বড় জটিলতায় পড়েছে দেশের সবচেয়ে বড় ক্যাডার সার্ভিস ‘বিসিএস সাধারণ শিক্ষা’ ক্যাডারের পদোন্নতি। সহকারী অধ্যাপক থেকে সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতির যোগ্য তিন হাজার ২৫৪ জনের তালিকা করা হলেও শূন্যপদের ভিত্তিতে পদোন্নতির সুযোগ রয়েছে মাত্র ৯৫৮ জনের। এই সুযোগে সরকারবিরোধী একটি পক্ষ সরকারি কলেজের শিক্ষকদের করোনার মধ্যেও আন্দোলনের মাঠে নামাতে চেষ্টা করছে। এমনকি শিক্ষা ক্যাডারের সদস্যদের সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধ করে তুলছে। আজ ২রা জুন দৈনিক কালেরকন্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনটির বিস্তারিত :
গত রবিবার রাজধানীর পল্টনের মেহেরবা প্লাজায় বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির অফিসে প্রায় তিন ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক হয়। বৈঠকে নেতৃত্ব দেন সমিতির সাবেক মহাসচিব এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরী। সেখানে ২২ থেকে ২৬ ব্যাচের প্রায় ৬০ থেকে ৭০ জন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। কয়েকজন কর্মকর্তা বৈঠকের বিষয়বস্তু না জেনে উপস্থিত হয়ে বিব্রত হন।
আরও পড়ুন : দৈনিক শিক্ষাডটকম পরিবারের প্রিন্ট পত্রিকা ‘দৈনিক আমাদের বার্তা’
বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গত রবিবার রাতেই তাঁরা মাউশি অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের বাসায় সাক্ষাৎ করে ব্যাচভিত্তিক পদোন্নতি দাবি করেন। এখন তাঁরা শিক্ষামন্ত্রীর সাক্ষাতের অপেক্ষায় রয়েছেন।
জানা যায়, অন্য সব ক্যাডারে ব্যাচভিত্তিক পদোন্নতি দেওয়া হলেও শিক্ষা ক্যাডারে হয় বিষয়ভিত্তিক। সে হিসাবে ২২ থেকে ২৬ ব্যাচের তিন হাজার ২৫৪ জন সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতির যোগ্য রয়েছেন। কিন্তু সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বিভাগীয় পদোন্নতিসভার বৈঠকে জনপ্রশাসন ও অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে নিয়মানুসারে বিষয়ভিত্তিক পদোন্নতির সুপারিশ করা হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ও মনে করছে, করোনার মধ্যে যেখানে প্রায় দেড় বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ, সেখানে তিন হাজার শিক্ষকের পদোন্নতির দাবি তোলাই অবান্তর। সবাইকে পদোন্নতি দিতে হলে প্রায় দুই হাজার সুপারনিউমারি পদ সৃষ্টি করতে হবে, যা সম্ভব নয়।
দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব ও ফেসবুক পেইজটি ফলো করুন
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শিক্ষামন্ত্রী, সচিবসহ প্রায় সবাই শূন্য ৯৫৮ পদে পদোন্নতি দেওয়ার পক্ষে। অথচ শিক্ষা প্রশাসনের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদে বসে শাহেদুল খবির চৌধুরী সরকারের সিদ্ধান্তের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। এমনকি তিনি বৈঠক করে শিক্ষকদের উসকে দিচ্ছেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রীর সম্মতিতে ৩০২টি জাতীয়করণ করা কলেজের শিক্ষকদের চাকরিবিধি অনুুযায়ী ক্যাডার পদে ন্যস্ত করতে চাইলে এর বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন শাহেদুল খবির চৌধুরী। তিনি সরকারবিরোধী পক্ষকে নিয়ে ‘নো বিসিএস নো ক্যাডার’ আন্দোলন গড়ে তোলার পাশাপাশি সরকারের বিরুদ্ধে মামলাও করেছিলেন। অথচ এখনো তিনি শিক্ষা প্রশাসনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদে বসে আছেন।
তবে এ ব্যাপারে কথা বলতে গতকাল বিকেলে শাহেদুল খবির চৌধুরীকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি তা ধরেননি। বৈঠকে উপস্থিত একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির সদস্যসচিব হিসেবে শাহেদুল খবির চৌধুরী আমাদের সভায় ডেকেছিলেন। আমরা বলেছি, পদোন্নতি দিতে সরকারের কোনো আর্থিক সংশ্লেষের প্রয়োজন নেই। কারণ, আমরা ২০১৫ সাল থেকে পঞ্চম গ্রেড পেয়ে আসছি। যেহেতু তিন বছর ধরে আমাদের পদোন্নতি হয় না তাই অভিভাবক হিসেবে মন্ত্রীর কাছে এ ব্যাপারে দাবি তোলা যায়। তবে সরকার যদি শূন্যপদে পদোন্নতির সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে আমরা তা মেনে নেব।’