মোটরসাইকেলের সিসি সীমা তুলে নেয়ার সুপারিশ - দৈনিকশিক্ষা

মোটরসাইকেলের সিসি সীমা তুলে নেয়ার সুপারিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক |

মোটরসাইকেলের ইঞ্জিনক্ষমতা বা সিসির সীমা কি থাকা উচিত? বিশ্বের কোথাও তো নেই, তাহলে বাংলাদেশে কেন থাকবে? এই প্রশ্ন মোটরসাইকেলপ্রেমীদের মুখে প্রায়েই শোনা যায়। আবার আরেক পক্ষের বক্তব্য হচ্ছে বাংলাদেশের রাস্তাঘাট এখনো উচ্চ সিসির মোটরসাইকেলের জন্য উপযুক্ত নয়। আবার মোটরসাইকেল উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোও সবাই এ বিষয়ে একমতও নয়। 

মোটরসাইকেল রয়েল এনফিল্ড বাংলাদেশে আসতে চায়—এই সংবাদে বিতর্কটা আবার নতুন করে ফিরে এসেছে। রয়েল এনফিল্ডকে আনতে চায় ইফাদ গ্রুপ। আর এর মধ্যেই মোটরসাইকেলপ্রেমীদের জন্য আশার সংবাদ নিয়ে এল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন এই সংস্থা বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি)। সংস্থাটি মোটরসাইকেলের ইঞ্জিনক্ষমতা বা সিসি সীমা তুলে দেওয়ার সুপারিশ করেছে। তারা বলেছে, মোটরসাইকেলের সিসির সঙ্গে গতির কোনো সম্পর্ক নেই। ৩০০ বা ৫০০ সিসির মোটরসাইকেলে সর্বোচ্চ যে গতি তোলা সম্ভব, ১৬৫ সিসি মোটরসাইকেলেও একই গতি তোলা যায়। বিশ্বের কোথায় এমন সিসি সীমা নেই।

মোটরসাইকেলের সিসি সীমা নিয়ে এই প্রতিবেদন সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে দিয়েছে ট্যারিফ কমিশন। মন্ত্রণালয় সূত্রে পাওয়া প্রতিবেদনে দেখা যায়, কমিশন সিসি সীমা তুলে নেওয়ার ক্ষেত্রে স্থানীয় শিল্পকে সুরক্ষা দিতে বাড়তি সিসির মোটরসাইকেল নিবন্ধনে বাড়তি ফি নির্ধারণ করার সুপারিশ করেছে।

ট্যারিফ কমিশন প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে মোটরসাইকেল খাতের দুই সংগঠনের একটি মোটরসাইকেল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে। সংগঠনটির আবেদনের পর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক সভায় সিসি সীমা তোলা নিয়ে ট্যারিফ কমিশনকে প্রতিবেদন তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়। দেশে ১৬৫ সিসির ওপরে মোটরসাইকেল আমদানি ও বাজারে ছাড়া নিষিদ্ধ। তবে রানার অটোমোবাইলসকে সরকার ৫০০ সিসির মোটরসাইকেল তৈরি করে রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে।

ট্যারিফ কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এর আগে দেশে মোটরসাইকেলের সিসি সীমা ছিল ১৫৫। পরে ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে সিসি সীমা ১৬৫-তে উন্নীত করা হয়। পুলিশের ক্ষেত্রে সিসি সীমা কার্যকর হয় না।

ট্যারিফ কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারের মোটরসাইকেলশিল্প উন্নয়ন নীতি অনুযায়ী ২০২৭ সালের মধ্যে দেশে ১০ লাখ মোটরসাইকেল উৎপাদনের লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে। কমিশন মনে করে, স্থানীয় মোটরসাইকেলশিল্পের বিকাশে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ইঞ্জিনক্ষমতার সীমা তুলে নেওয়া দরকার। তবে স্থানীয় শিল্পের কথা বিবেচনা করে আপাতত ৩৫০ সিসি পর্যন্ত অনুমোদন দেওয়া যায়। তবে তা ৫০০ সিসি করা এবং একপর্যায়ে সীমা তুলে নেওয়া যেতে পারে।

