অক্সফোর্ড, কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বিশ্বের স্বনামধন্য বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় যুক্তরাজ্যে অবস্থিত। বিশ্ব জনসংখ্যার প্রায় ১ শতাংশের অবস্থান যুক্তরাজ্যে হলেও বিজ্ঞানভিত্তিক প্রকাশনার মোট ৮ শতাংশ বের হয় এখান থেকে। পরিশীলিত মডিউলভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থা যুক্তরাজ্যকে বিশ্বজুড়েই শিক্ষার্থীদের কাছে প্রধান গন্তব্যস্থলে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
নটিংহাম ট্রেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই তওসিফ রহমান মনে করেন, যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গবেষণাভিত্তিক প্রকল্পের ওপর বেশি জোর দেয়। যা শিক্ষার্থীদের সব সময়ে ধারাবাহিকভাবে গবেষণা পদ্ধতি অনুশীলন করা ও সাধারণ জ্ঞান বিষয়ে অবহিত থাকতে উদ্বুদ্ধ করে।
লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করা অ্যাকুয়াটিক ইকোলজিস্ট ড. হাসিব মো. ইরফানুল্লাহ বলেন, শিক্ষাক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যের সুনামই আমাকে সেখানে উচ্চশিক্ষা গ্রহণে আকৃষ্ট করেছে। বিশ্বজুড়েই যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদের বেশ গুরুত্ব দেওয়া হয়।
একজন মানুষের প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠার জন্য শিক্ষাই একমাত্র বিষয় নয়। কীভাবে একজন মানুষ তার চারপাশকে দেখে, উপলব্ধি করে, সে অনুযায়ী নিজেকে অভিযোজিত করে এবং কীভাবে সে সবার সঙ্গে নিজেকে যুক্ত রাখে সেটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। যুক্তরাজ্যের প্রত্যেক শিক্ষার্থীই বিভিন্ন দেশ ও সংস্কৃতির মানুষের সঙ্গে মেশার সুযোগ পায়, যা তার জানা ও গ্রহণের ক্ষমতাকে বাড়িয়ে দেয়। তার যোগাযোগের দক্ষতাকে বাড়িয়ে তোলে। যার ফলে সে একজন প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠার সুযোগ পায়।
ওয়ারউইক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মার্কেটিং ও স্ট্র্যাটেজিক বিভাগ থেকে এমএসসি শেষ করা সালমান কবির বলেন, আমার ক্লাসে ১০২ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ২৯টি আলাদা দেশের শিক্ষার্থী ছিল, যা আমাকে বিভিন্ন সংস্কৃতি ও মানুষ সম্পর্কে জানার সুযোগ করে দিয়েছে এবং আমার বিকশিত হওয়ার পথকে উন্মুক্ত করে দিয়েছে। এ বৈচিত্র্যই যুক্তরাজ্যকে বিশ্বের যে কোনো স্থান থেকে আসা মানুষের সহাবস্থানের মিলন মেলা করে তুলেছে।
ড. হাসিব জোর দিয়ে বলেন, নিজের উদ্দেশ্যে স্থির থাকা খুবই জরুরি। যুক্তরাজ্যে পড়তে যাওয়া মানে আমি স্বাভাবিকভাবেই সে দেশে বাংলাদেশের একজন প্রতিনিধি। কোনোভাবেই বিভ্রান্ত না হয়ে জ্ঞানের সম্পদ থেকে নিজেকে সমৃদ্ধ করার যে সুযোগ দেওয়া হয়, সে সুযোগ নেওয়ার দিকেই শিক্ষার্থীদের নজর দিতে হবে।
উল্লিখিত প্রত্যেকেই নিজ নিজ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করার ব্যাপারে উৎসাহী তওসিফ বর্তমানে হিউম্যাক ল্যাবে প্রকল্প ব্যবস্থাপক হিসেবে একটি প্রকল্প পরিচালনার দায়িত্বে আছেন। যুক্তরাজ্য থেকে স্নাতক শেষ করে আসার পর সিনিয়র করপোরেট মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ হিসেবে কাজ করেছেন তোশিবা বাংলাদেশে।
সালমান বর্তমানে সোনারগাঁও হোটেলে বিপণন ও জনসংযোগ বিভাগে সহকারী পরিচালক হিসেবে কর্মরত। ড. হাসিব প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর হিসেবে কর্মরত আছেন ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার (আইইউসিএন) বাংলাদেশে। তারা তাদের বর্তমান সফলতার জন্য যুক্তরাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর কৃতজ্ঞ।
অনেক সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও উচ্চশিক্ষা বিষয়ক পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর আধিক্য যুক্তরাজ্যে উচ্চশিক্ষা গ্রহণে উৎসাহী শিক্ষার্থীদের সঠিক বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচনের প্রক্রিয়াকে জটিল করে ফেলে। যুক্তরাজ্যে শিক্ষার ওপরে নিরপেক্ষ, প্রাসঙ্গিক ও বিস্তারিত তথ্য পেতে শিক্ষার্থীরা যুক্তরাজ্যে উচ্চশিক্ষা গ্রহণে ব্রিটিশ কাউন্সিলের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটিি .িবফঁপধঃরড়হঁশ.ড়ৎম ভিজিট করতে পারেন।
যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক সংস্থা ব্রিটিশ কাউন্সিল দেশটিতে উচ্চশিক্ষার সুযোগ ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক সৃষ্টিতে কাজ করে। এ ছাড়াও সংস্থাটি উচ্চশিক্ষা গ্রহণে উৎসাহী শিক্ষার্থীদের সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করতে সারাবছরই বিভিন্ন শহরে যুক্তরাজ্যে উচ্চশিক্ষা বিষয়ক সেমিনার ও মেলাসহ নানা প্রদর্শনীর আয়োজন করে থাকে।
এরই ধারাবাহিকতার অংশ হিসেবে জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে ব্রিটিশ কাউন্সিল বিভাগীয় শহর ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটে আয়োজন করতে যাচ্ছে ‘এডুকেশন ইউকে এক্সিবিশন-২০১৬’ শীর্ষক যুক্তরাজ্যে উচ্চশিক্ষা বিষয়ক মেলা। ঢাকায় মেলাটি অনুষ্ঠিত হবে ২৮ ও ২৯ জানুয়ারি। এ জন্য নিবন্ধন করতে হবে http://bit.ly/exhibitiondhk2016 ওয়েবসাইটে। এ মাসের ৩১ তারিখে মেলাটি চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য নিবন্ধন করতে হবে http://bit.ly/exhibitionctg2016 ওয়েবসাইটে। আর সিলেটে মেলাটি অনুষ্ঠিত হবে ৩ ফেব্রুয়ারি। নিবন্ধন করতে হবে http://bit.ly/exhibitionsyl2016 ওয়েবসাইটে।