ময়মনসিংহের গফরগাঁও সরকারি কলেজে কর্মরত বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত শিক্ষকদের ওপর হামলা ও অধ্যক্ষসহ শিক্ষকদের লাঞ্ছনার প্রতিবাদে বিভিন্ন সরকারি কলেজে কর্মবিরতি ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির ডাকে গতকাল রোববার দেশব্যাপী সরকারি কলেজে এই কর্মসূচি পালিত হয়। কর্মসূচিতে দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান শিক্ষকরা।
জানা যায়, গত ৮ জুন গফরগাঁও সরকারি কলেজে শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণ ও সেশন ফি বাবদ ৫ হাজার ৬০০ টাকা নেয়া হচ্ছিল। সেখানে বেশি ফি নেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে কয়েকজন শিক্ষককে মারধর ও গালিগালাজ করা হয়। স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পরিকল্পিতভাবে এ কাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। হামলার প্রতিবাদে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি দেশব্যাপী সব সরকারি কলেজে কর্মবিরতি ও মানবন্ধনের ডাক দেয়।
রোববাবের প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরে কর্মরত শিক্ষকরা। এছাড়া রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী ঢাকা কলেজ, তিতুমীর কলেজ, ফরিদপুরের সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজ, ময়মনসিংহের সরকারি আনন্দ মোহন কলেজ, যশোর এম এম কলেজে, লক্ষ্মীপুর সরকারি মহিলা কলেজ, নীলফামারী সরকারি মহিলা কলেজসহ দেশের বিভিন্ন সরকারি কলেজের শিক্ষকরা।
গফরগাঁও সরকারি কলেজে কলেজের ওই ঘটনার পর কলেজের অধ্যক্ষ কাজী ফারুক গফরগাঁও থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
ঢাকা :
গতকাল রোববার সকাল ১১টা থেকে বেলা ১২ টা পর্যন্ত ঘণ্টাব্যাপী কর্মবিরতি ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন ঢাকা কলেজের শিক্ষকরা। বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি ঢাকা কলেজ ইউনিটের আয়োজনে এই কর্মবিরতিতে অংশ নেন ঢাকা কলেজ অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) ও ইউনিটের সভাপতি অধ্যাপক এ টি এম মইনুল হোসেন, শিক্ষক পরিষদ সম্পাদক ড. মো. আব্দুল কুদ্দুস সিকদার, ইউনিট সম্পাদক সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. দিললুর রহমান, যুগ্ম-সম্পাদক পরিসংখ্যান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আলতাফ হোসেন, ইসলামের ইতিহাস, সংস্কৃতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মহসীন উদ্দিন ফিরোজ এবং শিক্ষক পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সমিতির কেন্দ্রীয় নেতা মো. নাসির উদ্দিনসহ অনেকে।
তিতুমীর কলেজে আয়োজিত কর্মসূচিতে অধ্যক্ষ অধ্যাপক তালাত সুলতানা বলেন, মানুষ গড়ার কারিগর, যারা জাতির মেরুদণ্ড তাদের ওপর এমন সন্ত্রাসী হামলা অত্যন্ত বেদনাদায়ক।
ময়মনসিংহ :
ময়মনসিংহের সরকারি আনন্দ মোহন কলেজ, মুমিনুন্নিসা সরকারি মহিলা কলেজ, ময়মনসিংহ সরকারি কলেজ, টিচার্স ট্রেনিং কলেজ ইউনিট পৃথক পৃথক কর্মসূচি পালন করে।
সরকারি আনন্দ মোহন কলেজের মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন কলেজের অধ্যক্ষ ও ইউনিটের সভাপতি অধ্যাপক মো. আমান উল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শাহ মো. মাইনুদ্দিন, উপাধ্যক্ষ নুরুল আফসার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তোফায়েল আহমেদ, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক আসিফ উল্লাহ, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফিরোজ আল মাহমুদ, সহযোগী অধ্যাপক উজ্জল চক্রবর্তী, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আতিকুর রহমান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক স্বপন কুমার ধর, দর্শন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আশরাফুজ্জামান, গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আজহারুল ইসলাম, বিসিএস সাধারণ শিক্ষক সমিতির সদস্য রাসেল আহমেদ সুমনসহ অনেকে।
ফরিদপুর :
সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজের সামনে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা সমিতির যুগ্ম মহাসচিব অধ্যক্ষ কাজী গোলাম মোস্তফা, ইউনিট সভাপতি উপাধ্যক্ষ মো. মনজুরুল ইসলাম, ইউনিট সম্পাদক উজ্বল কুমার রায়, সহযোগী অধ্যপক মো. খালিদুজ্জামান। বক্তারা অবিলম্বে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে দ্রুত শাস্তির দাবি জানানোর পাশাপাশি শিক্ষকদের কর্মস্থলে নিরাপত্তা জোরদার করার জোর দাবি জানান।
নীলফামারী :
নীলফামারী সরকারি মহিলা কলেজে আয়োজিত কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন কলেজ ইউনিটের সভাপতি ও অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. ওবায়দুল আনোয়ার, সহসভাপতি উপাধ্যক্ষ প্রফেসর দিলরুবা বানু, সম্পাদক জুয়েল মিয়া প্রমুখ।
লক্ষ্মীপুর :
লক্ষ্মীপুর সরকারি মহিলা কলেজের সামনে আয়োজিত কর্মসূচিতে অংশ নেন
সরকারি মহিলা কলেজ ইউনিটের সভাপতি ও কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর খন্দকার ইউসুফ হোসেন, সহ-সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক মো. আবুল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ও প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোঃ ইউসুফ, একই কলেজের শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন খালেদ প্রমুখ।
যশোর :
যশোরের সরকারি এম এম কলেজের কর্মসূচিতে অংশ নেন বিসিএস সাধারণ শিক্ষক সমিতি যশোর এম এম কলেজ ইউনিটের সভাপতি অধ্যক্ষ প্রফেসর মর্জিনা আক্তার, সংগঠনের কেন্দ্রীয় সদস্য মহসীন উদ্দীন, এম এম কলেজ ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক ভূগোলের সহযোগী অধ্যাপক নিতীশ চন্দ্র কর্মকারসহ অনেকে। এছাড়া যশোর সরকারি মহিলা কলেজ এবং যশোর শিক্ষা বোর্ডেও এক ঘণ্টা কর্মবিরতি পালিত হয়।