শিক্ষাক্রমে আসুক সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষাক্রমে আসুক সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

মো. সিদ্দিকুর রহমান |

অসংখ্য কিন্ডারগার্টেনসহ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষাক্রমের প্রশিক্ষণের আওতামুক্ত। এ ছাড়াও  ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১ম শ্রেণির ধারাবাহিক মূল্যায়নের ছোঁয়া পায়নি, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ব্যতিরেকে কিন্ডারগার্টেন, সরকারি-বেসরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের প্রাথমিক শাখা। ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দে ধারাবাহিক মূল্যায়ন চালু হতে যাচ্ছে ২য় শ্রেণি, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দে তৃতীয় শ্রেণি। নব শিক্ষাক্রম সফলভাবে বাস্তবায়ন হলে দূর হবে মুখস্থ করার প্রবণতা, নোট-গাইড, কোচিং এর ব্যাপকতা। শিক্ষার্থীর মাঝে জাগ্রত হবে প্রতিযোগিতার পরিবর্তে সহযোগিতা। প্রচলিত পরীক্ষা পদ্ধতি অনেকটা হাতুড়ে ডাক্তারের চিকিৎসার মতো। প্রশ্ন প্রণয়নকারী তার ইচ্ছামত কতিপয় প্রশ্নের মাধ্যমে মেধা যাচাই করে থাকেন। এতে প্রকৃত মেধা বা জ্ঞান যাচাই সম্ভব হয়ে উঠেনা। প্রশিক্ষণ ছাড়া  বিদ্যালয়গুলো পূর্বের ন্যায় পরীক্ষার মাধ্যমে ফলাফল  নির্ধারণ করেছেন।

পাশাপাশি নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে বিরূপ জনমত সৃষ্টির অপপ্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে ১ম, ২য় ও তৃতীয় শ্রেণির মূল্যায়নকে অবজ্ঞা করে পরীক্ষা পদ্ধতির প্রচার জোরদার করে যাচ্ছেন। প্রাথমিক শিক্ষক ঘটতি বা তাদের পাঠাদান বর্হিভূত কাজে ব্যস্ত রাখলে ধারাবাহিক মূল্যায়ন তথা শিক্ষাক্রম এর সফলতা ১৯৯৫ খ্রিষ্টাব্দের ধারাবাহিক মূল্যায়নের মতো ব্যর্থ হওয়ায় সম্ভাবনা বিদ্যমান। শিক্ষার্থীর বলা, লেখার যোগ্যতা পুরাপুরি সফলভাবে সমাপ্ত করার পর জ্ঞান অর্জন যাচাই পূর্বক নতুন পাঠে অগ্রসর হওয়া উচিত। অনেক ক্ষেত্রে  দেখা যায় শিক্ষার্থী যথাযথ  জ্ঞান  অর্জন ব্যতিরেকে মৌলিক একাডেমি পাঠটিকা অনুসরণ করতে গিয়ে, যেনোতেনো ভাবে পাঠ সমাপ্ত করে মূল্যায়ন প্রক্রিয়া সমাপ্ত করে থাকেন। এ প্রক্রিয়া কোন অবস্থায় কাম্য নয়।

বলা, লেখাসহ পাঠের জ্ঞান অর্জন করিয়ে শিক্ষককে সামনের দিকে অগ্রসর হতে হবে। অনুপস্থিত বা দুর্বল শিক্ষার্থীকে বিশেষ ক্লাস বা যত্নের মাধ্যমে শিখন ঘটতি দূর করার ব্যবস্থা ধারাবাহিক মূল্যায়ন ব্যবস্থায় বিদ্যমান। যেহেতু শিক্ষর্থীর প্রতি পিরিয়ড, প্রতিদিন প্রতি সপ্তাহ বা প্রতিনিয়ত মূল্যায়ন করা হয়ে থাকে। সে দৃষ্টিকোণ থেকে মূল্যায়নকে সর্বক্ষনিক পরীক্ষা হিসেবে অভিহিত করতে পারি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় ১ম-৩য় শ্রেণি পর্যন্ত ধারাবাহিক মূল্যায়ন সারা দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজ্য। যাতে সকল শিক্ষার্থী মূল্যায়নের সুফল ভোগ করতে পারেন। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব সকল শিশুকে ধারাবাহিক মূল্যয়নের ছাতার নিচে আনা। ঢাকাসহ বাংলাদেশের শহরাঞ্চলের অসংখ্য কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি বিদ্যালয়ে মাধ্যমিক শাখা অনুমতিবিহীন ভাবে পাঠদান কার্যক্রম চলছে।

এ কার্যক্রম বছরের পর বছর এমনকি যুগের পর যুগ ধরে চলে আসছে। বিদ্যালয়গুলো স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বেসরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাধ্যমে সরকারের বিনামূল্যের বই, রেজিষ্ট্রেশন, ৮ম, এসএসসি পরীক্ষাসহ যাবতীয় কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। উক্ত অনুমোদনবিহীন বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকরা ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দে শিক্ষাক্রমের প্রশিক্ষণ থেকে সংগত কারণে বাদ পড়েছেন। প্রশিক্ষণ না থাকায় বিদ্যালয়গুলো পুরোনো আদলে ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণির পরীক্ষা নিতে বাধ্য হয়েছেন। তাদের দেখভাল করার কোনো কর্তৃপক্ষ বা সুযোগ নেই। সঙ্গত কারণে তারা অস্তিত্ব বহাল রাখার জন্য পরীক্ষা পদ্ধতির পক্ষে জনমত সৃষ্টি করে চলেছেন। দ্রুত তাদের প্রশিক্ষণের আওতায় আনা অথবা চ্যালেঞ্জ দূর করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।

১ম, ২য় ও তৃতীয় শ্রেণির ধারাবাহিক মূল্যায়ন, পরবর্তী শ্রেণিতে ৪০ শতাংশ ধারাবাহিক ও ৬০ শতাংশ সামষ্টিক মূল্যায়ন কাম্য। এ মূল্যায়ন শুধু লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে সীমাবদ্ধ না রেখে শিক্ষর্থীর শোনা, বলা, পড়া, লেখাসহ সার্বিক দক্ষতা বা জ্ঞান অর্জনের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। নতুন শিক্ষাক্রমের সকল চ্যালেঞ্জ দূর করার প্রত্যাশা রইলো, প্রাথমিক ও গণশিক্ষাসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওপর।

লেখক: সভাপতি, বঙ্গবন্ধু প্রথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদ

শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল  SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।

ঢাকার তাপমাত্রা দেখে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নয়: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha ঢাকার তাপমাত্রা দেখে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নয়: শিক্ষামন্ত্রী আরো ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha আরো ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি ফাঁস হওয়া প্রশ্নেই প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা - dainik shiksha ফাঁস হওয়া প্রশ্নেই প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা এসএসসি পরীক্ষার ফল ১০ বা ১১ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল ১০ বা ১১ মে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কুমিল্লায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঘণ্টা চালুর নির্দেশ - dainik shiksha কুমিল্লায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঘণ্টা চালুর নির্দেশ দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে - dainik shiksha প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0066328048706055