২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় মেধাক্রমে ৩ হাজার ৪৪৯ তম হয়ে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ ভর্তির সুযোগ পেয়েছে গোবিন্দ চন্দ্র। সে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার ইদিলপুর ইউনিয়নের রুগনাথপুর গ্রামের জেলে শ্রী কমল চন্দ্রের ছেলে। গোবিন্দ রংপুর মেডিকেল কলেজ কেন্দ্র থেকে পরীক্ষায় অংশ নেন। ভর্তি পরীক্ষায় ১০০ নম্বরের মধ্যে তিনি পেয়েছেন ৬৯ দশমিক ২৫ নম্বর। শিক্ষা জীবন জুড়েই আর্থিক দুশ্চিন্তা ছিল গোবিন্দ চন্দ্রের নিত্যসঙ্গী। মেধার জোরে সব বাধা জয় করে মেডিকেলে পড়ার সুযোগ পেলেও আবার সেই আর্থিক দুশ্চিন্তাই তাকে ঘিরে ধরেছে।
ভর্তির সুযোগ পেলেও বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে অর্থ। কোথায় পাবেন অর্থ, কে দেবেন অর্থের জোগান- এ শঙ্কায় দিন কাটছে দরিদ্র জেলে পরিবারের ছেলে গোবিন্দর। মেডিকেলে ভর্তি ও পড়ার খরচ জোগানোর সামর্থ্য তার বাবার নেই।
কমল চন্দ্রের তিন ছেলে মেয়ের মধ্যে বড় সন্তান গোবিন্দ চন্দ্র। সামান্য পুঁজিতে পলাশবাড়ী থেকে মাছ কিনে তা গ্রামের ছোট্ট বাজারে নিয়ে এসে বিক্রি করে কোন রকমে সংসার চলে। এরপর তিন সন্তানের লেখা পড়ার খরচ বহন করা তার পক্ষে অনেকটা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুন : দৈনিক শিক্ষাডটকম পরিবারের প্রিন্ট পত্রিকা ‘দৈনিক আমাদের বার্তা’
দরিদ্রদের কষাঘাতে জর্জরিত জেলে কমল চন্দ্রের জীর্ণ কুটিরে জন্ম নেয়া গোবিন্দ চন্দ্র এলাকায় অত্যন্ত মেধাবি ছাত্র হিসাবেই পরিচিত। সে মাদারহাট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও পলাশবাড়ী সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি জিপিএ- ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। নিজে টিউশনি করে কখনও অন্যের জমিতে কাজ করে এ পর্যন্ত লেখাপড়া করে এসেছে।
গোবিন্দ চন্দ্র দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, মেডিকেলে চান্স পাওয়ার পর এখন খুব চিন্তা হচ্ছে। মেডিকেলের বইয়ের দাম বেশি। সাতক্ষীরা পড়াশুনা করতে গিয়ে সেখানে থাকা-খাওয়াসহ অনেক খরচ হবে। এত টাকা আমার হতদরিদ্র বাবা কোথায় পাবে? কীভাবে পড়ালেখার খরচ চালাবো তা বুঝতে পারছি না। আমার বাবার পক্ষে সেই খরচ চালানো সম্ভব না।
দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব ও ফেসবুক পেইজটি ফলো করুন
তার বাবা কমল চন্দ্র দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, গরীবের জন্য সব সময় সব সুযোগ কাজে লাগে না। ছেলেকে মেডিকেল কলেজে ভর্তি করার সামর্থ আমার নেই। একদিন মাছ বিক্রি না করলে পেটে ভাত যায় না, এত টাকা আমি কোথায় পাবো। এদিকে ছেলের ডাক্তারি পড়ার খরচ চালনো তার পক্ষে সম্ভব নয় ভেবে বড়ই দুশ্চিন্তায় আছি। তিনি বিভিন্ন সংগঠন, সংস্থা বা সহৃদয় বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করেন।