শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করে বিপাকে জাবি ছাত্রী - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করে বিপাকে জাবি ছাত্রী

জাবি প্রতিনিধি |

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সানওয়ার সিরাজের বিরুদ্ধে গত বছর সেপ্টেম্বরে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ করেন একই বিভাগের এক ছাত্রী। ৬০ দিনে যৌন নিপীড়নের অভিযোগের সুরহা করার নিয়ম থাকলেও ১ বছরেরও বেশি সময় এ অভিযোগ ঝুলে আছে। তবে অভিযোগ করার পর বিপদে রয়েছেন ওই ছাত্রী। স্বামীর প্ররোচনায় অভিযোগ দিয়ে উল্টো স্বামীই তার ব্যক্তিগত ছবি, অডিও-ভিডিও ছড়িয়ে কুৎসা রটিয়ে চরিত্র হননের চেষ্টা করছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। ওই ছাত্রী তার বিপাকে পড়ার কথা জানিয়ে স্বামীর নির্যাতন থেকে মুক্তি কামনা করেন।

জানা যায়, গত বছর ১৯ সেপ্টেম্বর সরকার ও রজনীতি বিভাগের স্নাতকোত্তরের এক ছাত্রী বিভাগের শিক্ষক সানওয়ার সিরাজের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নসহ তিনটি অভিযোগের বিচার চেয়ে বিভাগের সভাপতির কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়নবিরোধী সেলে হস্তান্তর করা হয়। অভিযোগের তদন্তে সানওয়ারের কয়েক বার জবানবন্দি নেয়া হলেও এখন পর্যন্ত ওই ছাত্রীর জবানবন্দি নেয়া হয়নি।

অনুষ্ঠানিক জবানবন্দি দেয়ার বিষয়ে ওই ছাত্রী  বলেন, আমি একবার সেলে দেখা করে সময় নিয়েছিলাম। কিন্তু পরে আর সেলের সঙ্গে দেখা করিনি। পরে সেলের সঙ্গে আর দেখা না করার কারণ বর্ণনা করেন ওই ছাত্রী। তিনি বলেন, গত বছর সেপ্টেম্বরের ১ তারিখে জাবির সাবেক প্রক্টর ও চাকরিচ্যুত অধ্যাপক আলী আকন্দ মামুন আমাকে বিয়ে করে। তারপর সে জিম্মি করে আমাকে দিয়ে সানওয়ার সিরাজের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ দায়ের করায়। এরপর সে আমার ওপর মানসিক নির্যাতন শুরু করলে আমি আত্মহত্যার চেষ্টা করি। এরপরও সে আমার ওপর অত্যাচার অব্যাহত রাখলে পরের মাসে আমি তাকে ডিভোর্স (তালাক) দেই। পরে মামুন আকন্দ চাকরি ফিরে পেতে ভিসিপন্থী সানওয়ারের সঙ্গে হাত মেলায়।

ওই ছাত্রী আরও বলেন, মামুন আকন্দ চাকরি ফিরে পাওয়ার জন্য সানওয়ারকে কিছু বানানো স্ক্রিনশট ও অডিও সরবরাহ করে। যেগুলো আমাকে দিয়ে উনি (মামুন আকন্দ) সেলে জমা করিয়েছিল। আমি মামুন আকন্দকে তালাক দেয়ার পরে আমার কিছু গোপন ছবি আর অডিও-ভিডিও ছড়িয়ে দেয়।

তবে কাছে মুখ খোলার আগে মামুন আকন্দের সঙ্গে ওই ছাত্রীর বিবাহের বিষয়টি গোপন ছিল বলেও জানান তিনি। মামুন আকন্দের সঙ্গে দেন-দরবারের বিষয়ে সানওয়ার সিরাজ বলেন, ‘ওই সময় অপরিচিত একটা নম্বর থেকে আমাকে সাহায্য করতে পারবে বলে একজন মেসেজ দেয়। পরে তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে সে আমাকে কিছু বানানো স্ক্রিনশট আর অডিও দেয়। বলে এগুলো তদন্ত সেলে জমা দিলে আমার উপকার হবে, এগুলোই নাকি ওই ছাত্রী সেলে জমা দিয়েছে। কিন্তু তিনি শর্ত দেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তাব্যক্তিদের সমঝোতায় ভিসিকে বলে তার চাকরি ফিরিয়ে দিতে হবে। এরপর তার সঙ্গে আমি আর যোগাযোগ করিনি। এ সাহায্যকারী কে ছিল- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি জাবির সাবেক প্রক্টর ও বর্তমানে চাকরিচ্যুত এক অধ্যাপক বলে উল্লেখ করেন।

জানা যায়, বিএনপির আমলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ছিলেন প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী আকন্দ মামুন। আচরণবিধি ভঙ্গের দায়ে ২০১৪ সালে সিন্ডিকেট স্থায়ীভাবে তাকে চাকরিচ্যুত করে। এসব অভিযোগের বিষয়ে মোহাম্মদ আলী আকন্দ মামুনের মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি রিসিভ করেননি। তবে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমি এ বিষয়ে কথা বলতে ইচ্ছুক নই। আর আমি সাংবাদিকদের সঙ্গে তো কোনো কথাই বলব না।

যৌন নিপীড়নবিরোধী সেলের প্রধান অধ্যাপক রাশেদা আখতার  বলেন, আমাদের তদন্তের কয়েকটি ধাপ এখনও বাকি আছে। সেলে আসা যে কোনো অভিযোগ ৬০ কার্য দিবসের মধ্যে শেষ করার নিয়ম থাকলেও এ অভিযোগটি ১ বছর পার হওয়া প্রসঙ্গে রাশেদা আখতার বলেন, করোনার কারণে তদন্ত কমিটি কাজ করতে পারছে না। এজন্য সময় লাগছে।

শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0070750713348389