২৮ শতাংশ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় গ্র্যাজুয়েটই বেকার, গার্মেন্টসের নিম্ন পদেও - দৈনিকশিক্ষা

২৮ শতাংশ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় গ্র্যাজুয়েটই বেকার, গার্মেন্টসের নিম্ন পদেও

দৈনিক শিক্ষাডটকমট প্রতিবেদক |

দৈনিক শিক্ষাডটকমট প্রতিবেদক: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজগুলো থেকে পাস করার তিন বছর পরও ২৮ শতাংশ শিক্ষার্থী বেকার থাকছেন। পাস করা অনেকে তৈরি পোশাক খাতের নিচু পদেও যাচ্ছেন। এ ছাড়া রাষ্ট্রবিজ্ঞান, লাইব্রেরি ব্যবস্থাপনা, বাংলা, ইসলামির ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করা শিক্ষার্থীদের মধ্যেও বেকারের হার তুলনামূলক বেশি। কৃষি খাতেও যুক্ত আছেন অনেকে। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণাপ্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএসের) এক গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে।

রোববার (২৪ মার্চ) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিআইডিএস কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে গবেষণার তথ্য তুলে ধরেন প্রতিষ্ঠানটির গবেষণা ফেলো বদরুন নেসা আহমেদ।

তিনি জানান, বিআইডিএস সম্প্রতি (২০২৩ সাল) জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজ থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের ওপর একটি গবেষণা পরিচালনা করেছে। ওই গবেষণায় তিন বছর আগে পাস করা শিক্ষার্থীদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি বর্তমানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তাদের বক্তব্যও নেওয়া হয়েছে। তাতে দেখা যায়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করার তিন বছর পরও প্রায় ২৮ শতাংশ গ্র্যাজুয়েট চাকরি পাচ্ছেন না।

 

যে ২৮ শতাংশ শিক্ষার্থী বেকার, তাঁরা কোন কোন বিষয়ে পড়েছেন, তা-ও দেখা হয়েছে গবেষণায়। এতে দেখা যায়, যাঁরা বেকার থাকছেন, তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগই বিএ (পাস) ডিগ্রিধারী। এ ছাড়া রাষ্ট্রবিজ্ঞান, লাইব্রেরি ব্যবস্থাপনা, বাংলা, ইসলামির ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করা শিক্ষার্থীদের মধ্যেও বেকারের হার তুলনামূলক বেশি। বিপুলসংখ্যক নারীও বেকার থাকছেন।

গবেষণার তথ্য বলছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা ৪২ শতাংশ শিক্ষার্থী বেতনে চাকরি করছেন। এ ছাড়া ১৬ শতাংশ আত্মকর্মসংস্থানে আছেন এবং ১৩ শতাংশের বেশি খণ্ডকালীন কাজ করছেন।

যাঁরা বেতনে ও মজুরির বিনিময়ে কর্মে নিয়োজিত আছেন, তাঁদের বেশির ভাগই শিক্ষা-সংশ্লিষ্ট কর্মে নিয়োজিত আছেন। মূলত বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, কোচিং সেন্টারগুলোতে শিক্ষক পদে তাঁরা চাকরি করছেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা অনেকে তৈরি পোশাক খাতের নিচু পদেও যাচ্ছেন। কৃষি খাতেও যুক্ত আছেন অনেকে।

দেশের উচ্চশিক্ষায় যত শিক্ষার্থী আছেন, তাঁদের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বড় অংশ কেন এখনো চাকরির বাজারে প্রবেশ করতে পারছে না, সেটাও খোঁজা হয়েছিল গবেষণায়।

বদরুন নেসা আহমেদ বলেন, শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে যেটি জানা গেছে তার মধ্যে একটি হলো, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাক্রমে সমসাময়িক জ্ঞান ও দক্ষতার অভাব রয়েছে। যার কারণে পাস করেও অনেকেই চাকরি পাচ্ছেন না। ইংরেজি ভাষার ক্ষেত্রেও ঘাটতি আছে। বাংলাদেশের অন্যান্য সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় যেসব সুবিধা পায়, তা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে ঘাটতি আছে। সেসব সুবিধা দেওয়া গেলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বেকারত্বের হার কমে আসবে।

‘বাংলাদেশে শিক্ষিত বেকার’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে বদরুন নেসা আহমেদ আরও বলেন, সার্বিক বেকারত্বের হার কমিয়ে আনা গেছে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে বেকারত্বের হার এখনো বেশ উচ্চ হারে রয়ে গেছে। যাঁরা বেকার রয়ে গেছেন, তাঁদের শিক্ষাগত যোগ্যতা যদি দেখা হয় তাহলে দেখা যাবে, ১২ শতাংশ শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষা পেয়েছেন। কিন্তু তাঁরা বেকার রয়ে গেছেন। তার মানে, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা অর্জন করেও তাঁরা চাকরির বাজারে নিজেদের সক্ষম করে গড়ে তুলতে পারেননি। যুবকদের মধ্যে বেকারত্বের হার ৮ শতাংশ, যা জাতীয় বেকারত্ব হারের প্রায় দ্বিগুণ।

শিক্ষাক্ষেত্রে বিভিন্ন উন্নয়নের তথ্যও তুলে ধরেন বদরুন নেসা আহমেদ। তিনি বলেন, গত দুই দশকে (২০০৬-২৩) শিক্ষার কলেবর বেড়েছে এবং ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। সাক্ষরতার হার ৪৫ থেকে বেড়ে ৭৬ শতাংশ হয়েছে। বেকারত্বের হারও কমেছে। ঝরে পড়ার হার ৪৯ থেকে কমে ১৩ শতাংশে নেমে এসেছে। কারিগরি প্রশিক্ষণকেন্দ্রের সংখ্যাও ছিল ৯। সেখান থেকে সরকার সারা দেশে ১৬৬টি কারিগরি প্রশিক্ষণকেন্দ্র করেছে।

বিআইডিএসের উদ্যোগে আজ প্রায় সারা দিনই বিভিন্ন আর্থসামাজিক বিষয় নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ ও আলোচনা হয়েছে। বিআইডিএসের মহাপরিচালক অর্থনীতিবিদ বিনায়ক সেনের সঞ্চালনায় বিকেলের অধিবেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা মসিউর রহমান, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী। এ ছাড়া আলোচনায় অংশ নেন আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির সদস্য সাব্বির আহমেদ, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক মনজুর আহমদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক এম এম আকাশ প্রমুখ।

নিবন্ধিত শিক্ষক নিয়োগে এনটিআরসির নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha নিবন্ধিত শিক্ষক নিয়োগে এনটিআরসির নতুন নির্দেশনা জাল সনদে চাকরি করছে কয়েক হাজার হেলথ টেকনোলজিস্ট - dainik shiksha জাল সনদে চাকরি করছে কয়েক হাজার হেলথ টেকনোলজিস্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের - dainik shiksha ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের আইনি লড়াইয়ে যাচ্ছেন শিক্ষক নেতা কাওছার শেখ - dainik shiksha আইনি লড়াইয়ে যাচ্ছেন শিক্ষক নেতা কাওছার শেখ দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.00565505027771