সরকারের কাছে সাধারণ ক্ষমা চেয়ে রেহাই পেতে চান অভিযুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানরা। তারা সরকারকে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের শূন্যপদের ভুল তথ্য দেয়ায় দ্বিতীয় চক্রে নিয়োগপ্রাপ্ত কয়েক হাজার শিক্ষক এমপিওবঞ্চিত হয়েছিলেন। এই অপরাধে অভিযুক্ত সারাদেশের দুই শতাধিক এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানের তিন মাসের এমপিও কেটে রাখার নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আরও সাত শতাধিক প্রতিষ্ঠান প্রধানের এমপিও কর্তন প্রক্রিয়াধীন।
দৈনিক আমাদের বার্তার অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রতিষ্ঠান প্রধানরা ভুল তথ্য দেওয়ায় দ্বিতীয় চক্রে নিয়োগপ্রাপ্ত কয়েক হাজার শিক্ষক এমপিওভুক্ত হতে পারছিলেন না। দীর্ঘ প্রক্রিয়ার পর ভুক্তভোগীদের বিশেষ প্রক্রিয়ায় এমপিওভুক্ত ও অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের জন্য নতুন করে সুপারিশ করা হয়েছে। ভুক্তভোগী প্রার্থীদের জটিলতা অনেক কষ্টের পর কাটলেও এমপিও কেটে নেওয়ায় এবার ভোগান্তিতে পড়েছেন অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান প্রধানরা। সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া এসব প্রতিষ্ঠান প্রধান এখন অজানা ভবিষ্যতের শঙ্কায় রয়েছেন। তারা বলছেন, তিন মাসের এমপিও কাটা হলেও অবসরের পর অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা পেতে তাদের জটিলতায় পড়তে হবে। এ পরিস্থিতিতে ভুল তথ্য দেওয়া এ প্রতিষ্ঠান প্রধানরা সরকারের কাছে ক্ষমা চাচ্ছেন।
এদিকে ভুল তথ্য দেওয়া প্রতিষ্ঠান প্রধানদের অনেকেই আবার বলছেন, মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর ভুল করে তাদের এমপিও কেটেছেন। তাদের অনেকের দাবি আগের প্রতিষ্ঠান প্রধান ভুল তথ্য দিয়ে অবসরে যাওয়ার পর নতুন প্রতিষ্ঠান প্রধানদের এমপিও কাটা হয়েছে। তবে কারণ যাই হোক, সব প্রতিষ্ঠান প্রধানই এখন সরকার তথা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে সাধারণ ক্ষমা চাচ্ছেন।
জানা গেছে, এনটিআরসিএর দ্বিতীয় চক্রের শিক্ষক নিয়োগে শূন্যপদের ভুল তথ্য দিয়েছিল কয়েক হাজার প্রতিষ্ঠান। ফলে, শিক্ষক পদে নিয়োগ সুপারিশ পেয়েও কয়েক হাজার প্রার্থী যোগদান ও এমপিওভুক্ত হতে জটিলতায় পড়েছিলেন। মহিলা কোটা, নবসৃষ্ট পদে নিয়োগ, প্যাটার্ন জটিলতাসহ নানা সমস্যায় তারা এমপিওভুক্ত হতে পারছিলেন না। এসব জটিলতার মূলে ছিলেন শূন্যপদের ভুল তথ্য পাঠানো প্রতিষ্ঠান প্রধানরা। তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষক নিয়োগের ভুল তথ্য পাঠানো এমন মোট দুই শতাধিক প্রতিষ্ঠান প্রধানের তিনমাসের এমপিও কেটে রাখার নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ। ইতোমধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠান প্রধানদের এমপিও কেটে রাখা শুরু করেছে। শিক্ষক নিয়োগের ভুল তথ্য পাঠানো এরকম ৯ শতাধিক প্রতিষ্ঠান প্রধানের এমপিও বন্ধের সুপারিশ করেছিল এনটিআরসিএ।
