রাজধানীর উত্তরার ঢাকা উইমেন কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যক্ষ ড. মো. আবুল কালাম আজাদকে ‘অস্ত্রের মুখে’ পদত্যাগ করতে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে। কলেজের তিনজন শিক্ষক বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে এসে ‘অস্ত্রের মুখে’ তাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন অধ্যক্ষ। গত ২৫ এপ্রিলের ঘটনায় রাজধানীর তুরাগ থানা ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন অধ্যক্ষ।
অভিযুক্ত তিন শিক্ষক হলেন, কলেজের সহকারী অধ্যাপক আবদুল বাতেন খান, সহকারী অধ্যাপক জাকির হোসেন খান এবং সহকারী অধ্যাপক হাফিজুর রহমান। অভিযোগে অধ্যক্ষ দাবি করেছেন, ‘এ তিনজন শিক্ষক বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে এসে অস্ত্রের মুখে তাদের সরবরাহ করা ছুটির দরখাস্ত, পদত্যাগ পত্র, সাদা স্ট্যাম্প ও সাদা কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে নিয়েছে।
আরও পড়ুন : দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব ও ফেসবুক পেইজটি ফলো করুন
যদিও অভিযুক্ত শিক্ষকদের দাবি অধ্যক্ষের এ অভিযোগ ভিত্তিহীন।
এরআগে অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ এ তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে তার অফিস রুমে তালা লাগিয়ে দেয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন।
তুরাগ থানায় দেয়া লিখিত অভিযোগে অধ্যক্ষ জানিয়েছেন, ‘গত ২৫ এপ্রিল বেলা সোয়া ১২টায় শিক্ষক বাতেন আমাকে ফোন করে কলেজে আসার জন্যে অনুরোধ করেন। আমি জানতে পারি, তার সাথে কয়েকজন শিক্ষকও আছেন। কলেজের বৈশাখী ভাতা ও অনার্স প্রথম বর্ষের ফরম ফিলাপের ফি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে জমাদান সংক্রান্ত কাজ আছে মনে করে আমি ১ টার দিকে কলেজে উপস্থিত হই। তাদের জোহরের নামাজ পড়ি। বাতেন আমার অফিসের তালা পিয়ন দিয়ে খোলার ব্যবস্থা করেন এবং আমাকে আমার অফিসে বসার জন্য বলেন।
ইতিমধ্যে তার নেতৃত্বে কয়েকজন শিক্ষকসহ কিছু বহিরাগত সন্ত্রাসী অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত (পিস্তল, চাকু, দেশীয় রামদা, লোহার রড, চেইন ইত্যাদি) হয়ে অনধিকার অফিসে প্রবেশ করে এবং প্রথমে বাতেন, হাফিজুর রহমান ও জাকির হোসেন তাদের কম্পিউটার কম্পোজকৃত ছুটির দরখাস্তে এবং পদত্যাগ পত্রে প্রেসার দিয়ে স্বাক্ষর করাতে আমাকে বাধ্য করতে থাকে। সাথে সাথে তার নেতৃত্বে আগত বহিরাগত সন্ত্রাসীরা আমাকে আমার জীবন নাশের হুমকি দিয়ে স্বাক্ষর করার জন্যে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। আমি স্বাক্ষর করতে রাজী না হলে, আমার অফিসের দরজা বন্ধ করে বাতেন, হাফিজুর রহমান ও জাকির হোসেন খানের নেতৃত্বে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা পিস্তল, চাকুসহ আরো অন্যান্য দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে আমার জীবন নাশের হুমকি দিয়ে তাদের সরবরাহকৃত ছুটির দরখাস্ত, পদত্যাগপত্র ও সাদা স্ট্যাম্প ও সাদা কাগজে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করে। তখন আমি অনিচ্ছা সত্ত্বেও প্রাণভয়ে স্বাক্ষর করি। পরবর্তীতে বিষয়টি কলেজ সংশ্লিষ্টদের অবহিত করি। বর্তমানে আমি ও আমার পরিবার জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি।
দৈনিক শিক্ষা পরিবারের নতুন সদস্য ‘দৈনিক আমাদের বার্তা’
জানতে চাইলে অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমাকে অস্ত্রের মুখে পদত্যাগ পত্র স্বাক্ষর করতে বাধ্য করা হয়েছে। একইসাথে আমাকে দিয়ে ছুটির দরখাস্ত, সাদা কাগজ ও সাদা স্ট্যাম্পেও স্বাক্ষর করিয়ে নিয়েছে। প্রাণনাশের হুমকি দেয়ায় আমি স্বাক্ষর করেছি। আমি বিষয়টি তুরাগ থানা ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে লিখিত অভিযোগ করে জানিয়েছি।
যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্তরা। জানতে চাইলে কলেজের সহকারী অধ্যাপক আবদুল বাতেন খান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, অধ্যক্ষের করা অভিযোগ ভিত্তিহীন ও ভুয়া। তিনি মিথ্যে অভিযোগ করছেন।
নিজেকে কলেজের নতুন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দাবি করে তিনি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে আরও বলেন, গত ২৫ এপ্রিল অধ্যক্ষ আমাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দিয়ে চিঠি দেন। দায়িত্ব বুঝিয়ে দেবেন বলে শিক্ষকদের বৈশাখী ভাতার কাগজ ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষ অর্নাসের ছাত্রীদের পরীক্ষার ফি সোনালী ব্যাংকে জমা দেয়ার চেক নিয়ে যান জমা দেয়ার জন্য। কিন্তু তিনি এখনও চেক জমা না দিয়ে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে শিক্ষকদের মাঝে বিবেদ সৃষ্টির চেষ্টা করছেন। কলেজের সব শিক্ষক অধ্যক্ষের বিষয়ে জানেন।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।