শিক্ষার আলোয় সম্ভব বেদে সম্প্রদায়ের অন্ধকার দূর করা - দৈনিকশিক্ষা

শিক্ষার আলোয় সম্ভব বেদে সম্প্রদায়ের অন্ধকার দূর করা

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

বাংলাদেশে অস্পৃশ্যতা, আঞ্চলিকতা, জাতিগত ও লিঙ্গবৈষম্য এখনো পুরোপুরি দূর হয় নাই। আমাদের সংবিধানের ২৮(১) ধারায় বলা আছে—‘কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী-পুরুষ ভেদ বা জন্মস্থানের কারণে কোনো নাগরিকের প্রতি বৈষম্য প্রদর্শন করিবেন না।’ তবু এই ধারাকে লঙ্ঘন করিয়া শুধু জন্ম ও পেশাগত অস্পৃশ্যতার কারণে বৈষম্য, নির্যাতন ও নিগ্রহের শিকার হইতে হইতেছে বাংলাদেশের প্রায় ৫৫ লক্ষ বিভিন্ন সম্প্রদায় ও দলিত জনগোষ্ঠীকে। এমনই এক জনগোষ্ঠী বেদে সম্প্রদায়। উহারা ছিন্নমূল, অসহায়, অধিকার বঞ্চিত। রোববার (১৯ জুলাই) ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত সম্পাদকীয়তে এ তথ্য জানা যায়। 

সম্পাদকীয়তে আরও জানা যায়, জীবন-জীবিকার টানে উহারা একসময় নদীর জলে ভাসমান জীবনযাপন করিত। বনে-জঙ্গলে বিষধর সাপ ধরিয়া নানা বিপজ্জনক খেলা দেখাইয়া এবং নানা রোগশোকের তাবিজ-কবজ বিক্রি করিয়া বেদে সম্প্রদায় জীবিকা নির্বাহ করিত। সাধারণত বর্ষাকালে তাহারা তাদের পসরা সাজাইয়া নদীপথে এক অঞ্চল হইতে আরেক অঞ্চলে ছড়াইয়া পড়িত এবং সুবিধামতো স্থানে তাহারা কিছুদিনের জন্য আবাস গড়িত। বেদে সম্প্রদায়ের সেই রমরমা ব্যবসা এখন আর নাই। করোনায় উহারা আরো বেশি বিপদে পড়িয়াছে। কিন্তু জীবন তো থামিয়া থাকে না। পেটের টানে তাহারা লোকারণ্যে মিশিয়া গেলেও তাহাদের মধ্যে যেই নিজস্বতা রহিয়াছে, তাহা ক্রমশ বিবর্ণ হইতেছে। ঢাকার অদূরে সাভারের বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ২০ হাজার বেদে সম্প্রদায়ের মানুষের বসবাস। একটি জাতীয় দৈনিকের সংবাদ হইতে জানা যায়, সম্প্রতি একটি প্রতারক চক্র এই সকল দরিদ্র বেদে পরিবারের কিশোরী ও তরুণীদের ভিডিওচিত্র ধারণ করিয়া নানা কৌশলে প্রতারণা করিতেছে।

বেদে সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান সমস্যা হইল, তাহারা এখনো শিক্ষার আলো হইতে বঞ্চিত। দেশের এই সকল পিছাইয়া পড়া জনগোষ্ঠীর শিক্ষার হার ৫ শতাংশেরও নিচে। শিক্ষার হার এত কম হইবার প্রধান কারণ হইল—তাহাদের স্কুলে ভর্তি হইবার ক্ষেত্রে নিরুত্সাহিত করা হয়। অথচ বিশ্বব্যাপী বর্ণবৈষম্য বিলোপের ব্যাপারে সচেতন দেশগুলি যথেষ্ট আন্তরিক। ১৯৬০ সালের দক্ষিণ আফ্রিকার সারপেবিলে তত্কালীন ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল পার্টির জারি করা বর্ণভিত্তিক আলাদা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে যেই শান্তিপূর্ণ মিছিল হয়, সেইখানে পুলিশ গুলিবর্ষণ করিয়া ৬৯ জনকে হত্যা করে। তখন হইতেই বিশ্বব্যাপী সকল ধরনের বর্ণবৈষম্য বিলোপের প্রচেষ্টা জোরদার করিবার উদ্দেশ্যে জাতিসংঘ ১৯৬৬ সালে একটি আন্তর্জাতিক বর্ণবৈষম্য বিলোপ দিবস নির্ধারণ করিয়াছে। বেদেরাও বিভিন্ন ধরনের বৈষম্যের শিকার।

কথিত আছে যে, ১৬৩৮ সালে শরণার্থী আরাকানরাজ বল্লাল রাজার সহিত ইহারা ঢাকায় আসে। ইহারা প্রথমে বিক্রমপুরে বসবাস শুরু করে এবং পরে সেইখান হইতে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে, এমনকি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও আসামেও ছড়াইয়া পড়ে। আবার কাহারো মতে প্রাচীনকালে তাহারা সুদূর মিশর হইতে আসিয়াছিল। বেদুইন হইতে ‘বেদে’ শব্দের উত্পত্তি। সহজ-সরল জীবনযাপনকারী বেদেরা তুলনামূলক সত্ প্রকৃতির। একমাত্র শিক্ষার আলো ইহাদের মধ্যে ছড়াইয়া দেওয়া সম্ভব হইলেই এই সম্প্রদায়ের কিশোরী তরুণীরা আর প্রতারণার শিকার হইবেন না। এই ব্যাপারে আমাদের আন্তরিক হইতে হইবে।

স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও - dainik shiksha স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল - dainik shiksha ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি - dainik shiksha সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ - dainik shiksha বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা - dainik shiksha ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস - dainik shiksha এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0044040679931641