ভুল তথ্য দেওয়ায় এমপিও হারানো প্রতিষ্ঠান প্রধানরা বলছেন, তিন মাসের এমপিও হারানোয় অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন তারা। শুধু এখন এ ক্ষতি হবে তা নয়, আগামীতে অবসরে গেলে অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা পেতেও তারা জটিলতায় পড়বেন। নিরবচ্ছিন্ন এমপিও না থাকায় পদে পদে প্রশ্নের মুখে পড়বেন। তাই এমপিও হারানো প্রতিষ্ঠান প্রধানরা এখন শিক্ষা প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে তদবির শুরু করেছেন। গত কয়েকদিনে এমন বেশ কয়েকজন প্রতিষ্ঠান প্রধানের সঙ্গে কথা হয় দৈনিক আমাদের বার্তার।
‘নিয়মমাফিক শূন্যপদের তথ্য দেওয়ার পরেও আমার এমপিও কেটেছে’ :
গতকাল মঙ্গলবার দৈনিক আমাদের বার্তার সঙ্গে কথা হয় ভুল তথ্য দিয়ে এমপিও হারানো প্রতিষ্ঠান প্রধান মোহাম্মদ আলীর। তিনি রংপুর উত্তম স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান। তিনি জানান, তার প্রতিষ্ঠানে সংযুক্ত প্রাথমিক শাখা খোলা আছে। ১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দে সংযুক্ত প্রাথমিক শাখা এমপিওভুক্ত হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ২০১৫ ও ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে দুই দফা পরিপত্র জারি করে প্রাথমিক স্তরের চাহিদা এনটিআরসিএতে দেওয়ার কথা বলা হয়। সে অনুযায়ী তিনি চাহিদা দিয়েছিলেন।
প্রতিষ্ঠান প্রধান মোহাম্মদ আলী আরও জানান, প্রাথমিক স্তরে শূন্যপদের চাহিদার ভিত্তিতে এনটিআরসিএ তার প্রতিষ্ঠানে একজন বাংলার শিক্ষিকাকে সুপারিশ করে। ওই শিক্ষিকা এমপিওভুক্ত হতে পারেননি। এ প্রতিষ্ঠান প্রধানের দাবি, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র ও সংযুক্ত প্রাথমিক শাখার কাগজপত্রসহ রংপুরের উপপরিচালকের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও ডিডি ওই শিক্ষিকার এমপিওর আবেদন অগ্রায়ণ করেননি। তবে পরে এনটিআরসিএ ওই শিক্ষিকাকে নতুন করে সুপারিশ করে। কিন্তু এখন প্রতিষ্ঠান প্রধান মোহাম্মদ আলীর এমপিও কর্তন করা হয়েছে।
প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা না থাকলে চাহিদা দিতাম না। ২০১৫ ও ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া নির্দেশনায় সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে সংযুক্ত প্রাথমিক শাখার চাহিদা দিতে। সে অনুসারে আমিও চাহিদা দিয়েছি। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের এমপিও নীতিমালাতেও সংযুক্ত প্রাথমিক শাখা বাতিল হবে বলে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। আমি নিয়ম মাফিক চাহিদা দিয়েছি। কিন্তু আমার এমপিও কেটে রেখেছে।’
ক্ষোভ জানিয়ে এ প্রবীণ শিক্ষক বলেন, ‘দিনের পর দিন রংপুরের উপপরিচালকের কাছে কাগজপত্র নিয়ে ঘুরেছি। একটিবার যাচাই করে দেখলে তিনি ওই শিক্ষিকার এমপিওর বিষয় অধিদপ্তরকে লিখতেন। তিনি তা করেননি। এখন আমাদের বেতন কাটা হচ্ছে। নিয়ম অনুযায়ী তথ্য দিয়ে এখন বেতন হারিয়েছি, সামাজিকভাবেও হেয় প্রতিপন্ন হচ্ছি। আমরা সাধারণ ক্ষমা চাই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে।’
মৃত্যুর পরও এমপিও কর্তন :
এমপিও হারানো বেশ কয়েকজন প্রতিষ্ঠান প্রধান বলছেন, তারা দোষ না করলেও তাদের এমপিও কাটার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মৃত্যুবরণ করা প্রতিষ্ঠান প্রধানেরও এমপিও কর্তনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার সেরুডাঙ্গা স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. হাসান জাহাঙ্গীর আলমের দাবি, তিনি ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়ারি মাসে অধ্যক্ষ পদে যোগদান করেছেন। আর ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের নিয়োগের জন্য তার এমপিও কাটা হয়েছে।
