শিক্ষক নিবন্ধন: বয়সের কারণে ফেল মেনে নেওয়া যায় না | শিক্ষক নিবন্ধন নিউজ

শিক্ষক নিবন্ধন: বয়সের কারণে ফেল মেনে নেওয়া যায় না

বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) অধীনে অনুষ্ঠিত ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়েছে ৪ জুন।

#পরীক্ষা #শিক্ষক নিবন্ধন #শিক্ষার্থী #শিক্ষক

বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) অধীনে অনুষ্ঠিত ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়েছে ৪ জুন। মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের মধ্যে ফেল করেছেন ২০ হাজার ৬৮৮ জন প্রার্থী। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেক চাকরিপ্রার্থী।

তাদেরই একজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইমেইলে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, শুধুমাত্র বয়সের কারণে ফেল মেনে নেওয়া যায় না।

আরো পড়ুন: শিক্ষক নিবন্ধন: ৩ মিনিটে যোগ্যতা পরিমাপ করা নিয়ে প্রশ্ন

তিনি বলেন, অষ্টাদশ শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভায় আমি ইংরেজি লেকচারার পদে অংশগ্রহণ করি। আমার লিখিত পরীক্ষা ভালো হয়েছিল। ভাইভায় ইংরেজি সাহিত্য হতে আমাকে ৭টি প্রশ্ন করা হয়, আমি ৫টি প্রশ্নের সঠিক উত্তর করি। পরীক্ষক আমার ওপর যথেষ্ট সন্তুষ্ট ছিলেন। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে আমার ফেইল আসে। আমি আমার দিক থেকে ফেলের কোন কারণ দেখি না। ভাইভায় ২০ নম্বরের মধ্যে সনদের জন্য নির্ধারিত নম্বর ১২ এর মধ্যে আমি ১১ পাই। পোশাক পরিচ্ছদ, উপস্থিতি, উপস্থাপন ও প্রশ্নের উত্তরের জন্য ৩.২ নম্বর পেলেও কোনভাবেই ফেল আসার কথা না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই পরীক্ষার্থী বলেন, আমার আরও ৬টি নিবন্ধন সনদ আছে। ৪টি স্কুল পর্যায়ের এবং ২টি কলেজ পর্যায়ের। এর মধ্যে কলেজ পর্যায়ের একটি সনদ জেলা পর্যায়ে ২য় ও জাতীয় মেধাতালিকায় ১৩৪ (প্রায় ৩০০০০ হাজার নিবন্ধনধারীর মধ্যে), স্কুল পর্যায়ে ৪৩৪ (প্রায় ৩০০০০ নিবন্ধনধারী মধ্যে) পজিশনসহ উচ্চ নাম্বারধারী সনদ রয়েছে। এর আগের প্রতিটি নিবন্ধনে আমি অংশগ্রহণ করি ও পাস করি। এনটিআরসিএ কর্তৃক এ পর্যন্ত আমি ৭টি প্রতিষ্ঠানে সুপারিশ পাই (৪টি স্কুল পর্যায়ে ও ৩টি কলেজ পর্যায়ে)। গত ১৩ বছর আমি শিক্ষকতার সাথে জড়িত। আমি কিভাবে হঠাৎ এতটা অযোগ্য হয়ে গেলাম?

এর আগের সবগুলো নিবন্ধন ভাইভা কিভাবে অতিক্রম করলাম? তখন তারা কেন আমাকে অযোগ্য করলো না? আমার জীবনের ১ম ভাইভায় ফেল আসলো শুধুমাত্র তাদের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে, যা আমি মেনে নিতে পারছি না। আসলে আমার নতুন চাকরির এত বেশি প্রয়োজন ছিল না। শুধুমাত্র নিজের ধারাবাহিকতা ধরে রাখা ও প্র্যাকটিসের অংশ হিসেবে আমি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলাম। একটি বাড়তি সনদ হলে হয়ত কিছুটা ভালো লাগতো।

তিনি আরও বলেন, এখানে মূল সমস্যাটা মনে হয় আমার বয়স নিয়ে। আমার বয়স ৩৫ অতিক্রম করেছে অল্প কিছুদিন আগে। ভাইভার পূর্বে সনদ দেখার সময় আমার তথ্যের অংশ হিসেবে আমার বয়স নিয়ে কথা বলেছিল তারা। আমাকে বলেছিল আপনার তো ৩৫+। আপনি পাস করলেও আবেদন করতে পারবেন না। আমি বলেছিলাম যখন আবেদন করেছি আমার বয়স ৩৩ ছিল। আমার বিশ্বাস শুধুমাত্র ৩৫+ হওয়ার কারণেই আমাকে ফেল করানো হয়েছে। আমি এর সুষ্ঠু তদন্ত চাই। শুধুমাত্র বয়সের কারণে ফেল মেনে নেওয়া যায় না। আমাকে ওনাদের চাকরি দেওয়া লাগবে না, শুধু সনদটা দিক। এরকম হাজার হাজার ৩৫+ কে তারা ইচ্ছে করে ফেল করিয়েছে। স্বাধীন দেশে এ অবিচার মেনে নেওয়া যায় না।

উল্লেখ্য, বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) ব্যবস্থাপনায় গত বছরের ১২ ও ১৩ জুলাই অষ্টাদশ শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। লিখিত পরীক্ষায় ৮৩ হাজার ৮৬৫ জন পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণ হন। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মধ্যে ৮১ হাজর ২০৯ জন প্রার্থী মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেন।

মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের মধ্যে চূড়ান্তভাবে ৬০ হাজার ৫২১ জন প্রার্থী উত্তীর্ণ হয়েছেন।

#পরীক্ষা #শিক্ষক নিবন্ধন #শিক্ষার্থী #শিক্ষক