সরকারিকৃত স্কুলের গ্রন্থাগারিকরা শিক্ষক মর্যাদা পাচ্ছেন না, ক্ষোভ - দৈনিকশিক্ষা

সরকারিকৃত স্কুলের গ্রন্থাগারিকরা শিক্ষক মর্যাদা পাচ্ছেন না, ক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক |

সরকারিকৃত স্কুলে গ্রন্থাগারিকদের শিক্ষক মর্যাদা দেওয়া হচ্ছে না। বেসরকারি স্কুল-কলেজের এমপিও নীতিমালায় এমপিওভুক্ত স্কুলের গ্রন্থাগারিক পদটিকে শিক্ষক মর্যাদা দিয়ে তথ্য ও গ্রন্থাগার বিজ্ঞান সহকারি শিক্ষক করা হয়েছে। কিন্তু মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মচারী নিয়োগের নতুন বিধিমালায় সরকারি মাধ্যমিক স্কুলের গ্রন্থাগারিকদের শিক্ষক মর্যাদা না দেওয়ায় এ জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন গ্রন্থাগার শিক্ষক নেতারা। ফলে, এ প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রন্থাগার শিক্ষকদের ১০ম গ্রেডের পরিবর্তে ১৩ বা ১৪তম গ্রেডে পদায়ন করার বিষয়ে মতামত দিচ্ছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। ফলে, গ্রন্থাগার শিক্ষকরা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এর প্রতিবাদ ও ক্ষোভ জানিয়েছেন গ্রন্থাগার শিক্ষক নেতারা।

জানা গেছে, যেসব উপজেলায় সরকারি স্কুল-কলেজ ছিল না, সেসব উপজেলায় একই ঘোষণায় একটি স্কুল ও একটি কলেজ সরকারি করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে তিন শতাধিক প্রতিষ্ঠান সরকারি করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। কিন্তু কিছু প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীদের আত্তীকরণের কাজ হলেও অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীদের আত্তীকরণের কাজ প্রক্রিয়াধীন। 

প্রক্রিয়াধীন থাকা সরকারিকৃত স্কুলের গ্রন্থাগার শিক্ষকরা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে অভিযোগ করে জানান, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সরকারিকৃত স্কুলের গ্রন্থাগারিকদের শিক্ষক হিসেবে মানতে নারাজ। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এ পদটিকে অশিক্ষক হিসেবে উল্লেখ করছে। কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা বলছেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে জারি করা নিয়োগ বিধিমালার কথা বলছেন। তারা বলছেন, তাদের কিছুই করার নেই। 

গ্রন্থাগার শিক্ষকরা আরও বলছেন, নতুন এমপিও নীতিমালায় গ্রন্থাগারিকদের শিক্ষক মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ‘মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (কর্মচারী) নিয়োগবিধিমালা-২০২১’ এ পদটি শিক্ষক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। যা সাংঘর্ষিক এবং জটিলতা সৃষ্টির কারণ। 

সরকারিকৃত স্কুলের গ্রন্থাগারিকদের অশিক্ষক হিসেবে আত্তীকরণের প্রক্রিয়ার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিদ্যালয় গ্রন্থাগার সমিতির নেতারা। সমিতির সভাপতি এ এফ এম কামরুল হাছান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, জন প্রশাসন মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করার পর তারা কারণ হিসেবে ২২ আগস্টে জারি করা নিয়োগ বিধিমালার কথা উল্লেখ করেছেন। তারা বলেছেন, কিছুই করার নেই। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই, কারণ এটি একটি বৈষম্য। 

তিনি আরও বলেন, একই ঘোষণায় সরকারিকৃত প্রতিষ্ঠানে ১৭জনকে ১০ম গ্রেডে শিক্ষক হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে। এমন কি যাদের কাম্য যোগ্যতা নেই তাদের তাদেরকে ৫ বছরের মধ্যে যোগ্যতা অর্জনের শর্তে ১০ম গ্রেডে পদায়ন করা হয়েছে। সহকারী গ্রন্থাগারিকদের অশিক্ষক হিসেবে উল্লেখ করে ১৩তম বা ১৪তম গ্রেডে পদায়ন করার মতামত কোনভাবেই কাম্য নয়।

তিনি বলেন, ২৮ মার্চ জারি করা বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (স্কুল ও কলেজ) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা অনুসারে জনবল কাঠামোতে সহকারী গ্রন্থাগারিক শব্দ দুটিকে বাদ দিয়ে গ্রন্থাগার ও তথ্য বিজ্ঞান বিষয়ের সহকারী শিক্ষক নামে  নতুন একটি পদ সৃজন করা হয়েছে এবং প্রতিষ্ঠানে কর্মরত গ্রন্থাগার পেশাজীবীদের সমস্ত সুযোগ সুবিধা বহাল রেখে সহকারী শিক্ষক (গ্রন্থাগার ও তথ্য বিজ্ঞান) হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে। সে মোতাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সরাসরি একজন শিক্ষককে অশিক্ষক হিসেবে উল্লেখ করায় সমগ্র গ্রন্থাগার শিক্ষকরা ক্ষুব্ধ।

কামরুল হাছান বলেন, আমরা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের নিয়োগ বিধিমালা ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য জারিকৃত এমপিও নীতিমালার সাথে অনেক গড়মিল পেয়েছি। সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে একই সিলেবাসে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়। তাছাড়া বেসরকারি শিক্ষকদের যোগ্যতাও সরকার কর্তৃক নির্ধারিত। একই সিলেবাসে পরিচালিত বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জনবল কাঠামো অনুসারে প্রতিষ্ঠানে গ্রন্থাগার পরিচালনায় নিয়োজিত থাকেন একজন পোস্টগ্রাজুয়েট গ্রন্থাগার ও তথ্য বিজ্ঞানের ডিপ্লোমাধারী সহকারী শিক্ষক। কিন্তু সরকারি প্রতিষ্ঠানে সদ্য জারিকৃত নিয়োগ বিধিমালায় সহকারী শিক্ষক গ্রন্থাগার ও তথ্য বিজ্ঞান পদটিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। যা দৃশ্যমান বৈষম্য। ভবিষ্যতে জাতীয়করণকৃত প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক পদায়নে সমস্যা সৃষ্টির কারণ হবে। 

সরকারিকৃত স্কুলের গ্রন্থাগারিকদের যেন গ্রন্থাগার সহকারী শিক্ষক পদে বা গ্রেড অবনমন না করে সব সুযোগ-সুবিধা বহাল রেখে পদায়ন করা হয়। এমন দাবি জানিয়ে গত ৬ সেপ্টেম্বর মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে চিঠি পাঠিয়েছে বিদ্যালয় গ্রন্থাগার সমিতি।

আইনী লড়াইয়ে যাওয়ারও চিন্তা করছেন নেতারা। 

শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.022563934326172