কমিশন এ-ও বলেছে যে মোটরসাইকেল উৎপাদনকারীর যন্ত্রাংশ সরবরাহকারী বা ভেন্ডর এক বা একাধিক যন্ত্রাংশ তৈরি করে মূল উৎপাদনকারীকে সহায়তা করে। মূল উৎপাদনকারীর বাজার সম্প্রসারিত হলে ভেন্ডরের বাজারও বড় হয়। স্থানীয় বাজারে মোটরসাইকেলের সিসি সীমা নির্ধারিত থাকায় বাজার নিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়ছে। ফলে ভেন্ডর নিরুৎসাহিত হয়। স্থানীয় ভেন্ডারদের আন্তর্জাতিক বাজারে স্পেয়ার পার্টস উৎপাদন ও রপ্তানির ক্ষেত্রে সিসি সীমা অন্তরায় হিসেবে কাজ করছে।

কমিশনের প্রতিবেদনে উঠে আসে যে সিসি সীমা তুলে নেওয়া নিয়ে দেশের মোটরসাইকেল কোম্পানিগুলো দুটি ভাগে বিভক্ত। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, কোম্পানিগুলোর কারও কারও বর্তমানে ১৬৫ সিসি পর্যন্ত মোটরসাইকেল উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে। এখন যদি হঠাৎ বাড়তি সিসির মোটরসাইকেল চালানোর সুযোগ দেওয়া হয়, তাহলে তাদের বিনিয়োগ ক্ষতির মুখে পড়বে।

তিনটি কোম্পানির লিখিত মতামত অনুযায়ী, জাপানের সুজুকি ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল উৎপাদনকারী র‌্যানকন মোটরবাইকস লিমিডেট সিসি সীমা তুলে দেওয়ার পক্ষে। রানার অটোমোবাইলসও এই সীমা তুলে দেওয়ার পক্ষে মতামত দিয়েছে। জাপানের আরেক ব্র্যান্ড কাওয়াসাকি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে গত ৫ ডিসেম্বর একটি চিঠি দিয়ে বলেছে, তারা বাংলাদেশে ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে চায়। এ জন্য সিসি সীমা ২৫০-এ উন্নীত করার আবেদন করছে তারা।

অবশ্য পক্ষে নয় হিরো। এ ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল উৎপাদনকারী এইচএমসিএল নিলয় বাংলাদেশ লিমিটেড বলেছে, উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ইঞ্জিনবিশিষ্ট মোটরসাইকেল চালানোর পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা দেশে বলবৎ নেই।

অবশ্য কেউ কেউ মনে করেন, মোটরসাইকেলের সিসি সীমা তুলে নেওয়ার ক্ষেত্রে স্থানীয় বিনিয়োগকে সুরক্ষা দিলে সবার জন্য ভালো হবে। টিভিএস ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল উৎপাদন ও বিপণনকারী টিভিএস অটো বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) বিপ্লব কুমার রায় বলেন, সিসি সীমা তুলে নেওয়া যেতে পারে। তবে এ জন্য স্থানীয় বিনিয়োগকে পর্যাপ্ত সুরক্ষা দিতে হবে। সেটা হতে পারে বাড়তি সিসির ওপর বেশি কর আরোপ করে। নিবন্ধনে বাড়তি ফিও ধার্য করতে হবে।

চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও - dainik shiksha স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে পরীক্ষার আগেই হবু শিক্ষকদের হাতে পৌঁছে যায় উত্তরপত্র: ডিবি - dainik shiksha পরীক্ষার আগেই হবু শিক্ষকদের হাতে পৌঁছে যায় উত্তরপত্র: ডিবি দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল - dainik shiksha ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ - dainik shiksha বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস - dainik shiksha এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.011404991149902