পরীক্ষা হলে সন্তান জন্ম দেয়া হাজেরা প্রথম বিভাগে পাস | বিশ্ববিদ্যালয় নিউজ

পরীক্ষা হলে সন্তান জন্ম দেয়া হাজেরা প্রথম বিভাগে পাস

হাজেরা খাতুনের স্বামী মো. আবদুর রশিদ মিয়া বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সাহস আর মনোবল না হারিয়ে ও হাজেরার পরামর্শে হাতীবান্ধা সরকারি আলিমুদ্দিন কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণ কমিটির সদস্যদের জানিয়ে সহায়তা চান।

#জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় #পরীক্ষা

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় সিজিপিএ ৩ দশমিক ১৩ (প্রথম বিভাগ) পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা সরকারি আলিমুদ্দিন কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী হাজেরা খাতুন (২৭)।

গত ১৪ মে সন্তান জন্ম দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলেন তিনি।

আরো পড়ুন: পরীক্ষা দিতে এসে সন্তান প্রসব, পরে হাজেরা খাতুন দিলেন পরীক্ষাও

হাজেরা খাতুন কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার চরবজরা গ্রামের প্রাণিসম্পদের পল্লিচিকিৎসক আবদুর রশিদের সহধর্মিণী। এই দম্পতির চার বছর বয়সী একটি কন্যাসন্তান রয়েছে।

এরপর হাজেরা খাতুন অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় ১৪ মে সকালে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধার সরকারি আলিমুদ্দিন কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতকোত্তরের মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিতে স্বামীর বাড়ি থেকে ভাড়া মাইক্রোবাসে করে রওনা দেন।

সঙ্গে ছিলেন স্বামী আবদুর রশিদ মিয়া, চার বছর বয়সী শিশুকন্যা রোকাইয়া জান্নাত ও আরও দুজন নারী স্বজন।

পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছানোর আগেই হাতীবান্ধায় প্রবেশমুখে মাইক্রোবাসে হাজেরা খাতুনের প্রসববেদনা ওঠে। হাজেরা খাতুনের স্বামী মো. আবদুর রশিদ মিয়া বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সাহস আর মনোবল না হারিয়ে ও হাজেরার পরামর্শে হাতীবান্ধা সরকারি আলিমুদ্দিন কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণ কমিটির সদস্যদের জানিয়ে সহায়তা চান।

কলেজ কর্তৃপক্ষের সহায়তা ও নির্দেশনা অনুযায়ী ১৪ মে বুধবার সকাল ৮টার দিকে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালের প্রসূতি ওয়ার্ডে হাজেরা খাতুনকে ভর্তি করানো হয়। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে পুত্রসন্তানের জন্ম দেন স্ত্রী হাজেরা।

হাতীবান্ধা সরকারি আলিমুদ্দিন কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান মোজাম্মেল হক বলেন, পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ ও সংসার জীবনের ব্যস্ততার মধ্যেও এমন ফলাফল অনুকরণীয়।

হাজেরা খাতুন বলেন, ‘আমার বাবার বাড়ি যশোরে। আমার বাবা হাসান আলী বিশ্বাস যখন মারা যান, তখন আমার বয়স পাঁচ বছর। আমার মা হালিমা বেগম ও মামারা আমাকে মানুষ করেছেন। মা বলতেন, “ছেলে হোক আর মেয়ে হোক, সবার পড়াশোনা করতে হবে। নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে।”

বিয়ে হওয়ার পর আমার স্বামী আবদুর রশিদ মিয়াও আমাকে পড়াশোনায় উৎসাহ জুগিয়েছেন। এবার মাস্টার্স উত্তীর্ণ হলাম। এখন নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাই। পরিবারকে সহায়তা করতে চাই, সন্তানদের লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষ করতে চাই। আমি শিক্ষকতা করতে চাই। শিক্ষকতার ভালো একটা চাকরি চাই। তাহলে আমার স্বপ্ন পূরণ হবে ইনশা আল্লাহ।’

আবদুর রশিদ মিয়া বলেন, ১৪ মে জন্ম নেওয়া পুত্রসন্তান সুস্থ আছে। তার নাম রাখা হয়েছে মো. আবদুর রহমান সাদিক।

শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিয়োগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।

#জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় #পরীক্ষা