শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ধরা পড়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কোটিপতি পিয়ন মো: জুয়েল। বরখাস্ত করা হলেও শিক্ষা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে জুয়েলে বিরুদ্ধে মামলা বা গ্রেফতারের জন্য কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি আজ রোববার পর্যন্ত।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষা অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, শুধু স্বাক্ষর জালিয়াতিই নয়, বদলি, ভর্তি, এমপিওসহ নানা অপকর্মের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা কামিয়েছে জুয়েল। ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দ থেকে মহাপরিচালকদের ঘনিষ্ঠ সে। মহাপরিচালকের খাস পিয়ন হওয়ায় বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত সরকারি কলেজ ও স্কুল শিক্ষকদের অনেকেই পাত্তা পেতেন না জুয়েলের কাছে। বেসরকারি শিক্ষকদের তো কথাই নেই।
উপমন্ত্রীর স্বাক্ষর জালিয়াতি করে সরকারি হাইস্কুলের শিক্ষক বদলির ঘটনায় জুয়েলসহ শিক্ষা ভবনের সংশ্লিষ্টদের ওপর ক্ষুব্ধ হয়েছেন উপমন্ত্রী। জুয়েলের যাবতীয় জালিয়াতির তদন্ত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভিস্টেগেশনকে (পিবিআই) দেয়া হবে বলে জানা গেছে। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।
আরও পড়ুন: শিক্ষা উপমন্ত্রীর সই জাল করে ধরা শিক্ষা ভবনের কোটিপতি পিওন জুয়েল
এদিকে জুয়েলকে রক্ষায় মরিয়া বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত সরকারি কলেজ ও স্কুলের কয়েকজন শিক্ষক।
দৈনিক শিক্ষার অনুসন্ধানে জানা যায়, জুয়েলের বিরুদ্ধে সরকারি হাইস্কুলের শিক্ষক ও কর্মচারী বদলি, সদ্য সরকারিকৃত স্কুল শিক্ষকদের সনদ ও তথ্য বদলে দেয়ার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। শিক্ষা অধিদপ্তরের নিয়োগ বাণিজ্যে অপর কর্মচারী সৈয়দ লিয়াকতের সাথে সিন্ডিকেট করে বাণিজ্য করে আসছে জুয়েল। জালিয়াতি করে এমপিও পাইয়ে দেয়া, টাকার বিনিময়ে ফাইল গায়েব করাসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে।
জানা যায়, মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার গোসাইরচরে জন্ম জুয়েলে। তার পরিবারের অনেকেই পেশাদার তদবিরবাজ ও দালাল। আর দালালি করেই ফ্ল্যাট কিনেছে মোহাম্মদপুরে। জুয়েলের বাবা ধানমন্ডি গভ: বয়েজের বেসরকারি শাখার পিওন।
জুয়েলে কোটি টাকা ফ্ল্যাট থাকলেও স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ধানমন্ডি গভ: বয়েজ স্কুলের ফিডার শাখার দুইরুম নিয়ে অবৈধভাবে থাকছে।
জুয়েলের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মহাপরিচালক ড. সৈয়দ গোলাম ফারুকের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।