জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন করেছে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কিশলয় বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজ। নানা আয়োজন ও যথাযথ মর্যাদায় দিবসটি পালন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, বিশেষ মোনাজাত, আলোচনা সভা, চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতা, দেয়ালিকা ও চিত্র প্রদর্শন, শোকাবহ কবিতা পাঠ ও সঙ্গীত পরিবেশন এবং বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
প্রথমেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মো. রহমত উল্লাহর নেতৃত্বে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রতিষ্ঠানের সহকারী প্রধান শিক্ষক রিতা মমতাজ, প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-কর্মচারী শিক্ষার্থী ও গভর্নিং বডির সদস্যরা।
পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হয় বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ বিশিষ্ট লেখক মো. রহমত উল্লাহ্ বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন অত্যন্ত শিক্ষা অনুরাগী দূরদর্শী মানুষ। কবি, শিল্পী, সাহিত্যিক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের প্রতি ছিল তাঁর গভীর অনুরাগ। তিনি মনে প্রাণে বিশ্বাস করতেন যে, ব্রিটিশ ও পাকিস্তানি শিক্ষা ব্যবস্থা দিয়ে কখনোই বাঙালি জাতি মননশীল, সৃষ্টিশীল, বিজ্ঞানমনস্ক, কর্মক্ষম মানুষে পরিণত হতে পারবে না এবং বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবেনা। তাই তিনি দেশ স্বাধীনের পরপরই কুদরত-ই-খোদা শিক্ষা কমিশন গঠনের মাধ্যমে একটি আধুনিক যুগোপযোগী শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তন করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। সেখানে বলা হয়েছিল, শিক্ষা হবে সার্বজনীন। যেখানে ধনী দরিদ্রের ব্যবধান থাকবে না, সমতল ও পাহাড়িদের বৈষম্য থাকবে না, নারী পুরুষের বৈষম্য থাকবে না, ধর্মীয় ভেদাভেদ থাকবে না।
আলোচনা শেষে কবি রফিক আজাদ এর কবিতা 'এই সিঁড়ি' আবৃত্তি করে ৩য় শ্রেণির শিক্ষার্থী মাহ্দিয়া বিনতে মামুন (পৃথ্বী)। 'যদি রাত পোহালে শোনা যেত বঙ্গবন্ধু মরে নাই....' সঙ্গীতটি পরিবেশন করে একাদশ শ্রেণির ব্যবসায় শিক্ষা শাখার শিক্ষার্থী তাহমিনা আক্তার সিমলা।
পরবর্তীতে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন অধ্যক্ষ, সহকারী প্রধান শিক্ষক ও গভর্নিং বডি সদস্যরা। 'রক্তাক্ত ১৫ই আগস্ট' শিরোনামে আয়োজিত চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার দেয়া হয়। বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার হিসেবে 'বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী', 'কারাগারের রোজনামচা', 'আমার দেখা নয়া চীন' এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ওপর রচিত বিভিন্ন বই দেয় প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ।
সবশেষে বঙ্গবন্ধু ও ১৫ আগস্টে শহীদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত ও শান্তি কামনা করে দোয়া এবং মোনাজাত করা হয়।