রাবিতে অকেজোর পথে গবেষণাগারের দামি যন্ত্রপাতি - দৈনিকশিক্ষা

রাবিতে অকেজোর পথে গবেষণাগারের দামি যন্ত্রপাতি

রাবি প্রতিনিধি |
করোনার পর থেকে প্রায় এক বছরের বেশি খোলা হয়নি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ গবেষণাগার। ফলে অকেজো হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে এসব গবেষণাগারে থাকা কোটি কোটি টাকার দামি যন্ত্রপাতি। একইসঙ্গে কার্যকারিতা হারাতে পারে রাসায়নিক দ্রব্যগুলো।
 
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিজ্ঞান অনুষদের বিভাগগুলোতে প্রায় ৬০টি, পূর্বের জীব ও ভূবিজ্ঞান অনুষদ ভুক্ত বিভাগগুলোতে প্রায় ৩০টি, কৃষি অনুষদভুক্ত বিভাগগুলোতে প্রায় ১৫ টি গবেষণাগার আছে। এই হিসেবে শুধু বিজ্ঞান বিষয়ক বিভাগগুলোতেই গবেষণাগারের সংখ্যা শতাধিক। এর মধ্যে মাত্র ৮ থেকে ১০টি গবেষণাগার নিয়মিত খোলা হয়।
 
 
শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা জানান, বন্ধ থাকা এসব ল্যাবে এইচপিএলসি, ব্লাড এনালাইজার, পিসিআর, মাইনাস ৮০ ডিগ্রি রেফ্রিজারেটর, লায়োফিলাইজার নামক স্পর্শকাতর কিছু বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি উল্লেখযোগ্য। যেগুলো অকেজো হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। এছাড়া প্রতি বিভাগেই কমবেশি ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রপাতি আছে। এর মধ্যে বড় অংশ কম্পিউটারও অকেজো হতে পারে।
 
বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মনজুর হোসেন বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা গবেষণাগারের অন্যতম শক্তি। তারা না আসায় গবেষণার ধারাবাহিকতা ব্যাহত হয়ে গেছে। এ কারণে অনেক স্পর্শকাতর যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। বিশেষ করে, কম্পিউটারসহ যত ইলেক্ট্রনিকসের লাখ লাখ টাকার যত আধুনিক গবেষণা যন্ত্রপাতি অচল অবস্থায় আছে তা প্রায় এক বছরের বেশি। সেগুলো নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।’
শুধু যন্ত্রপাতি নয়, গবেষণাগারগুলোর রাসায়নিক দ্রব্যও কার্যকারিতা হারাবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষকরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. ইয়ামিন হোসেন বলেন, ‘অনুপ্রাণ বিষয়ে গবেষণার জন্য আরএনএ, ডিএনএ সম্পর্কিত কিছু রাসায়নিক দ্রব্য রয়েছে। এগুলোর মেয়াদ ৩ মাস থেকে সর্বোচ্চ এক বছর পর্যন্ত থাকে। দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকার কারণে এগুলোর অধিকাংশই কার্যকারিতা হারাবে। অন্যদিকে মেয়াদউত্তীর্ণ হওয়ায় গবেষণার সঠিক ফলাফল পাওয়ার ক্ষেত্রে বাধা তৈরি করবে।
 
কোটি টাকা ক্ষতির ঝুঁকি থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রাশাসনের উদ্যোগ নেই বলে জানাচ্ছেন শিক্ষকরা।
 
বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকীব বলেন, ‘বিজ্ঞান বিভাগের ল্যাবগুলো ফুল ক্যাপাসিটি নিয়ে চলছে না। ৩০ শতাংশ ক্যাপাসিটিতে কিছু ল্যাব চলছে।’
 
তিনি আরও বলেন, ‘যন্ত্রপাতিগুলো চালু অবস্থায় না রাখা গেলে, দীর্ঘদিন যাবত যদি বন্ধ থাকে এটি যন্ত্রপাতির জন্য ভালো নয়। যন্ত্রপাতি যদি ৬ মাস বন্ধ থাকে তাহলে খারাপ পরিস্থিতি হতে পারে। এগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদ, সম্পত্তি। সেগুলো যথাযথ ব্যবস্থাপনা করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও বিভাগগুলোর পদক্ষেপ ও সঠিক পরিকল্পনা দরকার। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এগুলো রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সেরকম কোনো চিন্তা চোখে পড়েনি।’
 
ঝুঁকি কমাতে প্রশাসনের নির্দেশনা বা সামগ্রিক উদ্যোগ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আব্দু সালাম বলেন, ‘বিভাগগুলোর অধীনে শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে গবেষণাগারগুলোতে গবেষণার কাজ পরিচালিত হয়। তাই গবেষণাগার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব বিভাগগুলোর। রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশনা নেই।’

দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল  SUBSCRIBE  করতে ক্লিক করুন।

শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.010200977325439