নীলফামারীর সৈয়দপুরের খালিশা বেলপুকুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৈয়দ মো. আমিরুল ইসলাম দাবি করেন, তিনি ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠানটিতে যোগদান করেছেন। নিয়োগের চাহিদা দেওয়া হয়েছিল ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে। তার যোগদানের আগে চাহিদা দেওয়া হলেও তার এমপিও কাটা হয়েছে।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার সিংগার ডাবড়ীহাট বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ মো. আরিফুল ইসলাম সরকার দাবি করেন, তিনি ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে যোগদান করলেও সে বছর আগস্টে দেওয়া চাহিদায় ভুল তথ্যের জন্য তার বেতন কাটা হচ্ছে।
লালমনিরহাট হাতীবান্ধা উপজেলার মতিয়ন নেছা জুনিয়র বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আশরাফ আলীরও বেতন কাটার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এই শিক্ষকের দাবি, ভুল চাহিদা দেওয়া প্রধান শিক্ষক অসুস্থ থাকায় তিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে আছেন। কিন্তু মন্ত্রণালয় তার বেতন কাটার নির্দেশ দিয়েছে।
এদিকে পঞ্চগড় সদর উপজেলার দেওয়ানহাট গার্লস উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অশোক কুমার দত্তের এমপিও কাটার নির্দেশ দেওয়া হলেও তিনি কিছুদিন আগে মারা গেছেন।
ভবিষ্যতের কথা চিন্তায় সাধারণ ক্ষমা চান প্রতিষ্ঠান প্রধানরা :
গত সপ্তাহে এনটিআরসিএর সামনে দেখা হয় খুলনা থেকে আসা এক প্রতিষ্ঠান প্রধানের সঙ্গে। দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে রাজধানীতে আসা ওই শিক্ষিকা ‘ছলছল চোখে’ এনটিআরসিএ কার্যালয়ের নিচে বসে একটি আবেদন লিখছিলেন। আবেদনের বিষয় ছিল ‘সাধারণ ক্ষমা প্রার্থনা প্রসঙ্গে’। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, ‘ভুল তথ্য দেওয়ায় আমার প্রতিষ্ঠানে যোগ দেওয়া শিক্ষক এমপিওভুক্ত হতে পারছিলেন না। তাই আমার এমপিও কেটে রাখা হচ্ছে। আমরা ক্ষমা চাই।’
তিনি জানান, তার প্রতিষ্ঠানের একটি বিষয়ের অনুমোদন ছিল না। তা না জেনেই শূন্যপদের তথ্য দেন তিনি। কিন্তু পরে এনটিআরসিএ প্রার্থী সুপারিশ করলেও তিনি এমপিওভুক্ত হতে পারেননি। এখন প্রতিষ্ঠান প্রধানের এমপিও কেটে রাখা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে মহাপরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তিনি বলেছেন, আমাদের কিছুই করার নেই। এনটিআরসিএ মন্ত্রণালয়কে শাস্তির কথা বলেছে। মন্ত্রণালয় শাস্তির নির্দেশ দিয়েছে। তাই আমি এসেছি এনটিআরসিএর কাছে ক্ষমা চাইতে।’
নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করে ওই প্রধান শিক্ষিকা দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, ‘অনেক হেয় হয়েছি, হচ্ছি। নাম লিখবেন না। আগে শাস্তির সুপারিশ করা হলে দৈনিক শিক্ষাডটকমে নাম প্রকাশ করা হয়েছিল। আমরা ভুল করেছি। ভুল করে তথ্যটা দিয়েছি। ভুল মানুষই করে। আমরা ক্ষমা চাই। এখন তিন মাসের এমপিও কেটে নেওয়া হলে আমরা অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা পেতে জটিলতায় পড়বো। আমরা চাই আমাদের ক্ষমা করা হোক।’
