বোর্ড পরীক্ষকদের কৌশলী কারবার - দৈনিকশিক্ষা

বোর্ড পরীক্ষকদের কৌশলী কারবার

সাবিহা সুমি, দৈনিক শিক্ষাডটকম |

শিক্ষাবোর্ডগুলোকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ফের শুরু হয়েছে ‘বোর্ড পরীক্ষক’ বাণিজ্য। পাবলিক পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়নের বিষয়টি গোপনীয়। তবু ফেসবুকসহ নানা মাধ্যমে বিজ্ঞাপন ছড়িয়ে দিচ্ছেন চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত কিছু শিক্ষক। অভিযোগ উঠেছে এসব প্রচারণা চালিয়ে তারা আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করে থাকেন।

সম্প্রতি দৈনিক আমাদের বার্তার অনুসন্ধানে দেখা যায়, বিভিন্ন ফেসবুক পেজ থেকে কৌশলে ছড়ানো হচ্ছে উত্তরপত্র মূল্যায়নের দায়িত্ব পাওয়ার খবর। যার ফলে অপেক্ষাকৃত দুর্বল শিক্ষার্থীরা ওই শিক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। পরে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিতে পারেন দায়িত্ব পাওয়া ওই শিক্ষকেরা।

বোর্ডের খাতা মূল্যায়ন করেন তাই এই শিক্ষকেরা ‘পরীক্ষক’। এই পরীক্ষকেরা সামাজিক মাধ্যমে এভাবে বিজ্ঞাপন দিলে তাদের দুটো লাভ। প্রথমত প্রাইভেট টিউশনি জমজমাট হওয়া এবং পরীক্ষার হলে খারাপ পরীক্ষা দেয়া শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা আদায়।

যদিও বোর্ডগুলোর দাবি করে পরীক্ষা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ওএমআরশীটের একাংশ খাতা থেকে আলাদা হয়ে যায়, যে অংশে পরীক্ষার্থীকে চিহ্নিত করা যায়। তাই কোন্ খাতা কোন্ পরীক্ষক দেখছেন তা বোঝার উপায় নেই।

তবে, দৈনিক আমাদের বার্তার অনুসন্ধানে আরো দেখা গেছে, নিম্নমেধার পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা যেকোনো মূল্যে পাসের ধান্দায় এইসব বিজ্ঞাপনদাতা পরীক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আর গোপনে টাকা লেনদেন হয়।

বাংলাদেশ সরকারের মনোগ্রামসহ ইংরেজি ও আরবিতে লেখা বিএমটিটিআই নামক ফেসবুক পেজ থেকে প্রশ্ন করা হয়। এবার যারা দাখিল পরীক্ষায় পরীক্ষক হিসেবে আবেদন করেছেন তাদের কারো কি বোর্ড থেকে কোনো মেসেজ এসেছে? 

এমন কৌশলী প্রশ্নের পরপরই চক্রের অপর সদস্যরা কমেন্টের ঝুলি খুলে দিয়েছেন।   

মো. মহসীন আলী নামের একজন বোর্ড থেকে মোবাইল ফোনে আসা মেসেজ হুবহু আপলোড করে দিয়েছেন। নাম ও কোডসহ সবই দেখা যায় সেই মেসেজে। খুরশীদ আলম ফরাজী লিখেছেন, আমি ফিকহর জন্য আবেদন করেছি, এখনও খাতা পাইনি।  

সিরাজুল হক লিখেছেন, এই তালিকা ফেসবুকে আসার কী প্রয়োজন? মাসুদুর রহমান নামের একজন লিখেছেন, গোপনীয় জিনিস প্রচার না করাই উত্তম। জবাবে অন্যতম বিজ্ঞাপনদাতা হাবিবুল খায়ের লিখেছেন, গোপনীয় নয়, তবে আর দেবো না। 

একইভাবে কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের খাতা মূল্যায়নকারী পরীক্ষকরাও ফেসবুকে বাণিজ্য শুরু করেছেন। পরীক্ষার খাতা, ফল প্রকাশ ও জিপিএ পরিবর্তন দুর্নীতিতে সব বোর্ডের চাইতে এগিয়ে কুমিল্লা বোর্ড। তবে, কোনো কিছুই দেখার কেউ নেই। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের মতামত জানার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।  

পরীক্ষকদের জন্য শিক্ষাবোর্ডগুলোর শর্ত মোটামুটি একই

১ নং শর্তে বলা হয়েছে- তারিখে পরীক্ষকগণের প্রশিক্ষণে অবশ্যই উপস্থিত থাকবেন। প্রশিক্ষণে উপস্থিত না থাকলে উত্তরপত্র দেয়া হবে না। 
৬ নং শর্তাংশ এমন- উল্লেখ্য, চাকরি এবং পরীক্ষা সংক্রান্ত কোনো প্রকার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়ে পরীক্ষক হিসেবে উত্তরপত্র গ্রহণ করলে আপনাকে দোষী বলে গণ্য করা হবে এবং আপনার বিরুদ্ধে পাবলিক পরীক্ষা  (অপরাধ) আইন ১৯৮০ (সংশোধিত) ১৯৯২ অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 
১০ নং শর্তটা এমন - বোর্ড অফিস হতে উত্তরপত্র গ্রহণ করার পর মূল্যায়ন শেষে প্রধান পরীক্ষকের নিকট পাঠানো পর্যন্ত উত্তরপত্রগুলো অতীব যত্ন সহকারে নিজ হেফাজতে রাখা এবং পূর্ণ গোপনীয়তা রক্ষা করা আপনার পবিত্র দায়িত্ব ও কর্তব্য।

এ ব্যাপারে মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মোহাম্মদ মাহবুব হাসান জানান, বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই। তবে এ ধরনের কোনো ঘটনা যদি কেউ ঘটায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ এবং গোপনীয় বিষয়। তাদেরকে বারবার গোপন রাখতে বলার পরেও যদি কেউ এটা প্রকাশ করেন তবে সেটা দুঃখজনক। 
তিনি বলেন, এটা নিয়ে একটা মিটিং করে আমাদের ওয়েবসাইটে সতর্কীকরণ নোটিশ দেয়ার চেষ্টা করবো।     

শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।

ষষ্ঠ-নবম শ্রেণিতে ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের সূচি - dainik shiksha ষষ্ঠ-নবম শ্রেণিতে ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের সূচি শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে শিক্ষা কর্মকর্তা রেবেকার অনিয়মই যেনো নিয়ম! - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তা রেবেকার অনিয়মই যেনো নিয়ম! সনদ জালিয়াতিতে শনাক্ত আরো কয়েকজন নজরদারিতে - dainik shiksha সনদ জালিয়াতিতে শনাক্ত আরো কয়েকজন নজরদারিতে শিক্ষা প্রশাসনে বড় রদবদল - dainik shiksha শিক্ষা প্রশাসনে বড় রদবদল আকাশে মেঘ দেখলেই স্কুল ছুটি - dainik shiksha আকাশে মেঘ দেখলেই স্কুল ছুটি প্রশ্নফাঁসে শিক্ষক চাই না - dainik shiksha প্রশ্নফাঁসে শিক্ষক চাই না please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0029640197753906