এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় পাস করেও সারাদেশে ৪৩ হাজার শিক্ষার্থী কলেজে ভর্তির সুযোগ পাননি। পছন্দের কলেজে আবেদন করে ভর্তির জন্য তৃতীয় বা শেষ ধাপেও তারা মনোনয়ন পাননি। এসব শিক্ষার্থী ভর্তি নিয়ে বিপাকে আছেন। তারা কোন কলেজে কিভাবে ভর্তি হবে সে প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন।
কিছু শিক্ষার্থী এসএসসি কম গ্রেড পেলেও কাঙ্ক্ষিত প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ পেতে ‘ইচ্ছে করেই’ নামীদামী প্রতিষ্ঠানে ভর্তির আবেদন করে ভর্তির সুযোগ হারিয়েছেন বলে অভিযোগ আছে। তারা এ ‘ডিজিটাল অনিয়মের মাধ্যমে’ কাঙ্ক্ষিত প্রতিষ্ঠানে ম্যানুয়াল ভর্তির সুযোগ পেতে তারা দৌঁড়ঝাপ শুরু করেছেন বলেও জানা গেছে।
যদিও শিক্ষা বোর্ডের কর্তারা বলছেন, এসব শিক্ষার্থীর বিষয়ে কি করা যায় সে বিষয়ে তারা চিন্তাভাবনা করছেন। অনলাইনে ভর্তির আরও একটি ধাপ বাড়িয়ে এসব শিক্ষার্থীকে কলেজ ভর্তির আবেদন করার সুযোগ দিতে চাচ্ছে শিক্ষা বোর্ডগুলো।
আন্তঃশিক্ষা সমন্বয় বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য আবেদন করেও সারাদেশে ৪৩ হাজার ৩৩০ জন শিক্ষার্থী পছন্দের কলেজে ভর্তির সুযোগ পাননি। তৃতীয় ধাপের ফল প্রকাশিত হয়েছে। সে হিসেবে তাদের কলেজে ভর্তির সুযোগ হবে কিনা তা নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
এদিকে একাদশে ভর্তির সঙ্গে সম্পৃক্ত বোর্ডের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, যারা কলেজে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হননি, তাদের আবেদন আমরা পর্যালোচনা করে দেখেছি তাদের কেউ কেউ ‘ডিজিটাল জালিয়াতির’ চেষ্টা করেছেন। অনেকে সুযোগ পাবেন না যেনেও একই প্রতিষ্ঠানে বারবার আবেদন করেছেন। আসলে তারা ম্যানুয়ালি ওই প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভর্তির সুযোগ খুঁজছেন।
এদিকে ঢাকা বোর্ডের একটি সূত্র দৈনিক আমাদের বার্তাকে জানান, ‘প্রভাবশালীদের সন্তানরা এসএসসিতে খারাপ ফল করেও ভালো ভালো কলেজগুলোতে ভর্তির সুযোগ খুঁজছেন। তারা বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করে তদাবির করছেন যেন এর পর ম্যানুয়ালি ভর্তির সুযোগ দেয়ার জন্য তদবির করছেন। বোর্ডের কেউ কেউ প্রভাবশালীদের চাপে ম্যানুয়ালি ভর্তির সুযোগ দেয়ার পক্ষে মত দিচ্ছেন।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আন্তঃশিক্ষা সমন্বয় বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক আবু তালেব মো. মোয়াজ্জেম হোসেন গতকাল বুধবার দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, তৃতীয় ধাপের মেধাতালিকায় আবেদন করে ১ লাখ ১৮ হাজার ৫৪২ জন পচ্ছন্দের কলেজ পেয়েছে। তাদের আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ভর্তি নিশ্চায়ন করতে। তবে এবার আবেদন করেও শেষ ধাপ পর্যন্ত পছন্দের কলেজ পায়নি ৪৩ হাজার ৩৩০ জন শিক্ষার্থী।
এসব শিক্ষার্থীর বিষয়ে কি সিদ্ধান্ত হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাদের বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে, এ শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হবেন না। আমারা তাদের ভর্তির সুযোগ দেবো। কিন্তু কি উপায়ে ভর্তির সুযোগ দেয়া হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত এখনো চূড়ান্ত হয়নি। আমরা চতুর্থ ধাপে অনলাইনে আবেদন গ্রহণ ও মেধাতালিকা প্রকাশের চিন্তাভাবনা করছি। সব শিক্ষা বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।