শিক্ষক নির্যাতনে অভিযুক্ত শিক্ষা কর্মকর্তার শাস্তির দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় নেতারা। প্রধান শিক্ষক মনোজ কান্তি বিশ্বাসকে নির্যাতনে অভিযুক্ত গোপালগঞ্জ সদরের সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা গৌতম চন্দ্র রায় ও অভিযুক্ত ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকে শাস্তির আওতায় আনার দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণা করছে সংগঠনটি। একইসঙ্গে প্রধান শিক্ষক মনোজ কান্তি বিশ্বাসকে লাথি দেওয়া, মারধর ও লাঞ্ছিত করার ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন নেতারা।
শিক্ষক নির্যাতনে অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা গৌতম চন্দ্র রায় ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে শাস্তির দাবিতে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে কর্মসূচি ঘোষণা করবেন সমিতির নেতারা। তারা বলছেন, সংবাদ সম্মেলনে আগামী ১৭ নভেম্বর সব উপজেলায় সমিতির পক্ষ থেকে মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। আর অভিযুক্ত শিক্ষা কর্মকর্তার শাস্তি না হলে আগামী ১ ডিসেম্বর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অভিমুখে পদযাত্রার ঘোষণা আসতে পারে।
গতকাল মঙ্গলবার প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে সমিতির সভাপতি আতিকুর রহমান আতিক ও সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান অবিলম্বে নির্যাতিত শিক্ষক মনোজ কান্তির বরখাস্তাদেশ প্রত্যাহার ও অভিযুক্ত এইউইও এবং ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির শাস্তি দাবি জানান।
নেতারা বলেন, গোপালগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার ২৮ নং উরফি বড়বাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরিদর্শনে এসে উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার (এইউইও) গৌতম চন্দ্র রায় ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনোজ কান্তি বিশ্বাসকে শারিরীকভাবে মারধর ও লাঞ্ছিত করার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি।
নেতারা আরও বলেন, প্রধান শিক্ষক মনোজ কান্তি বিশ্বাস যদি কোনো নিয়ম-শৃঙ্খলা অমান্য করে থাকেন তাহলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে পারতেন। কিন্ত তা না করে উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার ও স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি প্রধান শিক্ষকে শারিরীকভাবে নির্যাতন করেন। এটা তারা করতে পারেন না। এ ঘটনা পুরো শিক্ষক সমাজকেই লাঞ্ছিত করার সমতুল্য। আমরা বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে অবিলম্বে শিক্ষা কর্মকর্তা ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকে বরখাস্ত ও শাস্তির দাবি জানাই।
বিবৃতিতে বলা হয়, কর্মকর্তা এবং ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকে বরখাস্ত ও শাস্তির দাবিতে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণার লক্ষ্যে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) সকালে ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত থাকবেন।
এ প্রসঙ্গে সমিতির সভাপতি আতিকুর রহমান আতিক গতকাল মঙ্গলবার দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, শিক্ষককে একজন শিক্ষা কর্মকর্তা লাথি মেরেছে। আমরা তা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারি না। আমরা অভিযুক্ত কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির শাস্তি দাবি করবো। অভিযুক্ত কর্মকর্তার শাস্তি না হলে আগামী ১৭ নভেম্বর সব উপজেলায় সমিতির পক্ষ থেকে মানববন্ধন কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হবে। আর চলতি মাসে যদি অভিযুক্ত কর্মকর্তার শাস্তি না দেওয়া হয় তাহলে আগামী ১ ডিসেম্বর আমরা জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করবো। মানববন্ধন শেষ শিক্ষক নির্যাতনে অভিযুক্ত কর্মকর্তার শাস্তির দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অভিমুখে শিক্ষক সমিতি পদযাত্রা করবে।