ভুয়া পিএইচডিধারী প্রকৌশলী - দৈনিকশিক্ষা

ভুয়া পিএইচডিধারী প্রকৌশলী

দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক |

পিএইচডি না করেও ডক্টরেট ডিগ্রি ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) এক প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ‘ডক্টরেট’ ডিগ্রি ব্যবহার করছেন ওই কর্মকর্তা। ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে এ বিষয়ে অভিযোগ দেওয়া হলেও তখন ধামাচাপা পড়ে। সম্প্রতি ফের অভিযোগটি বিএমডিএকে যাচাইয়ের নির্দেশ দিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়। সোমবার (১৮ মার্চ) আজকের পত্রিকা পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন রিমন রহমান।

প্রতিবেদনে আর জানা যায়,  অভিযুক্ত কর্মকর্তা হলেন বিএমডিএর সদর দপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (চলতি দায়িত্ব) মো. আবুল কাসেম। এর আগে তিনি তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ছিলেন। নামের আগে তিনি ‘ড.’ শব্দটি ব্যবহার করে থাকেন। গতকাল রোববার রাত পর্যন্ত বিএমডিএর ওয়েবসাইটে কর্মকর্তাদের তালিকায় তাঁর নামের আগে ‘ড.’ দেখা গেছে।

বিভিন্ন দাপ্তরিক চিঠিপত্রেও একই নাম লেখেন তিনি।

বিএমডিএ সূত্রে জানা গেছে, ভুয়া পিএইচডি ডিগ্রি ব্যবহারের অভিযোগ তুলে আবুল কাসেমের বিরুদ্ধে ২০২০ সালে নগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকার বাসিন্দা ইসমাইল হোসেন কৃষি মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ২৫ জুন কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপকরণ-১ অধিশাখার তৎকালীন উপসচিব মো. আসাদুজ্জামান এক  

চিঠিতে বিএমডিএর নির্বাহী পরিচালককে বিষয়টি যাচাইয়ের নির্দেশ দেন। আবুল কাসেম পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করে থাকলে তিনি মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়েছেন কি না, অনুমোদন নিয়ে থাকলে তার সনদ ও গবেষণাপত্র (থিসিস) দাখিল করতে বলা হয়। এ ছাড়া নামের আগে ‘ড.’ শব্দ ব্যবহারের ক্ষেত্রে তিনি মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়েছেন কি না, সেটিও জানাতে বলা হয়। এই চিঠি আসার পরে বিষয়টি ধামাচাপা দেন তৎকালীন নির্বাহী পরিচালক। এর পরের বছরই কাসেমকে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী থেকে পরিকল্পনা শাখার অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে (চলতি দায়িত্ব) পদায়ন করা হয়। চার বছর পর অভিযোগের ব্যাপারে আবারও ১৫-২০ দিন আগে কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে ওই একই চিঠি পাঠানো হয়েছে বর্তমান নির্বাহী পরিচালকের কাছে। তবে তিনি এখনো যাচাই কার্যক্রম শুরু করেননি।

এ বিষয়ে নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রশীদ বলেন, ‘চার বছর আগে আমি নির্বাহী পরিচালক ছিলাম না। তখন মন্ত্রণালয় থেকে আসা চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল, তা জানি না। মন্ত্রণালয় থেকে এ-সংক্রান্ত একটি চিঠি পেয়েছি। আবুল কাসেম কোথায় পিএইচডি ডিগ্রি নিয়েছেন, পিএইচডির জন্য পড়াশোনা করলে এর জন্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়েছিলেন কি না, মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে নামের আগে ‘ড.’ ব্যবহার করছেন কি না, তা চিঠি দিয়েই জানতে চাইব। চিঠি রেডি করছি। তিনি লিখিত জবাব দেবেন, আমিও লিখিতভাবে মন্ত্রণালয়ে জানাব।’

বিএমডিএ সূত্রে জানা গেছে, কাসেম প্রকৌশলী হিসেবে বিএমডিএতে যোগদান করেন ১৯৯৪ খ্রিষ্টাব্দে । এরপর ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে নামের আগে ‘ড.’ লেখা শুরু করেন। আদৌ তিনি পিএইচডি করেছেন কি না, তা নিয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা। কারণ, পিএইচডি পড়াশোনার জন্য তিনি কখনো ছুটি নেননি। পিএইচডি ডিগ্রি ব্যবহার করে তিনি নিজেকে জ্যেষ্ঠ ও যোগ্য কর্মকর্তা হিসেবে জাহির করেন। বাগিয়ে নেন পদোন্নতি। বিএমডিএর অনুমোদিত জনবলকাঠামোতে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে কোনো পদই নেই। অথচ তিনি চতুর্থ গ্রেডে অবৈধ এ পদে আসীন ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ সেপ্টেম্বর।

অভিযোগের বিষয়ে কাসেম বলেন, ‘পিএইচডি ডিগ্রি ব্যবহারের ফলে আমি কোনো সুবিধা পাই না। সুতরাং এটা আমাকে করতেই হবে, তারও কোনো মানে নেই। আমি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক করেছি। তারপর সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে মাস্টার্স করেছি রুয়েট থেকে। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ করেছি। তারপর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিসট্যান্ট লার্নিং নিয়ে পিএইচডি করেছি। ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দে ভর্তি হয়ে ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে শেষ করেছি। পিএইচডি ডিগ্রি নিয়েই কথা কেন? আমি তো স্নাতকের ডিগ্রি দিয়েই উচ্চপদে চাকরি করতে পারব।’

কাসেমের দাবি, তাঁর পিএইচডি ডিগ্রি ভুয়া নয়। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়েই তিনি পিএইচডি করেছেন। তবে এর জন্য কোনো ছুটি নেননি।

ষষ্ঠ-নবম শ্রেণিতে ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের সূচি - dainik shiksha ষষ্ঠ-নবম শ্রেণিতে ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের সূচি শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে শিক্ষা কর্মকর্তা রেবেকার অনিয়মই যেনো নিয়ম! - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তা রেবেকার অনিয়মই যেনো নিয়ম! সনদ জালিয়াতিতে শনাক্ত আরো কয়েকজন নজরদারিতে - dainik shiksha সনদ জালিয়াতিতে শনাক্ত আরো কয়েকজন নজরদারিতে শিক্ষা প্রশাসনে বড় রদবদল - dainik shiksha শিক্ষা প্রশাসনে বড় রদবদল আকাশে মেঘ দেখলেই স্কুল ছুটি - dainik shiksha আকাশে মেঘ দেখলেই স্কুল ছুটি প্রশ্নফাঁসে শিক্ষক চাই না - dainik shiksha প্রশ্নফাঁসে শিক্ষক চাই না please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0030241012573242