সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. রুহুল কুদ্দুসের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে কর্মচারী নিয়ে, কর্মী ছাটাইসহ নানা অনিয়ম দুর্নীতি ও আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে। সোমবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এ সব অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেন কলেজের আউট সোর্সিয়ের মধ্যেমে নিয়োগ পেয়ে পরে চাকরিচ্যুত হওয়া এক কর্মচারী।
যশোর জেলার মনিরামপুর থানার লাউড়ি গ্রামের কে এম জি মোস্তফার ছেলে মেহেদী হাসান লিখিত বক্তব্যে বলেন, সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. রুহুল কুদ্দুস মোটা অঙ্কের আর্থিক সুবিধা নিয়ে ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ১ মার্চ আউটসোর্সিং নিয়োগ পাওয়া ২২ জন জনবলের মধ্যে ৬ জন কর্মীকে কোন কারণ ছাড়াই চাকরি থেকে ছাটাই করেছেন। অথচ স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মল্লিকা খাতুন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে ওই ২২ জন জনবল বহাল রেখে নতুন ১১ জনকে বিভিন্ন পদে নিয়োগ দেয়ার কথা বলা হয়েছে। তবুও তিনি সেই আদেশ অমান্য করে ডা. কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে ৭ সদস্য বিশিস্ট একটি নিয়োগ নির্বাচনী বোর্ড গঠন করে নিয়োগ প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করেন।
তিনি অভিযোগ করেন, এ বোর্ডের সদস্য ডা. সংকর প্রসাদ বিশ্বাস ও কামরুজ্জামান তাদের পছন্দের লোক নিয়োগ দিয়েছেন। সেটি সম্পূর্ণ অন্যায়। আমরা এই অন্যায়ের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। কেননা ২২জন সেবাকর্মীর সেবার মেয়াদ অর্থ বিভাগ থেকে এক বছর বৃদ্ধি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে যখন করোনা মহামারিতে সারা পৃথিবী অসহায় হয়ে পড়েছিলো তখনই সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজে নিয়োগপ্রাপ্ত আমরা ২২জন সেবাকর্মী লকডাউনের মধ্যে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করেছি। অথচ চলতি বছরের গত ২৯ জানুয়ারি কলেজের নোটিশ বোর্ডের ডা. রুহুল কুদ্দুস স্বাক্ষরিত চূড়ান্ত তালিকার মাধ্যমে আমরা জানতে পারি ওই ২২ জন সেবাকর্মী থেকে আমি ও নুরজাহানসহ ৬জন কর্মীকে বিনা অপরাধে বাদ দেয়া হয়েছে। আমাদের ৬ জনের ন্যায্য বেতন থেকে ৪ হাজার ১৩০ টাকা অন্যায়ভাবে কর্তন করতো ঠিকাদার আব্দুর রশিদ। এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করাই আমাদেরকে চাকরি থেকে বাদ দেয়া হয়। আমরা এ জঘন্য অপরাধের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
তিনি আরো বলেন, সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজটি আমাদের প্রাণের স্পন্দন। এটি সাতক্ষীরাবাসীর সম্পদ কিন্তু অত্যান্ত দুঃখের সাথে জানাচ্ছি আমাদের এই প্রিয় প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ ডা. রুহুল কুদ্দুস ও ডা. কামরুজ্জামানের মতো দুর্নীতিবাজদের জন্য কলেজটি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। কেননা নিয়োগের ক্ষেত্রে ডা. রুহুল কুদ্দুস চরম স্বেচ্ছাচারিতার আশ্রয় নিয়েছেন। তিনি চলতি বছরের গত ২৬ জানুয়ারি একটি নিয়োগে স্বাক্ষর করেছেন ঠিক তার ৩ দিন পর গত ২৯ জানুয়ারি ওই নিয়োগ বাতিল করে আরেকটি নিয়োগে স্বাক্ষর করেন, যেটি সম্পূর্ণ অন্যায়। অধ্যক্ষ ডা. রুহুল কুদ্দুস ওই নিয়োগে অবৈধ নিয়োগ বাণিজ্য করেছেন। সেটি সম্পন্ন করতে গিয়ে ঠিকাদার আব্দুর রশিদের কাছ থেকে পূবালী ব্যাংক খালিশপুর শাখার একটি অ্যাকাউন্ট থেকে (অ্যাকাউন্ট নং ০০০ ০০০ ০০০০১০৬) তিনটি চেকের মাধ্যমে মোট ১০ লাখ টাকা গ্রহণ করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জোর দাবি জানিয়ে চাকরিচ্যুতদের চাকরিতে বহাল করতে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. রুহুল কুদ্দুসের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘এ বিষয়ে কথা বলতে হলে অফিসে আসতে হবে। অফিসে আসেন যা জানতে চান জানানো হবে।’