প্রাইভেট পড়িয়ে ও বাবার সঙ্গে দিনমজুরি করে ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস পরীক্ষায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে মেধাবী শিক্ষার্থী শাহিনুর রহমান। সে সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া উপজেলার হাটিকুমরুল ইউনিয়নের পাটধারী গ্রামের দিনমজুর খলিলুর রহমান ও গৃহিনী সেলিনা খাতুনের ছেলে। মেডিকেলে চান্স ভর্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে শাহিনুরের।
জানা গেছে, বাড়ির ভিটে ছাড়া আর কোন জমি নেই তাদের। নেই বিকল্প কোন আয়ের উৎস। মজুরি করে ৫ সদস্যের পরিবার চালান খলিলুর রহমান। তার মেধাবী ছেলে শাহিনুর তার সঙ্গে দিনমজুরি করে এবং দুই-একটি প্রাইভেট পড়ায়। এই টাকা দিয়ে শাহিনুর এ যাবৎ তার নিজের ও দুই বোনের লেখাপড়ার খরচ চালিয়ে আসছে। তার বড় বোন সরকারি আকবর আলী কলেজে প্রাণীবিদ্যা বিভাগের ৩য় বর্ষের ছাত্রী। ছোট বোন ৭ম শ্রেণিতে পড়ছে। দিনমজুর বাবার পক্ষে এমনিতেই সংসার চালানো কষ্টকর। শত প্রতিকুলতার মধ্যে ডাক্তারি পড়ার স্বপ্ন পূরণ হলেও দারিদ্র্য তার স্বপ্ন বাস্তবায়নে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শাহিনুর রহমান গোল্ডেন জিপিএ ৫ পেয়ে উপজেলার পাগলা বোয়ালিয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জেএসসি এবং এসএসসি ও সরকারি আকবর আলী কলেজ থেকে গোল্ডেন জিপিএ ৫ পেয়ে এইচএসসি উত্তীর্ণ হয়েছে। মেধাবী এই শিক্ষার্থীর এখন মেডিকেল কলেজে ভর্তি হবার জন্য প্রয়োজনীয় টাকার কোন সংস্থান নেই। ভালো ফল করেও ডাক্তার হবার স্বপ্ন পূরণ হবে কিনা এমন অনিশ্চয়তায় ভুগছে শাহিনুর।
শাহিনুর রহমানের মা সেলিনা খাতুন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, ছোটবেলা থেকে সে ভালো ছাত্র। সব পরীক্ষায়ই সে প্রথম হয়েছে। টাকার অভাবে তাকে প্রাইভেট পড়াতে পারিনি। বাপের সাথে দিন মজুরি কইরা নিজের পড়ালেখা চালিয়েছে। সে এলাকার শিশুদর প্রাইভেট পড়িয়েছে। সেই টাকা দিয়া নিজে পড়েছে। এখন ডাক্তারি পড়ার টাকা কই পাবো। মেডিকেলে ভর্তি করতেও অনেক টাকার দরহার। একথা ভেবে অন্ধকার দেখছি।
শাহিনুর রহমান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানায়, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে ভর্তি হলে সে আর কোন কাজ করতে পারবে না। প্রাইভেট পড়ানো সম্ভব কিনা জানেনা সে। এ অবস্থায় কেমন করে পড়ালেখা করবে ভেবে পাচ্ছে না। তার উপর মেডিকেল কলেজে ভর্তি হতেও অনেক অর্থের প্রয়োজন। সবকিছু মিলিয়ে চরম অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে এখন দিন কাটছে।