ার আলী, মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. নুর মোহাম্মদ তালুকদার, উন্নয়নকর্মী খুশী কবির, নারী নেত্রী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া কবির, বাংলাদেশ কৃষক সমিতির সভাপতি এস এম এ সবুর, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত ও অ্যাডভোকেট পারভেজ হাসেম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক এম এম আকাশ ও অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ, গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহিদুল বারী, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ সরেন, ইমারত নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, সংস্কৃতিকর্মী এ কে আজাদ ও অলক দাসগুপ্ত, আদিবাসী ফোরামের তথ্য ও প্রচার সম্পাদক দীপায়ন খীসা, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের বিভূতি ভূষণ মাহাতো এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (বিসিএল) সাধারণ সম্পাদক গৌতম শীল।