সতেরোতম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা না হওয়ায় দুই বছর ধরে ঝুলে আছে ১২ লাখেরও বেশি প্রার্থীর ভাগ্য। করোনা মহামারীর প্রকোপ বাড়লে ওই পরীক্ষা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিলো। তাই করোনা পরিস্থিতির উন্নতির পর আবেদনকারীরা পরীক্ষার মাধ্যমে নিবন্ধিত হওয়ার সুযোগ পাবেন বলে আশা করেছিলেন। কিন্তু, এখন পর্যযন্ত এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো খবর পাওয়া যায়নি। যদিও বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) কর্মকর্তারা বলছেন, জায়গা না পাওয়ায় পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করা যায় নি। শিগগিরই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এনটিআরসিএ এর সার্বিক বিষয় নিয়ে শিগগিরই শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সভা হবে। আগামী রোববার এ সভা হওয়ার কথা। সেখানে নতুন শিক্ষকদের প্রাকবাছাই বা নিবন্ধন পরীক্ষা নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
উল্লেখ্য, ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ জানুয়ারি ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। সেদিনই বিকেল ৪টা থেকে আবেদন গ্রহণ শুরু হয়। এনটিআরসিএর ওয়েবসাইটে আগ্রহী প্রার্থীরা সে বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আবেদন করতে পারেন। আর ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ফি জমা দিয়ে আবেদন নিশ্চায়নের সুযোগ পান। ওই পরীক্ষায় অংশ নিতে ১১ লাখ ৭২ হাজার প্রার্থী আবেদন করেন।
এরপর গত ২ মার্চ গ্রন্থাগার ও তথ্য বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক এবং গ্রন্থাগার বিষয়ের প্রভাষক পদে নিবন্ধনে ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার সম্পূরক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। তাতে ৩১ মার্চ পর্যন্ত আবেদন নেয়া হয়। বিভিন্ন স্কুল-কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানে গ্রন্থাগার ও তথ্য বিজ্ঞান বিষয়ের সহকারী শিক্ষক এবং কলেজ ও মাদরাসার গ্রন্থাগার ও তথ্য বিজ্ঞান বিষয়ক প্রভাষক হিসেবে নিবন্ধনে আবেদন করেন ২১ হাজার প্রার্থী। বর্তমানে সব মিলিয়ে প্রায় ১২ লাখ প্রার্থী পরীক্ষার অপেক্ষায় আছেন।
প্রার্থীরা বলছেন, করোনায় পরীক্ষা স্থগিত হলো। দুই বছর ধরে অপেক্ষায় আছি। পরীক্ষা দিয়ে নিবন্ধিত হতে পারলে আমরা পরবর্তী শিক্ষক নিয়োগের গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করতে পারবো।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনটিআরসিএর সচিব ওবায়েদুর রহমান দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধনের প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষা কবে হবে সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এ পরীক্ষার জন্য আগে ১১ লাখ ৭২ হাজার প্রার্থী বিভিন্ন শিক্ষক পদে নিবন্ধিত হতে আবেদন করেছিলেন। গ্রন্থাগার শিক্ষক ও প্রভাষক পদে নিবন্ধনে সম্পূরক বিজ্ঞপ্তি অনুসারে আবেদন করেছেন ২১ হাজার প্রার্থী। সব মিলিয়ে প্রার্থী আছেন প্রায় বারো লাখ।
তিনি বলেন, এ বিপুল সংখ্যক প্রার্থীর পরীক্ষা নেয়ার জন্য স্থান পাওয়া যাচ্ছে না। আগামী ১৭ এপ্রিল শিক্ষামন্ত্রী মহোদয়ের সভাপতিত্বে এনটিআরসিএর সার্বিক বিষয় নিয়ে সভা আয়োজনের কথা আছে।
আসন্ন সভায় ১৭তম নিবন্ধন নিয়ে আলোচনা হবে কী না জানতে চাইলে এনটিআরসিএ সচিব বলেন, নিবন্ধন পরীক্ষা এনটিআরসিএর একটি বড় কাজ। আমরা অবশ্যই এ বিষয়ে মন্ত্রী মহোদয়কে জানানোর চেষ্টা করবো। আশা করছি তিনি একটি সিদ্ধান্ত দেবেন।