একই কথা প্রতিষ্ঠান প্রধান মোহাম্মদ আলী দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, ‘আমি ভুল না করলেও এখন এমপিও কেটে রাখা হচ্ছে। তা যদি হয় আমরা ভবিষ্যতে অবসর কল্যাণের টাকা পেতে জটিলতায় পড়বো। মুজিববর্ষে চারিদিকে এতো আয়োজন। কিন্তু আমাদের মনে অজানা শঙ্কা। আমরা সরকার তথা এনটিআরসিএর কাছে ক্ষমা চাই।’
শিক্ষা প্রশাসন যা বলছে :
শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ১২ জুন জারি হওয়া এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামোতে কিছু নতুন পদ সৃষ্টি করা হয়েছিল। বিধান ছিল, এসব পদে নিয়োগে মন্ত্রণালয় আলাদা আদেশ জারি করবে। এ পদগুলো নবসৃষ্ট পদ নামে বহুল পরিচিত। এসব প্রতিষ্ঠান প্রধান আদেশ জারির আগেই ২য় চক্রে শিক্ষক নিয়োগের চাহিদা হিসেবে সে পদগুলোকে শূন্য দেখিয়েছিলেন। ফলে, সুপারিশ পাওয়া প্রার্থীরা এমপিওভুক্ত হতে পারছিলেন না। পরে অবশ্য এসব শিক্ষকের জটিলতা নিরসন করেছে সরকার। এনটিআরসিএর মেধা তালিকায় উত্তীর্ণ হয়েও প্রার্থীদের এ জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে ত্রুটিপূর্ণ চাহিদার জন্য। তাই প্রতিষ্ঠান প্রধানদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাই, গত ১৯ ও ২০ সেপ্টেম্বর দায়ী প্রতিষ্ঠান প্রধানদের তিন মাসের এমপিও কর্তন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরকে।
এনটিআরসিএর কর্মকর্তারা বলছেন, শূন্যপদের ভুল তথ্য পাঠানোয় প্রায় শতাধিক প্রতিষ্ঠান প্রধানের এমপিও কর্তনের সুপারিশ করা হয়েছিল। তারা ভুল তথ্য দেওয়ায় নিবন্ধিত কয়েক হাজার প্রার্থী এমপিওভুক্ত হতে পারছিলেন না। তাদের মধ্যে মহিলা কোটা ও নবসৃষ্ট পদের জটিলতায় থাকা প্রার্থীদের বিশেষ পদ্ধতিতে এমপিওভুক্ত করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আর প্যাটার্ন জটিলতায় থাকা প্রার্থীদের নতুন করে সুপারিশ করা হয়েছে। এখন ভুক্তভোগীদের দু-একজন ছাড়া সবার জটিলতা কেটেছে বলেও জানান কর্মকর্তারা।
প্রতিষ্ঠান প্রধানদের ক্ষমা প্রার্থনা নিয়ে ভুক্তভোগী প্রার্থীরা যা বলছেন:
চাঁদপুরের কচুয়ার পালাখাল ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক মো. ইয়াসিন মিয়া মহিলা কোটার জটিলতায় এমপিওভুক্ত হতে পারছিলেন না। কিন্তু নিয়োগ পাওয়ার ১৫ মাসের বেশি সময় পরে মন্ত্রণালয় বিশেষ আদেশ জারি করে তাদের এমপিওভুক্ত করেছেন। শিক্ষক নিয়োগের ভুল তথ্য দেওয়ায় তার মত সাড়ে তিন হাজার নতুন শিক্ষক এমপিও জটিলতায় পড়েছিলেন। তারা ১৫ মাস এমপিও পাননি।
প্রতিষ্ঠান প্রধানদের ক্ষমার বিষয়ে জানতে চাইলে মো. ইয়াসিন মিয়া দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, শিক্ষকতার মহান পেশায় এসেই আমরা প্রথম ১৫ মাস বেতন পাইনি। এরজন্য যারা দায়ি তাদের ওপর রাগ থাকা স্বাভাবিক। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, এনটিআরসিএর এবং যাদের অবদান অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই সেই দৈনিক শিক্ষাডটকমের চেষ্টায় আমাদের সব জটিলতা কেটেছে। এখন আমরা এমপিওভুক্ত হতে পেরেছি। যাদের এমপিও কাটা হচ্ছে তারা আমাদের শিক্ষক। আমরা চাই না তাদের অবসর সুবিধা ও কল্যাণের টাকা নিয়ে কোনো জটিলতায় পড়তে হোক। মন্ত্রণালয় তাদের ক্ষমা করে দিক সে প্রত্যাশা।
তবে ভুক্তভোগীদের কেউ কেউ বলেছেন, ভুল তথ্য দেওয়া প্রতিষ্ঠান প্রধানরা আমাদের তাচ্ছিল্য করেছেন। তাদের জন্য ১৫ মাস এমপিও পাইনি। তাদের শাস্তি হওয়ায় আমরা খুশি।