মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থা সরকারিকরণ ও ঈদের আগে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের শতভাগ উৎসব ভাতার দাবি আদায়ে রাজপথে নামছেন শিক্ষকরা। মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থা সরকারিকরণ ও এর আগে শিক্ষকদের শতভাগ উৎসব ভাতা, বাড়িভাড়া, চিকিৎসাভাতা দেয়াসহ মোট ১১ দফা দাবিতে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করছে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বিটিএ)। আগামীকাল বুধবার (২৩ মার্চ) ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এবং সারাদেশের জেলা সদরে এসব দাবি আদায়ে মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করছে শিক্ষক সংগঠনটি।
মঙ্গলবার সমিতির নেতার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তারা জানান, বুধবার রাজধানীতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও এ কর্মসূচি শেষে ঢাকার বিভাগীয় কমিশনারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে ১১ দফা দাবি জানিয়ে স্মারকলিপি দেয়া হবে। সারাদেশে জেলা সদরে শিক্ষক-কর্মচারীদের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল এবং জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেয়া হবে।
বিটিএর শিক্ষক নেতারা মোট ১১ দফা দাবি আদায়ে রাজপথে নামছেন। শিক্ষকদের দাবিগুলো হলো, মুজিববর্ষেই মাধ্যমিক শিক্ষা সরকরিকরণ করা, আসন্ন ঈদের আগেই সরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের মত পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা, বাড়িভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা দেয়া, পূর্ণাঙ্গ পেনশন প্রথা চালু করা এবং পেনশন প্রথা চালু না হওয়া পর্যন্ত অবসর গ্রহণের ৬ মাসের মধ্যে অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের পাওনা পরিশোধ এবং শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন থেকে অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কর্তন বন্ধ করা, স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা, সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেল যথাক্রমে ৬ষ্ঠ ও ৭ম গ্রেডে দেয়া, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বদলি চালু করা, শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরির বয়সসীমা ৬৫ বছরে উন্নীত করা, পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মত শিক্ষক নিয়োগ কমিশন গঠন এবং শিক্ষা প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে আনুপাতিক হরে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের পদায়ন, করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের আর্থিক প্রণোদনা এবং শিক্ষার্থীদের বিনা মূল্যে শিক্ষা সহায়ক ডিভাইস দেয়া, ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডির সদস্যদের নূন্যতম শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে বিরাজমান সরকারি ও বেসরকারি সকল বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে শিক্ষানীতি-২০১০ দ্রুত বাস্তবায়ন। এর আগে গত মঙ্গলবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন বিটিএর কেন্দ্রীয় নেতারা।
শিক্ষকরা বলেছেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা মাত্র ১ হাজার টাকা বড়ি ভাড়া, ৫০০ চিকিৎসা ভাতা এবং ২৫ শতাংশ উৎসব ভাতা পান। শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসরে যাওয়ার পর অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা পেতে বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয়। ফলে অনেক শিক্ষক-কর্মচারী টাকা পাওয়ার আগেই অর্থাভাবে বিনা চিকৎসায় মৃত্যুবরণ করেন। তাছাড়া কয়েক বছর যাবৎ কোন সুবিধা না দিয়েই অবসর ও কল্যাণ ট্রাস্টে অমানবিকভাবে শিক্ষক-কর্মচারীদর বেতন থেকে অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কর্তন করা হচ্ছে। বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের কোন বদলি এবং পদেন্নতির সুবিধা নাই। একই কারিকুলামের সিলেবাস, একই একাডেমিক সূচি, একইভাবে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও উত্তরপত্র মূল্যায়নের কাজে নিয়োজিত থেকেও আর্থিক সুবিধার ক্ষেত্রে সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারী ও বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের মধ্যে পাহাড়সম বৈষম্য রয়েছে। তাছাড়া বেসরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষকদের বেতন সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষকদের একধাপ নিচে দেয়া হয়। ইতোমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চাকরির বয়স ৬৫ বছর পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। কিন্তু স্কুল ও কলেজের শিক্ষকদের চাকরির বয়স আগের মতই রয়েছে।
তারা আরও বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি গভর্নিং বডির সদস্যদের শিক্ষাগত যোগত্য নির্ধারণ না করায় প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় নানারূপ সমস্যা দেখা যাচ্ছে। শিক্ষক নিয়োগে স্বচ্ছতা আনতে শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের দাবি পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মত শিক্ষক নিয়োগ কমিশন গঠন এবং শিক্ষা প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে অনুপাতিক হারে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের পদায়ন করা প্রয়োজন।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।