শিক্ষাব্যবস্থা সংস্কার নিয়ে যা বললেন অধ্যাপক এম এম আকাশ দৈনিক শিক্ষা

শিক্ষাব্যবস্থা সংস্কার নিয়ে যা বললেন অধ্যাপক এম এম আকাশ

সেমিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেছেন, প্রাথমিক শিক্ষায় অগ্রগতিতে বার্ষিক বাজেটে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষকদের জন্য আলাদা বেতন কাঠামো তৈরি করতে হবে এবং প্রাথমিক স্তরে সরকারি স্কুলগুলোতে একই ধরনের পাঠ্যক্রম চালু করতে হবে।

সেমিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেছেন, প্রাথমিক শিক্ষায় অগ্রগতিতে বার্ষিক বাজেটে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষকদের জন্য আলাদা বেতন কাঠামো তৈরি করতে হবে এবং প্রাথমিক স্তরে সরকারি স্কুলগুলোতে একই ধরনের পাঠ্যক্রম চালু করতে হবে।

শুক্রবার সকালে ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটিতে এক সেমিনারে একথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, অন্য সবার চেয়ে আমাদের কাজটি আলাদা, কারণ আমরা শিক্ষক। আমরা মানুষ গড়ার কারিগর। প্রাইমারি স্কুল থেকে প্রতিটি ছাত্র কাদার ভিতর থাকে তখন যদি আমরা তাকে বানাতে পারি সারা জীবন সে একটা ভালো নাগরিক হিসেবে কাজ করতে পারবে।

তিনি আরো বলেন, সব প্রকার শিক্ষকদের আলাদা বেতন স্কেল হওয়া দরকার এবং সেই বেতন স্কেলে প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন স্কেল ও আলাদা হবে। প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক আপনারা সকলে যদি পৃথক বেতন স্কেলের জন্য আন্দোলন করেন তাহলে আপনারা সঠিক আন্দোলন করবেন এবং জয়লাভ করবেন। 

শিক্ষকদের পৃথক বেতন স্কেল শুধু বাংলাদেশ নয় অন্যান্য দেশেও রয়েছে। ভারতেও আছে সুতরাং আমরা এটা কেনো দাবি করতে পারবো না। আপনাকে যদি বাড়তি বেতন নিতে হয় তাহলে সেই বাড়তি টাকা দরকার।সেই বাড়তি টাকার জন্য শিক্ষা বাজেটে ব্যয় বৃদ্ধি করতে হবে এবং সেই বাজেট থেকে একটা অংশ শিক্ষকদের বেতনে খাতে এবং সেখান থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষকদের বেতন খাতে দিতে হবে। শেখ হাসিনার আমলে শিক্ষা কমিশন থেকে প্রত্যেক শিক্ষা বাজেটে জিডিপির  এক পারসেন্ট করে বাড়বে। প্রত্যেক বছর এক পার্সেন্ট করে বাড়বে এটা ওনার শিক্ষা কমিশনই নির্দেশ দিয়েছিলো। 

অধ্যাপক আকাশ বলেন,  কিন্তু তিন বছর ধরে উনি ওনার নির্দেশ পালন করেন। ৩ পার্সেন্টের ভিতর লুটপাট হয়েছে। লুটপাট হলে বেতন আসবে কোথা থেকে। এবারের অন্তবর্তীকালীন সরকারের বাজেট তৈরি হবে জুন মাসে। এখন থেকে আপনারা দাবি তোলেন এবং অর্থ মন্ত্রণালয় এই দাবি পৌঁছে দেন। এ বছর শিক্ষা বাজেটে জিডিপির এক পার্সেন্ট বেশি দিতে হবে। শিক্ষাকারিকুলামটা আপনারা কি রকম চান, এটা আমার ব্যক্তিগত মতামত। আমরা বাচ্চাদেরকে এমন ভাবে তৈরি করতে চাই যাতে বাচ্চারাই বাংলাদেশকে ভালবাসে এবং বাংলাদেশের একটা জাতীয় সত্তা গড়ে উঠুক। এরকম যেনো না হয় যে আমি হিন্দু ও মুসলমান ও খ্রিস্টান ও বৌদ্ধ সেরকম যেনো না হয়। কিন্তু তার মানে এই নয় যে ধর্মহীন একটা শিক্ষা চাচ্ছি আমরা। 

তিনি বলেন, হিন্দু ছাত্ররা হিন্দু ধর্মের বই পড়বে মুসলমান ধর্মের ছাত্ররা ইসলাম ধর্মের বই পড়বে, তাহলে কিন্তু একটা বৈষম্য থেকেই যায়। এটা রোধ করার জন্য ৭২ সালের স্বাধীনতার পর কুদরতি খোদা শিক্ষা কমিশনের একটা সাজেশন ছিল। সেই সাজেশন টা ছিল নব নীতি সুধা। ওই নবনীতির সুধার ভিতর হিন্দু ধর্মের ভিতরে মানবতার কথা আছে ইসলাম ধর্মের ভিতরে মানবতার কথা আছে, অতএব সকল ধর্মের ভেতরেই মানবতার কথা আছে ভ্রাতৃত্বের কথা আছে সত্যবাদীতার কথা আছে। 

ঢাবির সাবেক এই অধ্যাপক বলেন, সবগুলো মিলিয়ে যদি আমরা একটা বই সকলকে পড়াতে পারি তাহলে ভালো হয়। আর কেউ যদি ধর্মকে বাড়তি চর্চা করতে দেয় তাহলে আলাদা আলাদা করে পড়বে বাইরে। আমাদের সরকারি স্কুলে একটা সিলেবাস থাকবে। সিঙ্গেল সিলেবাস থাকবে সেই সিঙ্গেল সিলেবাসে ধর্মের ব্যাপারে এরকম একটা মিশ্র সিলেবাস যদি থাকে তাহলে আমরা সাম্প্রদায়িক হবো না। এবং সেভাবে আমরা যদি একটা অসাম্প্রদায়িক কারিকুলাম তৈরি করতে পারি তাহলে আমরা অগ্রসর হবো।