রাতের অন্ধকারেও থেমে নেই এমপিওভূক্তির দাবিতে শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি। পৌষের কনকনে শীত উপেক্ষা করে দাবি আদায়ে রাতেও তারা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রেস ক্লাবের সামনে তৃতীয় দিনের মত রাত কাটিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষকরা।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিদিনই তাপমাত্রা একটু একটু করে কমছে। আজ শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর)ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রয়েছে ১৪ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃহস্পতিবার ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৬ দশমিক ২, বুধবার ১৬ দশমিক ৪ এবং মঙ্গলবার ১৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) থেকে নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের ডাকে চলমান আন্দোলন শুক্রবার চতুর্থ দিনে গড়ালেও এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে ইতিবাচক কোনো সাড়া মেলেনি। তবুও সুখবরের আশায় শত শত শিক্ষক অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। দাবি না মানলে আমরণ অনশন শুরু করবেন তারা।
বৃহস্পতিবার এগারোটার দিকে সরেজমিনে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষকদের মধ্যে কেউ শুয়ে কেউ বসে আবার কেউবা মনোযোগ দিয়ে বক্তব্য শুনছেন। বিভিন্ন দাবি সম্বলিত প্লাকার্ড হাতে নিয়ে সহস্রাধিকশিক্ষক-কর্মচারী আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন।
চলমান অবস্থান কর্মসূচি পালনের ফলে বয়স্ক ও নারী শিক্ষকরা সর্দি-কাশিতে ভুগছেন। সরকারের কাছ থেকে ইতিবাচক ঘোষণা না আসলেও হতাশ নন শিক্ষকরা। তাদের মনোবল চাঙ্গা এবং তাদের সকলের এক কথা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরে যাবেন না।
নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক কর্মচারী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ ড. বিনয় ভূষণ রায় জানান, আন্দোলনের তৃতীয় দিনে বৃহস্পতিবার হঠাৎ জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন শোভা রানী নামের এক শিক্ষিকা। তিনি খুলনা তেরখাদা উপজেলার সোনারতরী উচ্চ বিদ্যালয়ে এ শিক্ষিকতা করেন। পরে সহকর্মীরা তাকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যান। বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসা নিচ্ছেন শোভা রানী।
দাবি আদায়ে আরও কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি দেওয়া হবে জানিয়ে নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যক্ষ গোলাম মাহামুদুন্নবী ডলার বলেন, অনেক আশা নিয়ে বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর দফতরে গিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি (প্রধানমন্ত্রী) ব্যস্ত থাকায় সাক্ষাৎ পাইনি। তবে শিক্ষকদের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বরাবর একটি আবেদনপত্র জমা দিয়েছি। আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে। আবেদনপত্রটি প্রধানমন্ত্রীর হাতে দ্রুত পৌঁছানো হবে বলেও জানানো হয়েছে।
অধ্যক্ষ গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, সারাদেশে ৫ হাজারের বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্বীকৃতিপ্রাপ্ত এবং এমপিও প্রত্যাশী। এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীরা দীর্ঘ ১৫ থেকে ২০ বছর যাবত বিনা বেতনে চাকরি করছেন। সেখানে শিক্ষক-কর্মচারীর সংখ্যা এক লাখেরও বেশি এবং ২০ লাখেরও বেশি শিক্ষার্থী পড়ালেখা করছেন।